Hidden self-portrait of Vincent Van Gogh under another portrait will amuse everyone dgtl
Vincent Van Gogh
Vincent Van Gogh: ভ্যান গঘের আত্মপ্রতিকৃতি! খোঁজ মিলল মৃত্যুর ১৩২ বছর পর
ভিনসেন্ট ভ্যান গঘকে কে না চেনেন। মৃত্যুর পরে বিশ্বজোড়া নাম হলেও জীবনের শেষ কয়েক বছর দারিদ্রে কাটে খ্যাতিনামা এই শিল্পীর।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২২ ১৬:৩৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
ভিনসেন্ট ভ্যান গঘকে কে না চেনেন। নেদারল্যান্ডসের বাসিন্দা ভ্যান গঘ ছিলেন এক জন ‘পোস্ট-ইমপ্রেশনিস্ট’ চিত্রশিল্পী। জীবন্ত অবস্থায় সে রকম নামযশ করতে না পারলেও মৃত্যুর পর তাঁর শিল্পকলার প্রশংসা সারা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর সৃষ্টির জোরে ইতিহাসের অন্যতম বিখ্যাত এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন ভ্যান গঘ।
০২২০
মৃত্যুর পরে বিশ্বজোড়া নাম করলেও জীবনের শেষ কয়েক বছর দারিদ্রে কাটে খ্যাতনামা এই শিল্পীর। ১৮৯০ সালের ২৯ জুলাই হতাশা এবং দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে না পেরে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে আত্মঘাতী হন ভ্যান গঘ।
০৩২০
এক দশকে ভ্যান গঘ দু’হাজারেরও বেশি ছবি এঁকেছিলেন। এগুলির মধ্যে ৮৬০টি তৈলচিত্র। বেশির ভাগই জীবনের শেষ দু’বছরে আঁকা।
০৪২০
এই ছবিগুলির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের এবং ধারার ছবি রয়েছে। তাঁর অনেক চিত্রই আধুনিক চিত্রকলা বলেও গণ্য করা হয়।
০৫২০
সম্প্রতি ভ্যান গঘ সংক্রান্ত এমন এক তথ্য উঠে এল যা, চমকে দেবে বিশ্ববাসীকে। স্কটল্যান্ডের ন্যাশনাল গ্যালারি (এনজিএস)-র বিশেষজ্ঞরা একটি প্রদর্শনীর আগে শিল্পীর আঁকা একটি ক্যানভাসের এক্স-রে করতেই সামনে উঠে এল এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
০৬২০
‘হেড অব পিসেন্ট ওম্যান’ নামক এই ছবির এক্স-রে করতেই দেখা দিল ভ্যান গঘের আঁকা একটি আত্মপ্রতিকৃতি। ছবির পিছনে পিচবোর্ডের ভিতর আঠা দিয়ে এই আত্মপ্রতিকৃতি লুকনো অবস্থায় ছিল।
০৭২০
কোনও বিশেষ কারণে শিল্পী তাঁর আত্মপ্রতিকৃতির কাজ অসম্পূর্ণ রেখেছিলেন বলেই মনে করা হচ্ছে এই ছবি দেখে।
০৮২০
ছবিতে দেখা যাচ্ছে দাড়িওয়ালা ভ্যান গঘের গলায় একটি রুমাল জাতীয় কাপড় আলতো করে বাঁধা এবং মাথায় টুপি। মুখের ডান পাশ স্পষ্ট না হলেও বাম দিক স্পষ্ট ভাবে দৃশ্যমান।
০৯২০
ভ্যান গঘের মৃত্যুর প্রায় ১৫ বছর পর, ‘হেড অব পিসেন্ট ওম্যান’ ছবিটি আমস্টারডামের স্টেডেলিজক মিউজিয়ামের একটি প্রদর্শনীর জন্য ঋণ দেওয়া হয়।
১০২০
এর পর এই ছবি বেশ কয়েক বার হাত পাল্টে ১৯২৩ সালে ইভলিন সেন্ট ক্রোইক্স ফ্লেমিংয়ের দখলে আসে। ইভলিনের ছেলে ইয়ান ফ্লেমিং জেমস বন্ডের স্রষ্টা।
১১২০
১৯৫১ সালে এডিনবরার বিশিষ্ট আইনজীবী আলেকজান্ডার মেটল্যান্ডের সংগ্রহে আসে এই ছবি। ১৯৬০ সালে তিনি এনজিএস-কে এই ছবি দান করেন।
১২২০
নেদারল্যান্ডসের দক্ষিণে নুয়েনেন শহরের স্থানীয় মহিলার আদলেই এই ছবিটি এঁকেছিলেন ভ্যান গঘ । ১৮৮৩ থেকে ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত শিল্পী এই শহরে বাস করতেন।
১৩২০
মনে করা হচ্ছে, ভ্যান গঘ পরে তাঁর কর্মজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এই আত্মপ্রতিকৃতিটি আঁকেন। ফরাসি ইম্প্রেসশনিস্টদের কাজের সঙ্গে পরিচিত হতে প্যারিসে যান শিল্পী। আর সেই সময়কালেই তিনি এই আত্মপ্রতিকৃতি আঁকেন বলেও মনে করা হচ্ছে। ১৯৮৭-৮৮ সালে আরও বেশ কয়েকটি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছিলেন ভ্যান গঘ।
১৪২০
ডাচ (নেদারল্যান্ডসের বাসিন্দা) শিল্পী ভ্যান গঘের বারবার ক্যানভাস কেনার মতো সামর্থ ছিল না। আর সেই কারণেই তিনি একই ক্যানভাস ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ব্যবহার করতেন। একই কারণে তিনি ক্যানভাসের পিছনের দিকও ছবি আঁকার জন্য ব্যবহার করতেন। এ ক্ষেত্রেও হয়তো সাশ্রয়ের কথা চিন্তা করে শিল্পী আত্মপ্রতিকৃতি ঢেকে নতুন ছবি এঁকেছিলেন। এমনটাই মত একাংশের।
১৫২০
অনেকে আবার এ-ও মনে করছেন যে, ‘হেড অব পিসেন্ট ওম্যান’ ছবির ক্যানভাসটি ফ্রেম করার আগে কোনও ভাবে কার্ডবোর্ডে ভ্যান গঘের আত্মপ্রতিকৃতিটি আটকে যায়।
১৬২০
গ্যালারির অন্যতম সংরক্ষক লেসলি স্টিভেনসন জানান, ছবিটি যে দেখবে তারই মনে হবে যেন শিল্পী তাঁর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন। এই ছবি দেখে সকলেই চমকে গিয়েছিলেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
১৭২০
তিনি বলেন, ‘‘যখন আমরা প্রথম বার এই এক্স-রে দেখি তখন সবাই খুব উত্তেজিত হয়ে পড়ি। এটি একটি উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার।’’
১৮২০
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভ্যান গঘের এই আত্মপ্রতিকৃতিটি উদ্ধার করা সম্ভব। তবে আঠা এবং কার্ডবোর্ড সরিয়ে এই ছবি সংরক্ষণ করতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হবে।
১৯২০
এই আত্মপ্রতিকৃতি উদ্ধার করার সময় ‘হেড অব পিসেন্ট ওম্যান’ ছবির যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সেই দিকেও বিশেষ নজর রাখতে হবে। এই পুরো বিষয়টি কী করে নিখুঁত ভাবে পরিচালনা করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা চলছে।
২০২০
খুব শীঘ্রই এডিনবরার একটি প্রদর্শনীতে দর্শকরা প্রথম বারের মতো এক্স-রে করার পর উঠে আসা ভ্যান গঘের এই আত্মপ্রতিকৃতিটি দেখতে পাবেন।