Ex army doctor of Odisha chopped his wife into 300 pieces after killing dgtl
Murder
Murder: রাগের বশে স্ত্রীকে খুন! দেহের ৩০০ টুকরো করে টিফিন বাক্সে লুকিয়ে রেখেছিল এই চিকিৎসক
অভিযুক্তের নাম সোমনাথ পারিদা। ভুবনেশ্বরে বেসরকারি হাসপাতালের পরামর্শদাতা চিকিৎসক হিসাবেও কাজ করেছিল সে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২২ ১৩:৫৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোমনাথ পারিদা। চিকিৎসক হিসাবে কর্মজীবনে চিরকাল সাফল্যের শিখরে, ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও)-এর সঙ্গেও যুক্ত ছিল সোমনাথ।
০২১৬
১৯৯২ সালে অবসরের পরেও পরামর্শদাতা চিকিৎসক হিসেবে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কাজও করেছে সে। কিন্তু কর্মজীবনে সফল থাকা এই চিকিৎসক এমন এক নৃশংস অপরাধ ঘটায়, যা পুলিশ আধিকারিকদেরও চমকে দিয়েছিল।
০৩১৬
২০০৩ সাল। ৭২ বছর বয়সি সোমনাথ তখন ভুবনেশ্বরের এক বেসরকারি হাসপাতালে পরামর্শদাতা চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত। বাড়িতে স্ত্রী ঊষশী পারিদা ছাড়া আর কেউ থাকেন না। ছেলেমেয়ে দু’জনেই বিদেশে।
০৪১৬
ছেলে-মেয়ে টেলিফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন বাবা-মায়ের সঙ্গে। কিন্তু হঠাৎ পারিদা দম্পতি তাঁদের ছেলেমেয়েদের ফোন ধরা বন্ধ করে দিলেন। কিছু দিন এই ভাবে চলার পর সোমনাথের ছেলে তাঁর আত্মীয়দের খবর দেন।
০৫১৬
বাবা-মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে, না কি কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে, এই নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তাঁদের ছেলে। শেষ পর্যন্ত রঞ্জন সমল (সম্পর্কে ঊষশীর ভাই) ২২ জুন সোমনাথের বাড়িতে যান।
০৬১৬
বাড়ির সামনে যাওয়ার পরেই অদ্ভুত পচা গন্ধ তাঁর নাকে আসতে থাকে। সন্দেহ হওয়ায় তিনি বাড়ির জানালা দিয়ে ঘরের ভিতর উঁকি মারেন। ইতিমধ্যে পুলিশকেও খবর দেন তিনি।
০৭১৬
পুলিশ আসার পর ঘরে তল্লাশি করার পর ঘরের চার দিকে স্টিলের টিফিন বাক্স ছড়িয়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পায়। বাক্স খুলেই যা দেখেন তা দেখে তাদের হাড়হিম হয়ে যায়। কাঁচা মাংসের টুকরো। তবে, তা কোনও পশুর নয়, মানুষের।
০৮১৬
শুধু টিফিন বাক্সের ভিতরেই নয়, তাঁদের ঘর থেকে একটি লোহার ট্রাঙ্কও খুঁজে পায় পুলিশ। সেই ট্রাঙ্কের ভিতরেও মৃতদেহের টুকরো। পরিস্থিতি দেখে সোমনাথকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করে পুলিশ।
০৯১৬
সোমনাথ জানায়, স্ত্রী দেওয়ালে মাথা ঠুকে আত্মহত্যা করেছে। শেষকৃত্যের জন্যে তাঁকে শির্দিতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সোমনাথ। দেহ নিয়ে শির্দি যাওয়া সমস্যা, খরচও বেশি তাই ঘরেই স্ত্রীর মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে সে।
১০১৬
ট্রাঙ্ক থেকে মৃতদেহের টুকরো ছাড়াও ধারালো অস্ত্র, চিকিৎসা করার সরঞ্জাম, ছুরি, স্ক্যালপেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থও উদ্ধার করা হয়। ভুবনেশ্বরের পুলিশ কমিশনার সন্তোষ বালা জানান, আত্মহত্যার ঘটনা পুরোপুরিই সাজানো। তদন্তে তার প্রমাণ মেলেনি।
১১১৬
তবে, ফরেনসিক পরীক্ষার ফলাফল আসার পর সত্যি ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। সোমনাথের প্রতিবেশীদের অভিযোগ, মাত্রাতিরিক্ত রাগ ও মেজাজ ছিল সোমনাথের। প্রায় প্রতি দিনই ঊষশীর সঙ্গে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে রাগারাগি করত।
১২১৬
জুন মাসের ৩ তারিখ নাগাদ রাগের বশেই একটি স্টিলের টর্চ দিয়ে আঘাত করে ঊষশীকে প্রাণে মেরে ফেলে সোমনাথ। তার পর প্রমাণ লোপাট করতে মৃতদেহ টুকরো করে টিফিন বাক্সের ভিতরে ভরতে থাকে।
১৩১৬
এই টুকরোগুলি যেন পচে যায়, তার জন্য রাসায়নিক পদার্থে ডুবিয়ে রেখেছিল সে। কিন্তু মৃতদেহের কিছু অংশ রাসায়নিকে ডোবানো হলেও বাকি টুকরোগুলি ট্রাঙ্কের ভিতর রেখেছিল সোমনাথ।
১৪১৬
প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁরা আরও জানান, যে দিন এই ঘটনাটি ঘটে, তার পরেও হাসপাতালে নিয়মিত সোমনাথকে কাজ করতেও যেতে দেখেছেন তাঁরা। কেউ যাতে সন্দেহ না করে, তার জন্য কোনও চেষ্টা করতেই বাদ রাখেনি সে।
১৫১৬
সকল প্রমাণ হাতে আসার পর সোমনাথকে হেফাজতে নেয় ভুবনেশ্বর পুলিশ। ঘটনার প্রায় ছ’বছর পর আদালত সোমনাথের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।
১৬১৬
শুধু তা-ই নয়, ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও দিতে হয় সোমনাথকে। এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড শুধু মাত্র ভুবনেশ্বরকেই নয়, গোটা দেশকেই কাঁপিয়ে তুলেছিল।