Lakhs of people may get affected by instable glacier lakes in India dgtl
Glacier Lake
সিকিমের মতো দশা হতে পারে আরও দুই রাজ্যের, ভয়ঙ্কর পরিণতির আশঙ্কায় ৩০ লাখ মানুষ!
নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৩০টি দেশে এ রকম ১০৮৯টি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের অববাহিকা রয়েছে, যে অববাহিকায় প্রায় ন’কোটি মানুষের বাস।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:২৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
মাস দুয়েক আগেই ভয়ানক বিপর্যয় দেখেছে হিমালয়ের দুই রাজ্য উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশে। মেঘভাঙা বৃষ্টি, ধস, বন্যা পরিস্থিতির মতো ঘটনায় লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে দুই রাজ্য। মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। সেই ক্ষত এখনও সারিয়ে উঠতে পারেনি দুই রাজ্য। তার মধ্যেই আরও একটি পাহাড়ি রাজ্যে নেমে এল ভয়ানক বিপর্যয়। গত বুধবারেই উত্তর সিকিমে দক্ষিণ লোনক হ্রদ ফেটে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে বিস্তীর্ণ উত্তর সিকিম।
ছবি: সংগৃহীত।
০২১৬
ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি) কয়েক বছর আগে সিকিমে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। উপগ্রহচিত্রের মাধ্যমে লোনকের মতো ৩২০টি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের সন্ধান পেয়েছিল তারা। যেগুলির মধ্যে ১৪টিকে তারা বিপজ্জনক বলে জানায়। আবার অন্য এক সমীক্ষার দাবি, এ রকম হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের অববাহিকায় ভারতের ৩০ লক্ষ লোকের বাস। যেগুলি সিকিম এবং কেদারনাথের মতো ভয়ানক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
ছবি: সংগৃহীত।
০৩১৬
শুধু ভারতেই যদি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের নিম্ন অববাহিকায় এই বিপুল সংখ্যক মানুষ বাস করেন, তা হলে গোটা বিশ্বে এমন অববাহিকায় বসবাসের সংখ্যা কত হবে?
ছবি: সংগৃহীত।
০৪১৬
নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৩০টি দেশে এ রকম ১০৮৯টি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের অববাহিকা রয়েছে, যে অববাহিকায় প্রায় ন’কোটি মানুষের বাস। তার মধ্যে দেড় কোটি মানুষের বাস এই ধরনের হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের ৫০ কিলোমিটারের মধ্যেই। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই এই ধরনের হ্রদের যত কাছে বাস হবে, বিপদ ততই বেশি।
ছবি: সংগৃহীত।
০৫১৬
যদি বিশ্বের ৩০টি দেশের ওই ১০৮৯টি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদ ফেটে যায়, তা হলে ন’কোটি মানুষই যে সেই বিপর্যয়ের মুখে পড়বেন, এমনটা নয়। তবে বিজ্ঞানীদের অনুমান, ৯০ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলাতে পারবেন না।
ছবি: সংগৃহীত।
০৬১৬
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিশ্বে এমন চারটি দেশ রয়েছে যেখানে এই হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ, যদি বিশ্বে ১০৮৯টি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদ থাকে, তার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি হ্রদ এই চার দেশে রয়েছে। সেই চারটি দেশ হল— ভারত, পাকিস্তান, পেরু এবং চিন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৭১৬
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের অববাহিকায় বসবাস করেন এমন ৪৮ শতাংশ মানুষ ওই সব হ্রদ থেকে ২০-২৫ কিলোমিটারের মধ্যে থাকেন। আবার তিন লক্ষ মানুষ এই ধরনের হ্রদের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করেন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৮১৬
হিমবাহসৃষ্ট হ্রদ মূলত হাই মাউন্টেন এশিয়া (এইচএমএ)-য় বেশি রয়েছে। এই হ্রদের কাছাকাছি বসতি না থাকলেও হ্রদের অববাহিকার নীচের দিকে বহু বসতি গড়ে উঠেছে। বিজ্ঞানীরা বিশ্বের চার পর্বতমালায় থাকা হিমবাহসৃষ্ট হ্রদগুলির অববাহিকায় সমীক্ষা চালিয়েছেন। সেই চারটি হল— হাই মাউন্টেন এশিয়া রেঞ্জ, ইউরোপিয়ান আল্পস, আন্দিজ এবং প্যাসিফিক নর্থওয়েস্ট।
ছবি: সংগৃহীত।
০৯১৬
বিশ্বে যে ১০৮৯টি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদ রয়েছে, তার মধ্যে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া, পেরু এবং বলিভিয়ার হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের অববাহিকা ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক’ তালিকায় রয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত।
১০১৬
বিজ্ঞানীদের দাবি, এই হ্রদগুলি যে কোনও সময় ফেটে যেতে পারে। পাকিস্তানে এই ধরনের হ্রদের আশপাশে ১২ লক্ষ মানুষের বাস। পেরুতে ৯০ হাজার এবং বলিভিয়ায় ১০ হাজার মানুষ বাস করেন।
ছবি: সংগৃহীত।
১১১৬
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হাই মাউন্টেন এশিয়া অর্থাৎ হিমালয় অঞ্চলে পাহাড়ে যে সব হিমবাহসৃষ্ট হ্রদ রয়েছে, কয়েক দশকে সেই হ্রদগুলি ৩৭-৯৭ শতাংশ বেড়েছে।
ছবি: সংগৃহীত।
১২১৬
ভারতের তিন রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ৩৪টি হিমবাহ রয়েছে। তার মধ্যে ১৪টি বড় হিমবাহ। হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, অরুণাচল প্রদেশ এই তিন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত লাদাখে রয়েছে এই হিমবাহগুলি।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, লাদাখে প্রতি বছর হিমবাহ গলছে। গলনের দিক থেকে এগিয়ে অরগনগ্লাস এবং ড্রুং ড্রুং হিমবাহ। প্রতি বছরে ১৮.৮৬ মিটার হারে গলছে অরগনগ্লাস এবং ড্রুং ড্রুং প্রতি বছরে গলছে ১২ মিটার করে। একমাত্র থারা কাংড়ি হিমবাহ গত পাঁচ বছরে বেড়েছে। প্রতি বছর ১১.১৩ মিটার হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এই হিমবাহ।
ছবি: সংগৃহীত।
১৫১৬
অরুণাচল প্রদেশে খাংড়ি হিমবাহ গত পাঁচ বছরে প্রতি বছর ৬.৫০ মিটার হারে গলেছে। এই রাজ্যে ১২টি হিমবাহ রয়েছে। তার মধ্যে গেপাং হিমবাহ সবচেয়ে বেশি হারে গলছে। প্রতি বছর ৩০ মিটার হারে গলছে এই হিমবাহ।
ছবি: সংগৃহীত।
১৬১৬
উত্তরাখণ্ডে ৬টি হিমবাহ রয়েছে। তার মধ্যে মাবাং প্রতি বছর ৬.৯৬ মিটার হারে, পিয়ুংগ্রু ৪.৪৫ মিটার, চিপা ৭.৯০ মিটার, গঙ্গোত্রী ৩৩.৮০ মিটার, ডোকরিয়ানি ২১ মিটার, চোরাবারি ১১ মিটার হারে গলছে। সমীক্ষা বলছে, উত্তরাখণ্ডে হিমবাহের গলনের হার দেশের মধ্যে বেশি। সুতরাং, উত্তরাখণ্ডে বিপদও বেশি।