Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Iran Hijab Row

হিজাব-বিক্ষোভ দমনে আগ্নেয়াস্ত্রধারী হিজাব পরিহিতারাই! মহিলা কম্যান্ডোদের কাজে লাগাচ্ছে ইরান

কী ভাবে কাজ করছেন, তা-ও খোলসা করেছেন কর্নেল হায়দারি। তিনি জানিয়েছেন, যাঁরা ‘নৈতিক মূল্যবোধ’ লঙ্ঘন করবেন, তাঁদের ছবি তুলে রাখাই এই মহিলা কম্যান্ডোদের কাজ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:০৮
Share: Save:
০১ ১৬
হিজাবে ঢাকা গোটা শরীর। সাদা গ্লাভস পরা হাতে ধরা অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল। ইরানের রাস্তায় নেমেছেন এমনই হাজার হাজার মহিলা কম্যান্ডো। হিজাব-বিরোধীদের দমন করাই তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য।

হিজাবে ঢাকা গোটা শরীর। সাদা গ্লাভস পরা হাতে ধরা অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল। ইরানের রাস্তায় নেমেছেন এমনই হাজার হাজার মহিলা কম্যান্ডো। হিজাব-বিরোধীদের দমন করাই তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য।

০২ ১৬
পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন ২২ বছরের তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে গোটা ইরান।

পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন ২২ বছরের তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে গোটা ইরান।

০৩ ১৬
মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, হিজাববিহীন হওয়ার ‘অপরাধে’ মাহশাকে তুলে নিয়ে যায় ইরানের পুলিশ। দু’দিন ধরে পুলিশি হেফাজতে তাঁর উপর  চলে অকথ্য অত্যাচার। তাতেই মৃত্যু হয়েছে মাহশার।

মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, হিজাববিহীন হওয়ার ‘অপরাধে’ মাহশাকে তুলে নিয়ে যায় ইরানের পুলিশ। দু’দিন ধরে পুলিশি হেফাজতে তাঁর উপর চলে অকথ্য অত্যাচার। তাতেই মৃত্যু হয়েছে মাহশার।

০৪ ১৬
ইরানের পুলিশের পাল্টা দাবি, পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন মাহশা। তার পর থেকে কোমায় চলে যান তিনি। তা থেকে বেঁচে ফিরে আসেননি। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীরা এই দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন। মাহশার মেডিক্যাল রিপোর্ট ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর পুলিশের দাবিকে ভুয়ো বলে মনে করছেন তাঁরা।

ইরানের পুলিশের পাল্টা দাবি, পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন মাহশা। তার পর থেকে কোমায় চলে যান তিনি। তা থেকে বেঁচে ফিরে আসেননি। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীরা এই দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন। মাহশার মেডিক্যাল রিপোর্ট ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর পুলিশের দাবিকে ভুয়ো বলে মনে করছেন তাঁরা।

০৫ ১৬
মাহশার মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানের রাস্তায় বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে। হিজাবের বিরোধিতায় শ’য়ে শ’য়ে মহিলা বিক্ষোভকারী গর্জে উঠেছেন অভিনব প্রতিবাদে। তাঁদের কেউ মাথা কামিয়ে ফেলেছেন। কেউ বা আবার ইরান সরকারকে ‘একনায়কের’ তকমা দিয়ে মৃত্যুকামনা করে স্লোগান তুলেছেন। পোড়ানো হয়েছে কুশপুতুল, পুলিশের গাড়ি এব‌ং হিজাব। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাথরের বৃষ্টিও হয়েছে। বিক্ষোভ চলছে ইরানের অন্তত ৮০টি শহরে। সমাজমাধ্যমের দৌলতে সে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে।

মাহশার মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানের রাস্তায় বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে। হিজাবের বিরোধিতায় শ’য়ে শ’য়ে মহিলা বিক্ষোভকারী গর্জে উঠেছেন অভিনব প্রতিবাদে। তাঁদের কেউ মাথা কামিয়ে ফেলেছেন। কেউ বা আবার ইরান সরকারকে ‘একনায়কের’ তকমা দিয়ে মৃত্যুকামনা করে স্লোগান তুলেছেন। পোড়ানো হয়েছে কুশপুতুল, পুলিশের গাড়ি এব‌ং হিজাব। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাথরের বৃষ্টিও হয়েছে। বিক্ষোভ চলছে ইরানের অন্তত ৮০টি শহরে। সমাজমাধ্যমের দৌলতে সে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে।

০৬ ১৬
প্রতিবাদীদের দমাতে সক্রিয় হয়েছে ইরান পুলিশ। অসলোর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ইরান হিউম্যান রাইটস্‌’-এর দাবি, পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫৭ জন প্রতিবাদী নিহত হয়েছেন। যদিও সরকারি মতে, সে সংখ্যাটি ২৮। যদিও সেটি ভুয়ো পরিসংখ্যান বলে নস্যাৎ করেছে ওই স্বেচ্ছাসেবী মানবাধিকার সংগঠনটি।

প্রতিবাদীদের দমাতে সক্রিয় হয়েছে ইরান পুলিশ। অসলোর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ইরান হিউম্যান রাইটস্‌’-এর দাবি, পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫৭ জন প্রতিবাদী নিহত হয়েছেন। যদিও সরকারি মতে, সে সংখ্যাটি ২৮। যদিও সেটি ভুয়ো পরিসংখ্যান বলে নস্যাৎ করেছে ওই স্বেচ্ছাসেবী মানবাধিকার সংগঠনটি।

০৭ ১৬
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, বিক্ষোভকারীদের দমনে আরও একটি পন্থা নিয়েছে ইরান সরকার। রাস্তায় নামানো হয়েছে হাজার সাতেক হিজাবধারী সশস্ত্র মহিলা কম্যান্ডো। এ সবই নাকি ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির নির্দেশে করা হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, বিক্ষোভকারীদের দমনে আরও একটি পন্থা নিয়েছে ইরান সরকার। রাস্তায় নামানো হয়েছে হাজার সাতেক হিজাবধারী সশস্ত্র মহিলা কম্যান্ডো। এ সবই নাকি ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির নির্দেশে করা হয়েছে।

০৮ ১৬
‘দ্য সান’-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ধরে ধরে জেলে পুরতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন ওই কম্যান্ডোরা। যদিও সংবাদমাধ্যমের কাছে ওই বিশেষ কম্যান্ডো ইউনিটের প্রধান কর্নেল হাইদারির দাবি, ‘‘আমাদের ইউনিটের সমস্ত মহিলা কম্যান্ডোর লক্ষ্য দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা।’’

‘দ্য সান’-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ধরে ধরে জেলে পুরতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন ওই কম্যান্ডোরা। যদিও সংবাদমাধ্যমের কাছে ওই বিশেষ কম্যান্ডো ইউনিটের প্রধান কর্নেল হাইদারির দাবি, ‘‘আমাদের ইউনিটের সমস্ত মহিলা কম্যান্ডোর লক্ষ্য দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা।’’

০৯ ১৬
দেশজোড়া হিজাব-বিরোধিতা যে বেআইনি, তা সাফ জানিয়েছেন কর্নেল হায়দারি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি দুঃখিত, কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছি যে এ সব প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সবই বেআইনি কার্যকলাপ। এগুলি আমাদের সমাজের সঙ্গে খাপ খায় না।’’

দেশজোড়া হিজাব-বিরোধিতা যে বেআইনি, তা সাফ জানিয়েছেন কর্নেল হায়দারি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি দুঃখিত, কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছি যে এ সব প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সবই বেআইনি কার্যকলাপ। এগুলি আমাদের সমাজের সঙ্গে খাপ খায় না।’’

১০ ১৬
তাঁর ইউনিটের কম্যান্ডোদের লক্ষ্য কী, সেটিও স্পষ্ট জানিয়েছেন কর্নেল হায়দারি। তিনি বলেন, ‘‘ইসলামিক মূল্যবোধ অনুযায়ী কার্যকলাপের যাঁরা বিরোধী, তাঁদের বিরোধিতা করাই আমাদের কাজ।’’

তাঁর ইউনিটের কম্যান্ডোদের লক্ষ্য কী, সেটিও স্পষ্ট জানিয়েছেন কর্নেল হায়দারি। তিনি বলেন, ‘‘ইসলামিক মূল্যবোধ অনুযায়ী কার্যকলাপের যাঁরা বিরোধী, তাঁদের বিরোধিতা করাই আমাদের কাজ।’’

১১ ১৬
কী ভাবে নিজেদের কাজ করছেন, তা-ও খোলসা করেছেন কর্নেল হায়দারি। তিনি জানিয়েছেন, যাঁরা ‘নৈতিক মূল্যবোধ’ লঙ্ঘন করবেন, তাঁদের ছবি তুলে রাখাই এই মহিলা কম্যান্ডোদের কাজ। এ ছাড়া, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করাও তাঁদের কাজের অঙ্গ বলে জানিয়েছেন কর্নেল। যদিও বিক্ষোভকারীদের দমনে শুধুমাত্র এটুকুতেই যে ওই কম্যান্ডোরা থেমে নেই, সে দাবি করেছে বিদেশি সংবাদমাধ্যম।

কী ভাবে নিজেদের কাজ করছেন, তা-ও খোলসা করেছেন কর্নেল হায়দারি। তিনি জানিয়েছেন, যাঁরা ‘নৈতিক মূল্যবোধ’ লঙ্ঘন করবেন, তাঁদের ছবি তুলে রাখাই এই মহিলা কম্যান্ডোদের কাজ। এ ছাড়া, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করাও তাঁদের কাজের অঙ্গ বলে জানিয়েছেন কর্নেল। যদিও বিক্ষোভকারীদের দমনে শুধুমাত্র এটুকুতেই যে ওই কম্যান্ডোরা থেমে নেই, সে দাবি করেছে বিদেশি সংবাদমাধ্যম।

১২ ১৬
বিদেশি সংবাদমাধ্যমে দেখা গিয়েছে, দড়ির সাহায্যে দেওয়াল বেয়ে উঠানামার মতো মহড়া থেকে শুরু করে ইরানের রাস্তায় একে-৪৭ বা এমপি-৫ হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন হিজাবপরিহিতা মহিলা কম্যান্ডোরা। বিক্ষোভকারীদের ‘দমনপীড়নের’ জন্য কি এত সাজ সাজ রব? প্রশ্ন সংবাদমাধ্যমের।

বিদেশি সংবাদমাধ্যমে দেখা গিয়েছে, দড়ির সাহায্যে দেওয়াল বেয়ে উঠানামার মতো মহড়া থেকে শুরু করে ইরানের রাস্তায় একে-৪৭ বা এমপি-৫ হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন হিজাবপরিহিতা মহিলা কম্যান্ডোরা। বিক্ষোভকারীদের ‘দমনপীড়নের’ জন্য কি এত সাজ সাজ রব? প্রশ্ন সংবাদমাধ্যমের।

১৩ ১৬
সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৭৯ সালে বিপ্লবের মাধ্যমে রাজতন্ত্রের অবসানের পর ইসলামিক প্রজাতন্ত্র গঠিত হওয়ার বহু বছর পর মহিলারা দেশের সেনাবাহিনীতে ঢোকার সুযোগ পান। সেনাবাহিনীতে গঠন করা হয়েছিল ফারাজা পাবলিক সার্ভিস অর্গানাইজেশন। যার দেশের পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সংযুক্ত। ওই সংগঠনই মহিলা কম্যান্ডোদের এই ইউনিটটি গড়ে তোলে।

সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৭৯ সালে বিপ্লবের মাধ্যমে রাজতন্ত্রের অবসানের পর ইসলামিক প্রজাতন্ত্র গঠিত হওয়ার বহু বছর পর মহিলারা দেশের সেনাবাহিনীতে ঢোকার সুযোগ পান। সেনাবাহিনীতে গঠন করা হয়েছিল ফারাজা পাবলিক সার্ভিস অর্গানাইজেশন। যার দেশের পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সংযুক্ত। ওই সংগঠনই মহিলা কম্যান্ডোদের এই ইউনিটটি গড়ে তোলে।

১৪ ১৬
বস্তুত, ২০০৩ সালে ইরানের পুলিশ বাহিনীতে প্রথম বার মহিলাদের ঢোকার সুযোগ হয়েছিল। এই ইউনিটের নতুন সদস্যদের প্রত্যেককেই তিন বছরের কড়া ট্রেনিং দেওয়া হয়। তাতে জুডো, ফেন্সিং, বিস্ফোরক সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ছাড়াও শেখানো হয় অস্ত্রচালনা।

বস্তুত, ২০০৩ সালে ইরানের পুলিশ বাহিনীতে প্রথম বার মহিলাদের ঢোকার সুযোগ হয়েছিল। এই ইউনিটের নতুন সদস্যদের প্রত্যেককেই তিন বছরের কড়া ট্রেনিং দেওয়া হয়। তাতে জুডো, ফেন্সিং, বিস্ফোরক সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ছাড়াও শেখানো হয় অস্ত্রচালনা।

১৫ ১৬
ইউনিটের ট্রেনিংয়ের পর এই মহিলা কম্যান্ডোদের স্নাতক হওয়ার অনুষ্ঠানের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। তাতে দেখা গিয়েছে, সোনালি-সবুজের রঙের ছোঁয়া রয়েছে এমন চিরাচরিত কালো হিজাবে ঢাকা কম্যান্ডোরা অস্ত্র হাতে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে।

ইউনিটের ট্রেনিংয়ের পর এই মহিলা কম্যান্ডোদের স্নাতক হওয়ার অনুষ্ঠানের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। তাতে দেখা গিয়েছে, সোনালি-সবুজের রঙের ছোঁয়া রয়েছে এমন চিরাচরিত কালো হিজাবে ঢাকা কম্যান্ডোরা অস্ত্র হাতে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে।

১৬ ১৬
সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই মহিলা কম্যান্ডোরাই ইরানের রাস্তায় নীতি পুলিশি করে বেড়ান। হিজাব ছাড়া রাস্তায় নামা মাহশাকে গ্রেফতারির পিছনেও নাকি এঁদেরই হাত ছিল।

সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই মহিলা কম্যান্ডোরাই ইরানের রাস্তায় নীতি পুলিশি করে বেড়ান। হিজাব ছাড়া রাস্তায় নামা মাহশাকে গ্রেফতারির পিছনেও নাকি এঁদেরই হাত ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy