সুশর্মা কৌরবদের পক্ষে যোগ দিয়েছিলেন। যুদ্ধের ত্রয়োদশতম দিনে অর্জুনপুত্র মহাবীর অভিমন্যুকে বধ করার পরিকল্পনা করেন কৌরবরা। অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্য অভিমন্যুকে এক চক্রব্যুহ সৃষ্টি করে ঘিরে ফেলার ব্যবস্থা করেন। দ্রোণের এই ব্যুহ ভেদ করার কৌশল মাত্র দু’জন ব্যক্তিই জানতেন। কৃষ্ণ এবং অর্জুন। অভিমন্যুকে ব্যুহ ভেদে তাঁরা যাতে সহায়তা না করতে পারেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া কৌরবদের পক্ষে একান্ত ভাবে প্রয়োজনীয় ছিল।
কাতোচরাজ সুশর্মা সম্পর্কে ‘মহাভারত’-এর বিরাট পর্বেও উল্লেখ রয়েছে। তিনি দুর্যোধনের সম্পর্কিত শ্যালক। তিনি ছিলেন ত্রিগর্তের (বর্তমানে কাংড়া) শাসক। সুশর্মা বিরাট রাজের গোধন হরণ করলে বিরাট তাঁকে আক্রমণ করেন। সুশর্মা বিরাটকে পরাজিত ও বন্দি করেন। পাণ্ডবরা তখন অজ্ঞাতবাসে বিরাট রাজের আশ্রয়ে রয়েছেন। যুধিষ্ঠির ভীমকে বলেন বিরাটকে মুক্ত করতে। ভীম সুশর্মাকে আক্রমণ করেন এবং পরাস্ত করে বিরাটকে মুক্ত করেন। সুতরাং সুশর্মার সঙ্গে পাণ্ডবদের শত্রুতা আগে থেকেই ছিল।
কিংবদন্তি অনুযায়ী, সেই মহাভারতীয় কাল থেকেই কাতোচ রাজারা এই দুর্গে তাঁদের বিপুল ধনরত্ন সঞ্চয় করতে শুরু করেন। পরে যখন এখানে নতুন দুর্গ-কাঠামো গড়ে তোলা হয়, তখন তার অভ্যন্তরে বেশ কিছু মন্দিরও প্রতিষ্ঠা করেন রাজারা। সেই সব মন্দিরেই রাজারা তাঁদের ধনসম্পদ গচ্ছিত রাখতে শুরু করেন। তা ছাড়াও, বিভিন্ন ধনী ব্যক্তিও যুগ যুগ ধরে এখানে সোনা বা মূল্যবান রত্ন দান করতে থাকেন।
এই ধনরত্নের কাহিনি আলেকজান্ডার থেকে শুরু করে গজনির সুলতান মামুদের মতো বিদেশি আক্রমণকারীদের যে কাংড়া দুর্গের প্রতি নজর দিতে বাধ্য করেছিল, তা বিভিন্ন সময়ের বিবরণ থেকে জানা যায়। মুঘল সম্রাট আকবরের বাহিনী ৫২ বার এই দুর্গ আক্রমণ করেছিল বলে কথিত আছে। তার আগে কাশ্মীরের রাজা, সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলক এবং ফিরোজ শাহ তুঘলকও কাংড়া দুর্গ আক্রমণ করেন বলে জানা যায়। তবে এই সব আক্রমণের বেশির ভাগই সফল হয়নি।
বেশ কিছু জনশ্রুতি বলে, গজনির সুলতান মামুদ দুর্গে প্রবেশ করে কিছু রত্নকূপ লুণ্ঠন করেন। উনিশ শতকে ব্রিটিশ বাহিনীও নাকি ব্যাপক লুঠতরাজ চালায় এই দুর্গে। তবে এ কথাও সত্য যে, আকবরের পুত্র জহাঙ্গির কাংড়া দুর্গ অধিকারে সমর্থ হন। কিন্তু কিছু দিন পরেই কাতোচ বংশীয় রাজা সংসার চাঁদ দুর্গ পুনরুদ্ধার করেন। তারও পরে শিখ সেনারা দুর্গ দখল করে। শেষ পর্যন্ত কাংড়া দুর্গ ব্রিটিশ অধিকারে চলে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy