SAREGAMAPA Champion Ankita Bhattacharya Aims to be a Play Back Singer dgtl
SAREGAMAPA
বাড়ির বাইরে ঝাঁ চকচকে গাড়িটা তারই, এখনও বিশ্বাস হয় না অঙ্কিতার
গান শেখার জন্য সব রকম দূরত্ব পাড়ি দিতে প্রস্তুত এই কিশোরী। ভালবাসে সব রকমের গান করতে। কোনও বাছবিচার না করে যে কোনও ভাষার যে কোনও গান গাওয়াতেই তার আনন্দ।
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৯ ১৬:৫৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
কেউ অটোগ্রাফ চাইলে বেশ অপ্রস্তুত লাগে। সই না হয় করে দেওয়া গেল। কিন্তু সঙ্গে শুভেচ্ছাবার্তায় কী লিখবে? ভেবেই পায় না গোবরডাঙার ইছাপুর হাই স্কুলের ক্লাস টুয়েলভের ছাত্রীটি। যেখানেই যাচ্ছে, তাকে ঘিরে সই-শিকারিদের ভিড়। ‘সারেগামাপা’ চ্যাম্পিয়ন অঙ্কিতা ভট্টাচার্য এখন প্রায় সেলেব্রিটি। নতুন কাজের সুযোগের পাশাপাশি এসেই চলেছে শুভেচ্ছার স্রোত।
০২১৪
পরিবারে সঙ্গীতচর্চার ধারা ছিলই। অঙ্কিতার ঠাকুমা, মা এবং বাবা গান করতে পারেন। মায়ের কাছেই গানে হাতেখড়ি অঙ্কিতার। সেই চার-পাঁচ বছর বয়স থেকে শুরু অনুশীলন। সেই অভ্যাস এখনও বজায় রয়েছে পূর্ণ মাত্রায়। প্রতি দিন দু’ঘণ্টা ধরে গান অনুশীলন চাই-ই-চাই অঙ্কিতার।
০৩১৪
পরিবারের বাইরে অঙ্কিতার প্রথম সঙ্গীতশিক্ষক রাধাপদ পাল। তাঁর কাছে এক বছর ধ্রুপদী সঙ্গীতচর্চা ও অনুশীলন । গত সাত বছর সে রথীজিৎ ভট্টাচার্যের ছাত্রী। সব রকমের গান যাতে সহজে গাইতে পারে, তার জন্য ভোকাল ট্রেনিং চলে রথীজিতের কাছে।
০৪১৪
গান শেখার জন্য সব রকম দূরত্ব পাড়ি দিতে প্রস্তুত এই কিশোরী। ভালবাসে সব রকমের গান করতে। কোনও বাছবিচার না করে যে কোনও ভাষার যে কোনও গান গাওয়াতেই তার আনন্দ।
০৫১৪
সঙ্গীতচর্চা ও অনুশীলনের জন্য অনেক দিন ধরেই অঙ্কিতা অনিয়মিত স্কুলে। তার পড়াশোনায় যাতে সমস্যা না হয়, সে দিকে সজাগ দৃষ্টি শিক্ষকদেরও। তাঁরা বলছেন, অঙ্কিতা যেন সঙ্গীতচর্চাকে গুরুত্ব দিতে পারে, সে দিকে সব রকম সাহায্য করা হবে।
০৬১৪
সেই সাহায্য যে শিক্ষকদের তরফে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এসেছে, সে কথা অকুণ্ঠ ভাবে স্বীকার করে অঙ্কিতাও। প্রধান শিক্ষক-সহ স্কুলের সব শিক্ষকের কাছে কৃতজ্ঞ ‘সারেগামাপা’-জয়ী সপ্তদশী। খেতাব জয়ের পরে স্কুলে জমজমাট সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে তাকে। অঙ্কিতার মনে হচ্ছিল, যেন ঘোরের মধ্যে আছে।
০৭১৪
ঘোরের মতো মনে হয়েছিল ‘সারেগামাপা’-র পুরো পর্বটাই। অডিশন থেকে মেগা ফিনালে। প্রায় এক বছর ধরে চলেছে এই প্রতিযোগিতা। প্রতি বারই মঞ্চে ওঠার আগে পা কাঁপত অঙ্কিতার। মনে হত, যদি গাইতে গাইতে গানের কথা সব ভুলে যাই!
০৮১৪
চূড়ান্ত পর্বের আগে টেনশন আর নার্ভাসনেস ছিল তুঙ্গে। যিশু সেনগুপ্তের মুখে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজের নাম শুনেও নিজের দু’কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিল না অঙ্কিতা।
০৯১৪
অঙ্কিতার এখনও বিশ্বাস হয় না বাড়ির সামনে ঝাঁ চকচকে গাড়িটা দেখে। এটা তার পুরস্কার! দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ছোট ভাই তো বলেই দিয়েছে, দিদির নয়, ওই গাড়িটা আসলে তার!
১০১৪
গাড়িটা নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়নি এখনও। ভাবলেই ভয় করে, যদি গাড়িতে আঁচড় লেগে যায়!
১১১৪
গানের পাশাপাশি অঙ্কিতার ভাল লাগে নাচতে আর অভিনয় করতে। ওই দু’টি শাখায় পুরস্কারও পেয়েছে সে। এখনও বড় পর্দায় নিজের লিপে নিজের গান, এত দূর ভাবতে পারেনি অঙ্কিতা। তবে একটা স্বপ্ন কিন্তু দেখে সে। তা হল, প্রিয় অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের লিপে নিজের গান। নায়কদের মধ্যে অঙ্কিতার প্রিয় প্রভাস।
১২১৪
শিল্পীদের মধ্যে অঙ্কিতার আইডল আশা ভোঁসলে। পাশাপাশি, সে ভক্ত মান্না দে, কিশোর কুমার, শ্রেয়া ঘোষাল, সোনু নিগম আর অরিজিৎ সিংহের গানের। আরও দু’টি জিনিসের বড় ভক্ত সে। মায়ের হাতের মিক্সড ফ্রায়েড রাইস আর চিলি চিকেন। সাফল্য আর ব্যস্ততার ফাঁকে অবসর দুর্লভ। কিন্তু সময় পেলেই ইচ্ছে করে মায়ের তৈরি চিনা খাবার খেতে।
১৩১৪
‘সারেগামাপা’-য় তার পারফরম্যান্সের মধ্যে অঙ্কিতার নিজের পছন্দ ‘এক চতুর নার’ আর ‘সাওয়ারিয়াঁ’-র মতো গানগুলো।
১৪১৪
সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ আসছে নতুন সুযোগ। রেকর্ডিং এবং অনুষ্ঠান, দু’য়েরই। অঙ্কিতা অবশ্য ভেবেচিন্তে পা ফেলারই পক্ষপাতী। অনুষ্ঠান থাকবে। কিন্তু পাখির চোখ অবশ্যই ছবিতে প্লে ব্যাক। তবে সব কিছু ছাপিয়ে অঙ্কিতার লক্ষ্য নিরবচ্ছিন্ন সঙ্গীতসাধনা।