চাগোস দ্বীপপুঞ্জ হাতে পাওয়ার পর এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) করা পোস্টে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ জগন্নাথ। ‘‘ভারত সরকার বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদী-সহ সমস্ত বন্ধু রাষ্ট্রকে ধন্যবাদ। ঔপনিবেশিকতা শেষ করার জন্য আমাদের লড়াইতে আপনাদের নিঃস্বার্থ সমর্থন পেয়েছি।’’
প্রবাল দ্বীপগুলির মধ্যে আকারের দিক থেকে দিয়েগো গার্সিয়াই সবচেয়ে বড়। ১৫১২ সালে যার সন্ধান পান পর্তুগিজ নাবিক পেড্রো মাসকারেনহাস। জায়গাটা জনমানবশূন্য হওয়ায়, তা নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাননি তিনি। পরবর্তী কালে স্পেনীয় অভিযাত্রী দিয়েগো গার্সিয়া দে মোগুয়ের ফের পৌঁছন ওই দ্বীপে। নিজের নামেই করেন প্রবাল প্রাচীরের নামকরণ। সালটা ছিল ১৫৪৪।
১৮১৪ সালে ইউরোপে শেষ হয় দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের যুদ্ধ। এলবা দ্বীপে নির্বাসিত হন ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান বোনাপার্ট। লড়াই হেরে যাওয়ায় দিয়েগো গার্সিয়া ব্রিটিশদের হাতে তুলে দেয় ফরাসি সরকার। চাগোস দ্বীপপুঞ্জ থেকে যাকে বিচ্ছিন্ন করে দেখতে শুরু করেন ইংরেজ প্রশাসকেরা। যা নিয়ে পরবর্তী কালে দেখা দেয় নতুন রাজনৈতিক জটিলতা।
১৯৬৮ সালের ১২ মার্চ ব্রিটেনের শাসন থেকে মুক্তি পায় মরিশাস। দ্বীপরাষ্ট্রটি স্বাধীনতা পেলেও চাগোসের ক্ষমতা ছিল ইংল্যান্ডের হাতেই। ওই সময়ে আমেরিকাকে নৌঘাঁটি তৈরির জন্য দিয়েগো গার্সিয়ার জমি লিজ় দেয় ব্রিটিশ সরকার। এই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ৫০ বছরের চুক্তি হয়েছিল। যা সম্প্রতি আরও ২০ বছর বৃদ্ধি করা হয়ছে। ফলে, ২০৩৬ পর্যন্ত সেখানে নৌবহর রেখে দিব্যি ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় নজরদারি চালাতে পারবে আমেরিকা।
এই পরিস্থিতিতে দিয়েগো গার্সিয়া তাদের দেশের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে দাবি তোলে মরিশাস। যা নিয়ে ২০১৭ সালে ২২ জুন রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় পাশ হয় একটি সম্মতিপত্র। যাতে এই নিয়ে মীমাংসার জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে (আইসিজে) অনুরোধ করা হয়েছিল। চাগোস দ্বীপপুঞ্জ থেকে দিয়েগো গার্সিয়াকে আলাদা ভাবে দেখার বিষয়টিকে অবৈধ বলে জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক আদালত।
এ ছাড়া ওই দ্বীপে বছরের পর বছর ধরে থাকার ফলে উন্নত সামরিক পরিকাঠামো তৈরি করেছে আমেরিকা। বিগত কয়েক বছর ধরেই যাদের রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে চিন। দিয়েগো গার্সিয়া হাতে থাকলে খুব সহজেই সেখান থেকে নৌবহর পাঠিয়ে দক্ষিণ চিন সাগর বা জাপান সাগর পর্যন্ত বেজিংয়ের আগ্রাসন রুখতে পারবে ওয়াশিংটন। শুধু তা-ই নয়, সে ক্ষেত্রে তাইওয়ান আক্রমণের আগেও দু’বার ভাবতে হবে চিনকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy