ফৈজাবাদে বিজেপির হারের দায় কার? এই নিয়ে প্রশাসনের দিকে পাল্টা আঙুল তোলেন মন্দিরের প্রধান পুরোহিত। তার পরে তুলে নেওয়া হয় তাঁর নিরাপত্তারক্ষী।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪ ১৭:৫৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
ফৈজাবাদে বিজেপির হারের দায় কার? এই নিয়ে প্রশাসনের দিকে পাল্টা আঙুল তোলেন মন্দিরের প্রধান পুরোহিত। তার পরে তুলে নেওয়া হয় তাঁর নিরাপত্তারক্ষী। এটা কি ঘটনাচক্রে? প্রশাসন সে রকম দাবি করলেও পুরোহিত মানতে চাননি। দাবি করে বলেছেন, ‘‘সাধুদের সরকারে সাধুদেরই নিরাপত্তা নেই।’’ এই নিয়েই সরগরম মন্দিরনগরী অযোধ্যা।
০২১৬
অযোধ্যার হনুমানগড়হি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত মহান্ত রাজু দাসের নিরাপত্তা তুলে নেওয়ায় বিতর্ক। বন্দুকধারী পুলিশকর্মী এ বার থেকে আর তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন না।
০৩১৬
গত শুক্রবার ফৈজাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির হার নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে বাদানুবাদের জড়িয়েছিলেন মোহান্ত। তার পরেই এই পদক্ষেপ।
০৪১৬
মন্দিরনগরী অযোধ্যা এই ফৈজাবাদ লোকসভা আসনের অন্তর্গত। সেখানে লোকসভা নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন বিজেপির প্রার্থী। সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী অবধেশ কুমার জয়ী হয়েছেন।
০৫১৬
ফৈজাবাদে বিজেপির হারের পর্যালোচনা করতে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী সূর্যপ্রতাপ শাহি এবং জয়বীর সিংহ। সেখানেই জেলাশাসক নীতীশ কুমারের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন মোহান্ত।
০৬১৬
শনিবার মোহান্ত বলেন, ফৈজাবাদে হারের জন্য শুধু বিজেপি কর্মীদের দায়ী করলে চলবে না। নেপথ্যে জেলাশাসকেরও দোষ রয়েছে। সে কারণেই সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী অবধেশ কুমারের কাছে হেরেছেন দু’বারের বিজেপি সাংসদ লাল্লু সিংহ।
০৭১৬
কেন জেলাশাসকের দোষ, তা-ও জানিয়েছেন তিনি। মোহান্তের দাবি, জেলাশাসক অযোধ্যার লোকজনকে নোটিস পাঠিয়ে জমি খালি করতে বলেছেন। পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তা-ও আবার ভোটের আগে। সে কারণেই হারতে হয়েছে বিজেপিকে, এমনই দাবি মোহান্তের।
০৮১৬
মোহান্তের দাবি, ওই বৈঠকের পরেই তাঁর নিরাপত্তারক্ষীকে সরিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। একটি সংবাদমাধ্যমকে মোহান্ত বলেন, ‘‘শুক্রবার রাত ১১টার সময় বৈঠকে বসেছিলাম। জেলাশাসকের সঙ্গে বিবাদ হয়। তিনি এসপিকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে যান। দু’মিনিট পর ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি আমার নিরাপত্তারক্ষী নেই। আমাকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তারক্ষী তুলে নেওয়া হয়েছে।’’
০৯১৬
মোহান্ত জানিয়েছেন, এই নিয়ে তিনি ঊর্ধ্বতনদের কাছে যাবেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানাচ্ছি। সাধুদের সরকারে সাধুদেরই অপমান।’’
১০১৬
জেলাশাসক মোহান্তের দাবি মানেননি। তাঁর দাবি, আগে থেকেই রক্ষী সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জেলাশাসক কুমার বলেছেন, ‘‘২০১৩, ২০১৭, ২০২৩ সালে রাজু দাসের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা দায়ের হয়েছিল। সেটা জানার পরই তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে তিন জন সশস্ত্র পুলিশকর্মীকে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল।’’
১১১৬
জেলাশাসক জানিয়েছেন, দু’জন রক্ষীকে আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বার তৃতীয় জনকেও সরানো হল।
১২১৬
জেলাশাসক কুমার আরও বলেন, ‘‘তিনি জানিয়েছিলেন প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে তাঁর। তাই নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু আমরা অভিযোগ পেয়েছি যে, ওই পুলিশকর্মীদের দিয়ে রাজু দাস লোকজনকে ভয় দেখাচ্ছেন। প্রশাসন এবং অযোধ্যাবাসীর বিরুদ্ধে কুকথাও বলেছেন তিনি।’’
১৩১৬
গোটা ঘটনা হয়েছে যোগী আদিত্যনাথের মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রীর সামনে। সূর্যপ্রতাপ শাহি রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী। তিনি একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচন এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে বৈঠক ছিল। সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে ভোটের পর্যালোচনা চলছিল। প্রশাসনের পাঁচ আধিকারিকের সঙ্গে অন্য একটি বৈঠক চলছিল। মোহান্ত সেখানে আমন্ত্রিত না থাকলেও উপস্থিত হন।’’
১৪১৬
মন্ত্রী আরও জানান, তাঁর সামনে জেলাশাসকের সঙ্গে মোহান্তের ঝামেলা হয়নি। যা হয়েছে, ঘরের বাইরে।
১৫১৬
তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার জন্য রামমন্দির নির্মাণ এবং রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠাকে ‘কড়ি’ করেই ভোট-বৈতরণী পার করতে চেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর দল। কিন্তু অযোধ্যা যে লোকসভার অন্তর্গত, সেই ফৈজাবাদ কেন্দ্রেই সমাজবাদী পার্টির দলিত প্রার্থীর কাছে হেরে যান বিজেপির দু’বারের জয়ী প্রার্থী। অযোধ্যার হার রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে দেয় বিজেপিকে। সেই নিয়ে পর্যালোচনা করতে চলেছিল বৈঠক। তাতে আরও এক বিপত্তি।
১৬১৬
বিজেপির একাংশ বৈঠকে বিজেপি প্রার্থী লাল্লু সিংহের একটি ভিডিয়োকে দায়ী করেছেন। ওই ভিডিয়োতে লাল্লুকে বলতে শোনা গিয়েছে, সংবিধানের বদলের জন্য বিজেপির ৪০০ আসন দরকার। আনন্দবাজার অনলাইন সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। বিজেপির একাংশের মতে, দলিতেরা বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখেননি। শঙ্কিত হয়েছেন। সে কারণেই জয়ী হয়েছেন দলিত নেতা অবধেশ।