India's Retail Inflation Rate in January 2025, know the state wise list dgtl
Retail Inflation Rate in India
কোন রাজ্যে আগুন দামে খুচরো বাজারে বিকোচ্ছে জিনিস? কোথায় সবচেয়ে সস্তা? বাংলার স্থান কোথায়?
জানুয়ারি মাসের খুচরো মুদ্রাস্ফীতির সূচক প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। কোন রাজ্যে মূল্যবৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি এবং কোথায় সর্বনিম্ন, সেই তালিকাও দিয়েছে জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৪৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল মুদ্রাস্ফীতি। মূল্যবৃদ্ধির সেই সূচককে নামিয়ে আনার লাগাতার চেষ্টা চালাচ্ছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। বর্তমানে কোন রাজ্যের মুদ্রাস্ফীতির হার সবচেয়ে বেশি? কোথায় বাজার সবচেয়ে সস্তা? এ বার সেই তথ্য প্রকাশ্যে আনল জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর (ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্স অফিস বা এনএসও)।
০২১৮
চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি খুচরো মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। সেখানে বলা হয়েছে, জানুয়ারিতে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৪.৩১ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বরের নিরিখে ৯১ বেসিস পয়েন্ট কমেছে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার। অর্থাৎ বেশ কিছুটা সস্তা হয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাজার।
০৩১৮
এই খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলভেদে আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। কিছু রাজ্যের ক্ষেত্রে স্থানীয় কর এবং পরিবহণের খরচ তুলনামূলক ভাবে বেশি। ফলে সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাজার অন্যান্য জায়গার তুলনায় চড়া। মুদ্রাস্ফীতির সূচকের উপরে এগুলির প্রভাব রয়েছে।
০৪১৮
কেন্দ্রের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারিতে রাজ্যওয়াড়ি খুচরো মুদ্রাস্ফীতির ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানে রয়েছে কেরল। ‘ঈশ্বরের আপন দেশে’ মূল্যবৃদ্ধির সূচক ছিল ৬.৭৬ শতাংশ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ওডিশা এবং ছত্তীসগঢ়। ওই দুই রাজ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার ৬.০৫ শতাংশ এবং ৫.৮৫ শতাংশ দাঁড়িয়েছে।
০৫১৮
তালিকায় চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে হরিয়ানা এবং বিহার। জাঠভূমিতে মুদ্রাস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৫.১ শতাংশ। আর বাংলার পড়শি রাজ্যে মূল্যবৃদ্ধির সূচক ৫.০৬ শতাংশ রয়েছে। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে কর্নাটক, তামিলনাড়ু এবং উত্তরাখণ্ড। এই তিন রাজ্যে জানুয়ারি মাসে মূল্যবৃদ্ধির সূচক ছিল ৫.০৩, ৪.৯৪ এবং ৪.৮৯ শতাংশ।
০৬১৮
মুদ্রাস্ফীতির হার সর্বনিম্ন রয়েছে দিল্লিতে। জানুয়ারি মাসে রাজধানীতে সূচক নেমে যায় ২.০২ শতাংশে। দিল্লির ঠিক উপরে রয়েছে তেলঙ্গানা। দক্ষিণি রাজ্যটির মুদ্রাস্ফীতির হার ২.২২ শতাংশ। এ ছাড়া মূল্যবৃদ্ধির সূচক কম থাকা রাজ্যের তালিকায় নাম আছে ঝাড়খণ্ড এবং বাংলার। এই দুই জায়গায় মুদ্রাস্ফীতির হার যথাক্রমে ২.৫৬ এবং ৩.৩৮ শতাংশ বলে জানা গিয়েছে।
০৭১৮
জানুয়ারিতে মহারাষ্ট্র, রাজস্থান এবং গুজরাতের খুচরো মুদ্রাস্ফীতির সূচকে সাড়ে তিন থেকে চার শতাংশের মধ্যে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে। মহারাষ্ট্রে মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৩.৩৯ শতাংশ। মরু রাজ্যের ক্ষেত্রে এটি ছিল ৩.৮৬ শতাংশ। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৩.৮৮ শতাংশ।
০৮১৮
শহরাঞ্চলের খুচরো মুদ্রাস্ফীতির নিরিখে আবার শীর্ষস্থানে রয়েছে বিহার। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় জায়গাটি পেয়েছে কেরল ও উত্তরাখণ্ড। জানুয়ারিতে এই তিন রাজ্যের শহরাঞ্চলের খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ৫.৯, ৫.৮১ এবং ৫.৬২ শতাংশ।
০৯১৮
অন্য দিকে শহরাঞ্চলের খুচরো মূল্যবৃদ্ধির সূচক জানুয়ারিতে সর্বনিম্ন থেকেছে দিল্লিতে। রাজধানীতে এর হার ছিল ১.৯৬ শতাংশ। তেলঙ্গানার ক্ষেত্রে শহরাঞ্চলের খুচরো মুদ্রাস্ফীতির সূচক ২.১৫ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়। দক্ষিণের এই রাজ্যটিকে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন বলেছে জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর।
১০১৮
একই ভাবে গ্রামীণ এলাকার খুচরো মুদ্রাস্ফীতির নিরিখে জানুয়ারিতে প্রথম স্থানে থেকেছে কেরল। ‘ঈশ্বরের নিজের দেশে’র গ্রাম এলাকায় মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৭.৩১ শতাংশ। তালিকায় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে থেকেছে ছত্তীসগঢ় ও ওডিশা। এই দুই রাজ্যের গ্রামগুলির খুচরো মুদ্রাস্ফীতির সূচক ৬.৮৪ এবং ৬.৭৯ শতাংশ ছিল বলে জানা গিয়েছে।
১১১৮
জানুয়ারিতে গ্রামাঞ্চলের খুচরো মুদ্রাস্ফীতির সর্বনিম্ন হার দেখা গিয়েছে আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়খণ্ডে। বাংলার পড়শি রাজ্যটির গ্রামগুলিতে মূল্যবৃদ্ধির সূচক ছিল মাত্র ১.৮৫ শতাংশ। একই ভাবে ২.৩৪ শতাংশ এবং ২.৫৯ শতাংশ ছিল তেলঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্রের গ্রামগুলির খুচরো মুদ্রাস্ফীতির সূচক। তালিকায় শেষের দিক থেকে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে এই দুই রাজ্য।
১২১৮
সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া একটি সমীক্ষায় জানুয়ারি মাসের মুদ্রাস্ফীতির হার ৪.৬ শতাংশ হবে বলে দাবি করেছিল সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। বাস্তবে মূল্যবৃদ্ধির হার আরও কিছুটা কম হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছে আমজনতা।
১৩১৮
সমীক্ষক অবশ্য দাবি করেছিলেন, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) সহনশীলতা ব্যান্ডের (পড়ুন ২-৬ শতাংশ) কাছাকাছি থাকবে মুদ্রাস্ফীতির হার। এই সূচককে আরও নীচে নামানোর জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।
১৪১৮
উল্লেখ্য, ভোক্তা খাদ্য মূল্য সূচকের (কনজ়িউমার ফুড প্রাইস ইনডেক্স বা সিএফপিআই) উপর ভিত্তি করে খাদ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার হিসাব করে সরকার। এ বছরের জানুয়ারিতে সিএফপিআইয়ের সূচক ছিল ৬.০২ শতাংশ।
১৫১৮
গত বছরের অগস্টের পর থেকে শেষ পাঁচ মাসে সিএফপিআইয়ের হার সর্বনিম্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ফলে মুদ্রাস্ফীতির হারও সর্বনিম্ন হয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে খাদ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৮.৩৯ শতাংশ।
১৬১৮
এ বছরের জানুয়ারিতে গ্রামীণ মুদ্রাস্ফীতির হার কমে দাঁড়িয়েছে ৪.৬৪ শতাংশে। অন্য দিকে শহরাঞ্চলে মুদ্রাস্ফীতির হার ৩.৮৭ শতাংশে নেমে এসেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে গ্রাম ও শহরাঞ্চলের মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল যথাক্রমে ৫.৭৬ এবং ৪.৫৮ শতাংশ।
১৭১৮
গত ডিসেম্বরে ভারতের ভোক্তা মূল্য সূচকের (কনজ়িউমার প্রাইস ইনডেক্স) মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৫.২২ শতাংশ। নভেম্বরে এটি ৫.৪৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল। মূলত সব্জি, ডাল, চিনি এবং দানাশস্যের দর সস্তা হওয়ায় এক মাসের ব্যবধানে সামান্য নেমেছিল ওই সূচক।
১৮১৮
তবে নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে শ্লথ হয় দেশের শিল্পবৃদ্ধির সূচক। বছর থেকে বছরের হিসাবে নভেম্বরে এটি ছিল ৫.২ শতাংশে। ডিসেম্বরে সূচক নেমে আসে ৩.২ শতাংশে। শিল্পবৃদ্ধিতে শ্লথ গতি দেখা যাওয়ায় বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।