Mango export of china led to cut Indian export dgtl
mango war
চিনা আমে ‘আমোদিত’ বিশ্ব! ভারতকে কোণঠাসা করতে অন্য যুদ্ধে নামল চিন
২০২৩ সালে চিন প্রায় ৫০০ কোটি টাকার তাজা ও শুকনো আম রফতানি করেছে বলে চিনা দূতাবাস সূত্রে খবর।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৪ ১৪:১০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
আম রফতানিতেও এ বার ভারতের বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে চিন। অর্থাৎ, হাতে না মেরে ভারতকে ‘আমে’ মারার চেষ্টা করছে চিন। এক সময় যে রাষ্ট্র চিনকে আমের স্বাদ চিনিয়েছিল তাদেরই অর্থনীতির কোমর ভাঙতে উঠেপড়ে নেমেছে বেজিং।
০২১৬
গত দুই বছর ধরে দশেরি, চৌসা, আলফোনসো এবং ল্যাংড়ার মতো ভারতীয় আম গোটা বিশ্বে রফতানি করে ভারতের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে চিন।
০৩১৬
সারা পৃথিবীতে ৪০-৪৫ শতাংশ আম রফতানি করে ভারতই। গুণমান ও স্বাদে সেরা আম রফতানি করে ভারত, যা কৃষিক্ষেত্রের অর্থনীতির শিরদাঁড়াকে মজবুত রাখে প্রতি বছর।
০৪১৬
২০২৩ সালে চিন প্রায় ৫০০ কোটি টাকার তাজা ও শুকনো আম রফতানি করেছে বলে চিনা দূতাবাস সূত্রে খবর।
০৫১৬
বিপরীতে, একই বছরে ভারতের আম রফতানির পরিমাণ ছিল ৪৭০ কোটি টাকার কাছাকাছি, যা চিনের তুলনায় ৬.২৪ শতাংশ কম। ২০২২ সালে ভারত আম রফতানিতে চিনের তুলনায় আরও বেশি পিছিয়ে ছিল।
০৬১৬
সেই বছর চিন আম রফতানি করে ৫১৯ কোটি বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে। সেই তুলনায় আম রফতানিতে ভারতের আয় ছিল অনেকটাই কম, ৩৮৪ কোটির আশপাশে।
০৭১৬
তবে ভারতীয় আম রফতানিকারকেরা ২০২৪ সালের রফতানির পরিমাণ পরিবর্তন নিয়ে আশাবাদী। তথ্য বলছে, ইতিমধ্যেই ভারত জানুয়ারি থেকে মে মাসে ৪১৫ কোটি টাকার আম পাঠিয়েছে গোটা বিশ্বে।
০৮১৬
দক্ষিণ চিনের কিছু অংশ বাদে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত আম কী বা এর স্বাদ কেমন, জানতেন না বেশির ভাগ চিনা। চিনের সঙ্গে বন্ধুত্ব মজবুত করতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু পঞ্চাশের দশকে ফল ছাড়াও আটটি আমের চারা উপহার দিয়েছিলেন। এর মধ্যে দশেরি, চৌসা, আলফানসো এবং ল্যাংড়ার মতো জনপ্রিয় জাত ছিল।
০৯১৬
১৯৫৫ সাল থেকে ভারত আমগাছের চারা পাঠাতে শুরু করে চিনকে। কলকাতা থেকে মালদহের আম নিয়ে জুন মাসে সেই দল চিনের উদ্দেশে রওনা দেয় বলে লেখা রয়েছে চিনের একটি নথিতে।
১০১৬
দশেরি, চৌসা, ল্যাংড়া, আলফোনসো গাছের চারা পাঠানো হয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানে। হংকং হয়ে সেই আমের চারা পৌঁছয় বেজিং। তবে তার পরের বছরই ভারত-চিনের যুদ্ধ সেই আমের স্বাদকে তেতো করে তোলে। ২০০৩ পর্যন্ত সেই আমের দৌত্য বন্ধ থাকে।
১১১৬
প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর চিন সফরের পর ২০০৪ সাল থেকে আবার আম পাঠাতে শুরু করে ভারত। তবে বর্তমান যা পরিস্থিতি, তাতে শুধু আম কেন, চিনের সঙ্গে সমস্ত বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে।
১২১৬
ধীরে ধীরে চিন আমের বিভিন্ন জাতের চাষে উল্লেখযোগ্য দক্ষতা তৈরি করেছে, বিশেষ করে দক্ষিণের প্রদেশ, যেমন হাইনান এবং গুয়াংডংয়ে আবহাওয়া আম চাষের জন্য অনুকূল হওয়ায় চিনে আমের ফলন বাড়ছে।
১৩১৬
এমনকি ভারতেও আম রফতানি করছে চিন। তোতাপুরি ও কেশরের মতো জাতের আম রফতানি করছে তারা।
১৪১৬
ভারতে আমের মরসুম হল এপ্রিল, মে এবং জুন। ফেব্রুয়ারি, মার্চ এবং জুলাইকে ফসল কাটার অনুকূল মাস বলে ধরা হয় না। অন্য দিকে, চিনে আমের মরসুম জুন থেকে অগস্টের মধ্যে পড়ে।
১৫১৬
ভারতীয় আমের রফতানিতে ভাটা পড়ার আরও একটি কারণ হল অনেক ভারতীয় আমে নিষিদ্ধ রাসায়নিক এবং কীটনাশকের উপস্থিতি। যে কারণে বিদেশে ভারতীয় আমের কদর কমছে।
১৬১৬
ল্যাংড়া, চৌসা এবং ভারতের জিআই-ট্যাগ পাওয়া ফজলির মতো জনপ্রিয় ভারতীয় আমের জাত পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো পড়শি দেশগুলিতে চাষ করা হচ্ছে। ফলে সেই আমের উৎপত্তি নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্ত। এর ফলে বিশ্ব বাজারে আমের প্রতিযোগিতায় ভারতের অবস্থান আরও জটিল হয়ে উঠছে।