প্রতি দিন তিয়াউ নদীর ব্রিজ পেরিয়ে পড়ুয়ারা সীমান্তের গেটে পৌঁছলে মিজোরাম পুলিশের কর্মীরা তাঁদের প্রবেশের অনুমতি দেয়। পুলিশ এই গেটটি সকাল ৭টা থেকে দু’ঘণ্টা খোলা রাখে যাতে পড়ুয়ারা এই দেশে প্রবেশ করতে পারে। ব্রিজ থেকে কয়েক মিটার দূরে একটি কাস্টমস অফিস। ঘড়ির কাঁটায় ৯টা বাজলেই গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
কোভিড অতিমারি আবহে দু’বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে মিজোরামের স্কুলগুলি আবার চালু হয়। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্কুল যাওয়ার উপায় ছিল না খাওমাউইয়ের মতো একাধিক সীমান্তবর্তী এলাকায় থাকা পড়ুয়াদের। তাই শিক্ষার চাহিদা মেটাতে সীমান্ত এলাকায় থাকা প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী প্রতি দিন আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করতে ভারতে এসে পড়াশোনা করতে শুরু করে। তবে ভারতে পড়তে আসা মায়ানমারের ছাত্রদের এক ক্লাস নিচুতে ভর্তি করা হয়।
মায়ানমার থেকে আসা পড়ুয়ারা মূলত ভর্তি হয়েছে জোখাওথারের সেন্ট জোসেফ স্কুল-সহ নয়় সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে। শুধুমাত্র ভারতীয় ছাত্রদের সঙ্গেই নয়, মায়ানমার থেকে আসা অন্য শরণার্থী শিশুদের সঙ্গে একই কক্ষে বসে তাদের পড়াশোনা চলে। মায়ানমার সামরিক বাহিনীর দখলে যাওয়ার পর গত এক বছরে সেই দেশের বহু পরিবার মিজোরামে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
মিজোরামের স্কুলগুলিতে সীমান্ত পেরিয়ে ছাত্র ভর্তি হওয়ায় কতটা চাপ বাড়ছে? এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেন্ট জোসেফ স্কুলের অধ্যক্ষ ফ্রান্সিস সাইলো বলেন, ‘‘কোভিড এবং সহিংসতার কারণে মায়ানমারের বহু পড়ুয়া শিক্ষালাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। তারা সীমান্ত পেরিয়ে আমাদের স্কুলে ভর্তি হওয়ায় আমরা তিনটি নতুন শ্রেণিকক্ষ তৈরি করেছি।” এই স্কুলে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৫২৪ পড়ুয়া রয়েছে। যাদের মধ্যে ২০৬ জন মায়ানমারের।
সীমান্ত থেকে দু’কিলোমিটার দূরে একটি সরকারি প্রাক-প্রাথমিক স্কুলেও পড়ুয়াদের উপচে পড়া ভিড়। এই স্কুলের ৩০৬ জন পড়ুয়ার মধ্যে ২১৫ জন মায়নমারের। এদের মধ্যে প্রায় ২০০ জন প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে। শিক্ষকের সংখ্যা আট। এই কারণে নতুন পড়ুয়াদের জন্য একটি নতুন প্রাক-প্রাথমিক বিভাগ তৈরি করতে হয়েছে বলে স্কুলের অধ্যক্ষ এইচ লাইরিখুমা জানিয়েছেন। তবে ইংরেজি ভাষায় বিশেষ পারদর্শী নয় মায়ানমারের এই পড়ুয়ারা। তাই তাদের অনেককে একদম গোড়া থেকে ইংরেজি শিক্ষা দিতে হচ্ছে বলেও অনেক শিক্ষকদের দাবি।
মায়ানমারের শরণার্থীদের ভারতে প্রবেশ করানো নিয়ে কেন্দ্র এবং ফেডারেল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট সরকারের মধ্যে মতের মিল ছিল না। ২০২১ সালের মার্চ মাসে কেন্দ্রের তরফে মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড এবং অরুণাচল প্রদেশ, এই চার রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয় যাতে মায়নমারের সীমান্ত পেরিয়ে আসা মানুষদের প্রবেশের অনুমতি না দেয়। যাঁরা ইতিমধ্যেই ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে আবার সে দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দেয় কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy