Many Japanese cities are selling metals taken from the ashes dgtl
cremated remains
মৃতের শরীরের দামি ধাতু বিক্রি করে আয় কয়েকশো কোটি! এশিয়ার ছোট্ট দেশের কার্যকলাপে উঠছে প্রশ্ন
মৃত মানুষের দাঁত থেকে পাওয়া সোনা, প্যালাডিয়াম এবং হাড়ে প্রতিস্থাপিত টাইটানিয়ামের মতো দামি ধাতু সংগ্রহ করা হয় মৃতদেহের ছাই থেকে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪ ১০:৫৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মূল্য কয়েকশো কোটি টাকা! জাপানের বেশ কিছু শহরের শ্মশানে মৃতদেহ থেকে পাওয়া বহুমূল্য ধাতু বিক্রি করে মিলছে এই বিপুল পরিমাণ টাকা। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দেহ পুড়িয়ে ফেলার পর ছাই থেকে পাওয়া মূল্যবান ধাতু থেকে গত এক বছরে সে দেশে আয় হয়েছে প্রায় ৩৭৭ কোটি টাকা।
০২১৬
‘নিক্কেই এশিয়া’ নামের একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃত মানুষের দাঁত থেকে পাওয়া সোনা, প্যালাডিয়াম এবং হাড়ে প্রতিস্থাপিত টাইটানিয়ামের মতো দামি ধাতু সংগ্রহ করা হয় অস্থিভস্ম থেকে। সেই ধাতু আলাদা করে নির্দিষ্ট জায়গায় বিক্রি করে যে পরিমাণ টাকা পাওয়া যায় তা নেহাত কম নয়।
০৩১৬
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সে দেশের ৮৮টি প্রধান শহরের মধ্যে ৪২টি শহরের দেহ সৎকারের স্থানগুলিতে এই ধাতু বিক্রির ঘটনা ঘটেছে। ২০১০ সালের পর থেকেই এই ধরনের কাজকর্ম শুরু হয় শ্মশানগুলিতে।
০৪১৬
জাপানে মৃতদেহ পোড়ানোর রেওয়াজ শুরু হয় মূলত বৌদ্ধ ধর্মের অনুকরণে। বর্তমানে জাপানে প্রায় সমস্ত মৃতদেহই দাহ করা হয়। ২০১২ সালের হিসাব বলছে জাপানেই মৃতদেহ পোড়ানোর হার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তথ্য অনুসারে ৯৯ শতাংশ মৃতদেহ শ্মশানে পোড়ানো হয়ে থাকে।
০৫১৬
জাপানি প্রথা অনুযায়ী, শরীর দাহ করার জন্য নিয়ে যাওয়া হলে পরিবারের সদস্যেরা অপেক্ষা করেন। দাহ সম্পন্ন হলে এবং ছাই ঠান্ডা হয়ে গেলে পরিবারের সদস্যেরা চপস্টিক ব্যবহার করে হাড়ের টুকরোগুলি আলাদা করেন। সেগুলি তুলে একটি বড় পাত্রে জমা করেন।
০৬১৬
এই কাজ শেষ হলে অস্থিভস্ম থেকে ধাতু সংগ্রহ করা হয়। সেগুলি বাছাই করে তা বিক্রি করে জনগণের হিতার্থে শ্মশানের তহবিলে দান করা হয় বলে দাবি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
০৭১৬
বিভিন্ন সময় নানা দুর্ঘটনায় শরীরের হাড় ভেঙে যায়। অনেক সময় হাড়ের অসুখজনিত সমস্যার কারণে তা প্রতিস্থাপন করার প্রয়োজন হয়৷ সেই হাড় জোড়া লাগাতে বা প্রতিস্থাপন করতে ইস্পাত বা টাইটানিয়াম ব্যবহার করা হয় যা মৃত্যুর পরেও আমাদের শরীরে থেকে যায়।
০৮১৬
টাইটানিয়াম প্রায়শই হাড় প্রতিস্থাপন করতে ব্যবহার করা হয় কারণ এটি খুব শক্তিশালী এবং টেকসই। মানবশরীরে এই ধাতুর বিষক্রিয়া নেই। আবার অনেকে সোনা, রুপো এমনকি প্যালাডিয়ামের মতো দামি ধাতু দিয়ে দাঁত বাঁধিয়ে রাখেন।
০৯১৬
জাপানের শ্মশান পরিষেবার প্রায় ৯৭ শতাংশই সরকার দ্বারা পরিচালিত। একমাত্র টোকিয়োই ব্যতিক্রম। সেখানে ন’টি শ্মশানের মধ্যে সাতটি বেসরকারি সংস্থা দ্বারা পরিচালিত।
১০১৬
তথ্য বলছে এই ভাবে ধাতু বিক্রি করে শুধুমাত্র ২০২৩ সালেই জাপানি মুদ্রায় ৬৯০ কোটি ইয়েন, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ৩৭৭ কোটি টাকার মতো আয় করেছে।
১১১৬
জাপানে মৃত্যুর হার বেড়েছে। তার কারণ প্রতি ১০ জনের মধ্যে এক জনের বয়স ৮০ বছরের বেশি। ৮০ পেরোনো মানুষের সংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
১২১৬
ধাতুর দাম বৃদ্ধির কারণে বিগত বছরগুলির তুলনায় ধাতু বিক্রি থেকে আয়ও বেড়েছে।
১৩১৬
মৃতদেহ থেকে পাওয়া ধাতু বিক্রি করে যে আয় হয় সেই তালিকায় জাপানের শহরগুলির মধ্যে কিয়োটোর স্থান সবার উপরে। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৭৫ কোটি টাকা।
১৪১৬
কিয়োটোর পরে রয়েছে ইয়োকোহামা এবং নাগোয়া। মৃতদেহ থেকে পাওয়া বহুমূল্য ধাতু বিক্রি করে এদের আয় যথাক্রমে ১৩৪ কোটি এবং ১৩০ কোটি টাকা।
১৫১৬
এই প্রবণতা বাড়তে থাকায় অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আইনি হস্তক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে বলে দাবি তুলেছেন শহরের নাগরিকদের একাংশ।
১৬১৬
জাপানে দাহ করার যে আইনি পরিকাঠামো রয়েছে তাতে বলা হয়েছে শুধুমাত্র বড় হাড়ের টুকরোগুলি দাবি করতে পারে মৃতের পরিবার। দেহের অবশিষ্ট ছাই, যাতে মূল্যবান ধাতু থাকতে পারে তার দাবিদার কে তা নিয়ে সুস্পষ্ট কোনও আইন বা নিয়ম নেই। তাই এই বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে।