Less known and Interesting Facts about Actress Marilyn Monroe dgtl
Hollywood
৩৬-এ রহস্যমৃত্যু, অনেক প্রেম, অনাথাশ্রমে বড় হওয়া এই নায়িকায় বুঁদ ছিল তামাম বিশ্ব
বলা হয়, ইন্টেলেকচুয়াল পুরুষদের প্রতি দুর্বলতা ছিল মেরিলিনের। রন্ধনে অপটু এই সুন্দরী ভালবাসতেন বই পড়তে। তাঁর বইয়ের সংগ্রহ ছিল ঈর্ষণীয়। একনিষ্ঠ পাঠক হলেও মেরিলিন কিন্তু চিত্রনাট্যের পাঠ ভাল মনে রাখতে পারতেন না। কিন্তু অসামান্য গ্ল্যামার আর অভিনয়ের কাছে ম্লান হয়ে গিয়েছিল তাঁর বাকি সব দুর্বলতা।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ১৪:০২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
১৯৬২ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে যদি তাঁর রহস্যমৃত্যু না হত, হলিউডের ইতিহাস অন্য ভাবে লেখা হত। তিনি বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম গ্ল্যামারাস সেক্স সিম্বল মেরিলিন মনরো। জীবদ্দশায় যিনি কোনও দিন জানতে পারেননি তাঁর পিতৃপরিচয়।
০২১৬
মেরিলিনের জন্ম ১৯২৬ সালের ১ জুন। তাঁর জন্মগত নাম ছিল নোর্মা জিন মর্টেনসন। পরে তিনি ‘বেকার’ পদবী নিয়েছিলেন। তাঁর শৈশব কেটেছে বিভিন্ন অনাথাশ্রম, সরকারি হোম এবং পারিবারিক বন্ধুদের আশ্রয়ে। পিতৃপরিচয়হীন নোর্মার মা ছিলেন মনোরোগী। সিঙ্গল মাদার হয়ে মেয়েকে বড় করার মতো অবস্থায় তিনি ছিলেন না।
০৩১৬
পঞ্চদশী নোর্মা তখন থাকছিলেন পারিবারিক বন্ধু গ্রেস গোডার্ডদের পরিবারে। কিন্তু গোডার্ড পরিবারকে হঠাৎ ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় চলে যেতে হল। নোর্মাকে তাঁরা নিয়ে যেতে পারলেন না। নোর্মার সামনে তখন দুটো উপায়। হয় অনাথাশ্রমে ফিরে যাও, নয় তো বিয়ে করো।
০৪১৬
নোর্মা কিছুতেই অনাথাশ্রমে ফিরতে চাইলেন না। ষোলো বছর বয়স পূর্তির সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিয়ে হল কুড়ি বছরের জেমস ডুগার্টির সঙ্গে। বিয়ের দু’বছর পরে তাঁর স্বামীকে জাহাজের চাকরিতে চলে যেতে হল প্রশান্ত মহাসাগরে। মেরিলিন চলে গেলেন ক্যালিফোর্নিয়া, তাঁর শ্বশুর শ্বাশুড়ির সঙ্গে থাকতে।
০৫১৬
নতুন জায়গায় গিয়ে একটি ফ্যাক্টরিতে কাজ নিলেন মেরিলিন। সেখানে একদিন ফোটোশুট করতে এলেন ডেভিড কোনোভার। মার্কিন বায়ুসেনার তরফে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল। কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের মনোবল বাড়াতে মহিলা কর্মীদের ছবি তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে যে জন্য ছবি তোলা, সে উদ্দেশে মেরিলিনের একটা ছবিও ব্যবহৃত হয়নি।
০৬১৬
কিন্তু এর ফলেই তাঁর সামনে খুলে গিয়েছিল মডেলিং-এর দরজা । কয়েক দিনের মধ্যে তিনি চাকরি ছেড়ে কোনোভারের জন্য মডেলিং শুরু করলেন। মডেলিং-এর সময় তিনি নাম নিতেন জিন নর্ম্যান। এর মধ্যেই এল ফিল্মের সুযোগ। তত দিনে কোঁকড়া চুল স্ট্রেট করিয়েছেন তিনি। বাদামি চুলে এসেছে সোনালি রং।
০৭১৬
টোয়েনটিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স-এর সঙ্গে তাঁর চুক্তি হল। নতুন নাম হল ‘মেরিলিন মনরো’। সংস্থার কর্তা বেন লিয়নই বাছলেন নাম। ‘মেরিলিন’ এসেছিল ‘মেরিলিন মিলার’ থেকে। মেরিলিন মিলার ছিলেন অকালপ্রয়াত বিগত দিনের ব্রডওয়ে তারকা। ‘মনরো’ পদবী বেছে নিয়েছিলেন মেরিলিন নিজেই। ওটা ছিল তাঁর মায়ের অবিবাহিত অবস্থার পদবী। পরে পর্দার নামকেই অফিশিয়াল নেম করে নিয়েছিলেন।
০৮১৬
কিন্তু স্ত্রীর কেরিয়ারে বেঁকে বসলেন স্বামী ডুগার্টি। কেরিয়ার আর স্বামীর মধ্যে মেরিলিন বেছে নিলেন প্রথমটাই। ভেঙে গেল তাঁর প্রথম বিয়ে। ব্যক্তিগত জীবনে ফাটল এলেও কাজের জায়গায় তিনি তখন মধ্যগগনে। ‘লেডিস অব দ্য কোরাস’, ‘এ টিকিট টু টোমাহক’, ‘অল অ্যাবাউট ইভ’, ‘দ্য ফায়ারবল’, ‘রাইট ক্রস’, ‘লভ নেস্ট’, ‘লেটস মেক ইট লিগ্যাল’, ‘নায়াগ্রা’ একের পর এক হিট তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে।
০৯১৬
নিজের সময়ের উজ্জ্বল তারকা হলেও তাঁর পারিশ্রামিক তখনও সে রকম বাড়েনি টোয়েনটিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্সে। তাঁর থেকে অনেকেই তখন বেশি পারিশ্রমিক পেতেন সেখানে। এই নিয়ে দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছিল। মেরিলিনের ব্যক্তিগত জীবনও তখন উথালপাথাল।
১০১৬
এক সঙ্গে ডেট করছেন অভিনেতা মার্লন ব্র্যান্ডো এবং নাট্যকার আর্থার মিলারের সঙ্গে। আবার মেরিলিনের জন্যই তখন ভাঙতে বসেছে বেসবল খেলোয়াড় ডি ম্যাগিয়ো-র সংসার। এ দিকে কমিউনিজমের সঙ্গে যু্ক্ত থাকার অভিযোগে ম্যাগিয়োর উপরে নজর রেখেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।
১১১৬
মেরিলিনকে সতর্ক করল টোয়েনটিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স। বলা হল, সম্পর্ক ভেঙে ফেলতে। কিন্তু মেরিলিন সরে আসতে চাননি প্রেম থেকে। শেষ অবধি ১৯৫৪ সালে বিয়ে করেন ডি ম্যাগিয়োকে। একই সময়ে টোয়েনটিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্সের সঙ্গে মেরিলিনের চুক্তিও আগের থেকে ভাল হয়। ছবি পিছু তাঁর পারিশ্রমিক স্থির হয় এক লক্ষ ডলার।
১২১৬
কিন্তু ডি ম্যাগিয়োর সঙ্গে বিয়ে স্থায়ী হল মাত্র আট মাস। ১৯৫৬ সালে মেরিলিন বিয়ে করলেন নাট্যকার আর্থার মিলারকে। মিলার ছিলেন ইহুদি। তাঁকে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত হন মেরিলিনও। ফলে মিশরে তাঁর সব ছবি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।
১৩১৬
চারের দশকের শেষ থেকে পাঁচের দশক অবধি হলিউড রাজত্ব করেছিলেন মেরিলিন মনরো। কিন্তু ছয়ের দশক তাঁর কোনও দিক থেকেই ভাল ছিল না। ১৯৬১ সালে ভেঙে যায় তাঁর তৃতীয় বিয়ে। এ দিকে হলিউডি কেরিয়ারেও শুরু হয় পড়ন্ত বেলা।
১৪১৬
১৯৬২-র ৫ অগস্ট নিজের ঘরে মেরিলিন মনরোকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। তাঁর রক্তের নমুনায় বিষ ছিল। আপাতভাবে তাঁর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেই চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু অনেকেই এর সঙ্গে প্রয়াত প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক জড়িত বলে মনে করেন। তবে এই দ্বন্দ্বের উপর থেকে রহস্যের পর্দা কোনও দিনই ওঠেনি।
১৫১৬
বলা হয়, ইন্টেলেকচুয়াল পুরুষদের প্রতি দুর্বলতা ছিল মেরিলিনের। রন্ধনে অপটু এই সুন্দরী ভালবাসতেন বই পড়তে। তাঁর বইয়ের সংগ্রহ ছিল ঈর্ষণীয়। একনিষ্ঠ পাঠক হলেও মেরিলিন কিন্তু চিত্রনাট্যের পাঠ ভাল মনে রাখতে পারতেন না। কিন্তু অসামান্য গ্ল্যামার আর অভিনয়ের কাছে ম্লান হয়ে গিয়েছিল তাঁর বাকি সব দুর্বলতা।
১৬১৬
কমেডি ও ট্র্যাজিক, দু’ধরনের ছবিতে সমদক্ষতায় অভিনয়ের জন্য তাঁকে তুলনা করা হয় স্বয়ং চার্লি চ্যাপলিনের সঙ্গে।