How India managed Chandrayaan-3 mission in such low budget dgtl
ISRO Budget For Chandrayaan-3
সিনেমা তৈরির চেয়েও কম বাজেট, এত সস্তায় কী ভাবে সফল হল ইসরোর চন্দ্রাভিযান?
রাশিয়া কয়েক গুণ বেশি টাকা খরচ করে যা পারেনি, অনেক কম খরচে সেই কাজ করে দেখিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। এই অভিযানে তাদের খরচ অনেক হলিউড ছবির বাজেটের চেয়েও কম।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৩ ১০:৩৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
চাঁদের মাটিতে পা রেখেছে চন্দ্রযান-৩। দীর্ঘ ৪০ দিনের অভিযান সফল হয়েছে বুধবার সন্ধ্যায়। আপামর ভারতবাসী যে দিনটা দেখতে চেয়েছিল, ইসরো তা দেখিয়ে দিয়েছে।
০২১৮
কিন্তু ইসরোর এই সাফল্যের নেপথ্যে চাবিকাঠি কী? রাশিয়া, আমেরিকা, চিন— কেউ যা পারেনি, কোন মন্ত্রে তা করে দেখাল ভারত? খরচই বা এত কম হল কী ভাবে?
০৩১৮
ইসরো সূত্রে খবর, চন্দ্রযান-৩ অভিযানে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার মোট খরচ হয়েছে ৬১৫ কোটি টাকা। চার বছর আগে চন্দ্রযান-২-এর জন্যেও এর চেয়ে বেশি টাকা খরচ করতে হয়েছিল ইসরোকে।
০৪১৮
চন্দ্রযান-২-এর জন্য ৯৭৮ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই অভিযান প্রায় ব্যর্থ হয়। অরবিটর সঠিক ভাবে কাজ করলেও চাঁদের বুকে নামতে ব্যর্থ হয় ল্যান্ডার। এ বারের অভিযানে ৩০০ কোটির বেশি টাকা বাঁচিয়েছেন সংস্থার আধিকারিকেরা।
০৫১৮
চন্দ্রযান-২-এর ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ইসরো যে কঠোর পরিশ্রম করেছে, এই পরিসংখ্যান থেকেই তা স্পষ্ট। তার ফলও মিলেছে হাতেনাতে। এই চার বছরে ইসরোর কাজের দক্ষতা বেড়েছে বলেই কম বাজেটে সফল অভিযান সম্ভব হয়েছে।
০৬১৮
লক্ষণীয়, চন্দ্রযান-৩-এর যা বাজেট, বড় বাজেটের সিনেমা তৈরি করতেও তার চেয়ে বেশি খরচ হয়। হলিউডের একাধিক ছবির বাজেট চন্দ্রযান-৩-এর ধারেকাছে নেই।
০৭১৮
২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ১২,৫৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। এই বরাদ্দের পরিমাণও আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে।
০৮১৮
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, কম খরচে চাঁদে সফল ভাবে চন্দ্রযান পাঠাতে পারার অন্যতম কারণ ইসরোর ‘আত্মনির্ভরশীলতা’। যতটা সম্ভব দেশীয় প্রযুক্তির উপর নির্ভর করা হয়েছে।
০৯১৮
কম খরচে অভিযানের আরও একটি কারণ হিসাবে ভারতে সস্তায় শ্রমিকের বিষয়টি উঠে আসে। আমেরিকা বা রাশিয়ায় যে মেধার জন্য যতটা পরিমাণ টাকা খরচ করতে হয়, ভারতে তা হয় না।
১০১৮
টাকা বাঁচানোর জন্য অবশ্য অন্য পরিকল্পনাও করেছিল ইসরো। তারা অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ পথ বেছে নিয়েছিল চাঁদে পৌঁছনোর জন্য। সেই কারণেই অভিযানটি সম্পূর্ণ হতে এত সময় লেগেছে।
১১১৮
রাশিয়াও চাঁদে মহাকাশযান পাঠাতে উদ্যোগী হয়েছিল। তাদের লুনা-২৫ অভিযান সফল হয়নি। তবে দু’টি অভিযানকে পাশাপাশি রাখলেই ইসরোর সাশ্রয়ী দিকটি চোখে পড়ে।
১২১৮
মূলত, জ্বালানি সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যেই চাঁদে পৌঁছনোর দীর্ঘ পথ বেছে নিয়েছিল ইসরো। তারা চাঁদে যাওয়ার ক্ষেত্রে পৃথিবী এবং চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ বল কাজে লাগিয়েছে।
১৩১৮
সেই কারণেই পৃথিবীর কক্ষপথে প্রথম ১৭ দিন এবং চাঁদের কক্ষপথে পরবর্তী ২৩ দিন কাটিয়েছে চন্দ্রযান-৩। চাইলে আরও কম সময়ের মধ্যে আরও কম পথ অতিক্রম করে মহাকাশযানটিকে চাঁদে পাঠানো যেত। কিন্তু অর্থ সাশ্রয় করতে ইসরো এই কৌশল অবলম্বন করেছিল
১৪১৮
শুধু সাশ্রয় নয়, অর্থ জোগাড়েও কৌশলী মনোভাবের পরিচয় দিয়েছে ইসরো। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান প্রতিমন্ত্রী জীতেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বিভিন্ন বেসরকারি এবং বিদেশি এজেন্সির সঙ্গে কাজ করে প্রায় ২৮৮ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
১৫১৮
চাঁদের মাটিতে পা রাখতে না পারলেও চাঁদের কাছাকাছি অনেক আগেই পৌঁছে গিয়েছিল ভারত। একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ চাঁদের উদ্দেশে আগে থেকে পাঠিয়ে রেখেছিল ইসরো।
১৬১৮
চাঁদকে কেন্দ্র করে ইসরোর মহাকাশ গবেষণা এত দিন কৃত্রিম উপগ্রহ বা টেলিস্কোপেই সীমাবদ্ধ ছিল। চাঁদের চারপাশে ক্যামেরা তাক করে তথ্য সংগ্রহ করছিল তারা। ২০২৩ সালে সেই ধারায় পরিবর্তন এল চন্দ্রযান-৩ এর হাত ধরে।
১৭১৮
চন্দ্রযান-২-এর আংশিক ব্যর্থতার পর সার্বিক ভাবে নানা মহলে ধারণা হয়েছিল, চাঁদে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে পারলেও মহাকাশযান পাঠানোর প্রযুক্তি এবং দক্ষতার দিক থেকে পিছিয়ে আছে ভারত। সে ব্যাপারে তারা আমেরিকা, রাশিয়া বা চিনের সমকক্ষ হতে পারেনি।
১৮১৮
২০২৩ সালে ভারতের সেই ‘বদনাম’ ঘুচিয়ে দিল ইসরো। রাশিয়া যা পারেনি, তা-ই করে দেখাল। চাঁদে মহাকাশযানের সফল অবতরণ করিয়ে বিশ্বের দরবারে উঁচু করে দিল দেশের জাতীয় পতাকা।