খোলামেলা পোশাক পরাই কি সাহসিকতার পরিচয়? না, সাহসিকতার সঙ্গে অন্য ভাবে পরিচয় করাচ্ছেন হালিমা আদেন। আপাদমস্তক ঢেকে র্যাম্পে হেঁটে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২১ ১১:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
খোলামেলা পোশাক পরাই কি সাহসিকতার পরিচয়? না, সাহসিকতার সঙ্গে অন্য ভাবে পরিচয় করাচ্ছেন হালিমা আদেন। আপাদমস্তক ঢেকে র্যাম্পে হেঁটে।
০২১৬
হালিমা হিজাব পরে র্যাম্পে হাঁটা বিশ্বের প্রথম সুপারমডেল। মডেলিংকে যেখানে খোলামেলা পোশাকের সমার্থক হিসাবে ভাবা হয়, সেই ধারণা ভেঙে ফেলেছেন হালিমা। শুধুমাত্র মুখ এবং হাত-পায়ের তালু অনাবৃত রেখে র্যাম্পে হাঁটেন তিনি।
০৩১৬
মডেলিংয়ের জন্য নিজেকে না বদলে বরং কাজের ধরনকে বদলাতে বিশ্বাসী হালিমা। সেই বিশ্বাসে ভর করে কেরিয়ারের শুরু থেকে নানা হেনস্থার মুখোমুখি হয়েও আজ তিনি সুপারমডেল।
০৪১৬
২০১৬ সালে প্রথম বার বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন হালিমা। মাথায় হিজাব এবং গায়ে বুরকিনি চাপিয়ে ‘মিস মিনেসোটা ইউএসএ’ প্রতিযোগিতায় যখন র্যাম্পে হেঁটে আসছিলেন তিনি, তাঁকে দেখে চমকে গিয়েছিলেন বিচারকরা।
০৫১৬
খোলামেলা মডেলদের ভিড়ে সেই প্রথম সর্বাঙ্গ ঢাকা মডেল দেখেছিলেন বিচারকেরা। সেই প্রথম মডেলিং ইন্ডাস্ট্রির পোশাক-ধারণায় হাতুড়ির ঘা পড়েছিল। না, ওই এক দিনেই ইন্ডাস্ট্রির মানসিকতা বদলাতে পারেননি হালিমা কিন্তু শুরুটা করে ফেলেছিলেন।
০৬১৬
কেনিয়ার শরণার্থী শিবিরে জন্ম হালিমার। মা-বাবা দু’জনেই সোমালিয়ার নাগরিক। ছ’বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে আমেরিকায় চলে এসেছিলেন হালিমা।
০৭১৬
মিনেসোটার সেন্ট ক্লাউড স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। তার পর সেন্ট ক্লাউড স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছেন।
০৮১৬
২০১৬-র ‘মিস মিনেসোটা ইউএসএ’-তে মডেল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সারা বিশ্বের নজর কেড়ে নিয়েছিলেন। এর পরই একটি মডেলিং সংস্থা তাঁকে তিন বছরের চুক্তিতে সই করিয়ে নেয়।
০৯১৬
মডেলিং ইন্ডাস্ট্রির দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর যে পদক্ষেপ তিনি করেছিলেন ইতিমধ্যেই তা বেশ ফল দিতে শুরু করে দিয়েছিল। কখনও নিউ ইয়র্ক ফ্যাশন উইক, কখনও মিলান ফ্যাশন উইক, কখনও কোনও আন্তর্জাতিক স্তরের ম্যাগজিনের জন্য ফটোশ্যুট কিংবা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী সংস্থার হয়ে মডেলিং- এই ইন্ডাস্ট্রিতে ক্রমশ তাঁর নাম হচ্ছিল।
১০১৬
২০১৮ সালে ইউনিসেফ-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হন। ইউনিসেফ-এর সঙ্গে শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন।
১১১৬
কিন্তু ২০২০ সালে হালিমার একটি ইনস্টাগ্রাম স্টোরি বিশ্বকে ফের চমকে দেয়। ইনস্টাগ্রাম স্টোরির কয়েকটি সিরিজে তিনি মডেলিং দুনিয়াকে বিদায় জানানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন।
১২১৬
তাতে হালিমা যা বলতে চেয়েছিলেন তার সারমর্ম হল, তিনি অনেক চেষ্টা করলেও ইন্ডাস্ট্রির মানসিকতা বদলাতে পারেননি। তাই বারবারই তাঁকে হেনস্থা হতে হয়েছে।
১৩১৬
তিনি আর যা লিখেছিলেন তা হল, মডেলিং মানে নতুন কিছুকে গ্রহণ করা, কোনও কিছুর সঙ্গে আপস করা নয়। যিনি যে ভাবে স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন, তিনি সে ভাবেই নিজেকে উপস্থাপন করবেন।
১৪১৬
হালিমা চেয়েছিলেন তাঁর মতো আরও অনেক মহিলা যাঁরা শুধুমাত্র খোলামেলা পোশাকের কথা বিবেচনা করে মডেলিংয়ে আসতে পারছিলেন না, তাঁদের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে।
১৫১৬
মডেলিংয়ে পা রাখার পরই যে ভাবে অতি উৎসাহের সঙ্গে নানা স্তর থেকে তিনি প্রস্তাব পাচ্ছিলেন, তাতে দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছিলেন তিনি ক্রমশ। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে তত টের পাচ্ছিলেন বহির্বিশ্বের অগ্রগতির সঙ্গে মানসিকতা বদলের সামঞ্জস্যের অভাব।
১৬১৬
প্রথম দিন থেকে আপস করতে শেখেননি হালিমা। ইনস্টাগ্রামে ইস্তফার কথা ঘোষণা করলেও র্যাম্পের লড়াই এখনও জারি রেখেছেন তিনি।