ক্রিকেট খেলা শিখবেন বলে এসেছিলেন সে কালের বম্বে, আজকের মুম্বই শহরে। কিন্তু শেষে মন মজল আরবসাগরের তীরের অন্য আকর্ষণে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২০ ১২:৪৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
ইচ্ছে ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। হলেন হিন্দি সিনেমার খলনায়ক। কাটা কাটা মুখে চাপ দাড়ি। এটাই ছিল ম্যাক মোহনের পরিচিতি। আলাদা করে মেক আপের ভূমিকা বিশেষ ছিল না।
০২১৫
অবিভক্ত ভারতের করাচিতে জন্ম ১৯৩৮ সালের ২৪ এপ্রিল। জন্মগত নাম ছিল মোহন মাকিজানি। ক্রিকেট খেলা শিখবেন বলে এসেছিলেন সে কালের বম্বে, আজকের মুম্বই শহরে। কিন্তু শেষে মন মজল আরবসাগরের তীরের অন্য আকর্ষণে।
০৩১৫
অবিভক্ত ভারতের করাচিতে জন্ম ১৯৩৮ সালের ২৪ এপ্রিল। জন্মগত নাম ছিল মোহন মাকিজানি। ক্রিকেট খেলা শিখবেন বলে এসেছিলেন সে কালের বম্বে, আজকের মুম্বই শহরে। কিন্তু শেষে মন মজল আরবসাগরের তীরের অন্য আকর্ষণে।
০৪১৫
তবে প্রথমে অভিনেতা হিসেবে নয়। তিনি ছিলেন পরিচালক চেতন আনন্দের সহকারী। অভিনেতা হিসেবে মোহনকে প্রথম দেখা যায় ১৯৬৪ সালে, ‘হকিকত’ ছবিতে।
০৫১৫
অভিনেতা পরিচয়ের পাশাপাশি পেলেন নতুন নামও। মোহন মাকিজানির পরিবর্তে এ বার তাঁর নাম হল ম্যাকমোহন। এই পরিচয়ই তিনি ব্যবহার করেছিলেন জীবনের বাকি পর্বে।
০৬১৫
বলিউডের তথাকথিত নায়কসুলভ চেহারা তাঁর ছিল না। ম্যাকমোহন তাই খলনায়ক হিসেবেই নিজের জায়গা খুঁজে নেন ইন্ডাস্ট্রিতে। সে কাজও খুব সহজ ছিল না। প্রাণ, আমজাদ খান, প্রেম চোপড়ার মতো বলিষ্ঠ অভিনেতাদের সঙ্গে তাঁকে পাল্লা দিতে হয়েছিল।
০৭১৫
বেশির ভাগ ছবিতেই তাঁকে দেখা যেত মূল খলনায়কের সহকারী হিসেবে। চিত্রনাট্যে যেটুকু সুযোগ পেয়েছেন, কাজে লাগানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। তাতে সফলও হয়েছেন। বলিষ্ঠ অভিনেতাদের পাশেও পর্দায় তিনি দর্শকদের দৃষ্টি কেড়ে নিতে পেরেছিলেন।
০৮১৫
ম্যাক মোহনের ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য হল ‘চা চা চা’, ‘সুহানা সফর’, ‘অভিনেত্রী’, ‘মেমসাব’, ‘মনমন্দির’, ‘হীরা পান্না’, ‘জঞ্জীর’, ‘বদলা’, ‘আনহোনি’, ‘মজবুর’, ‘হেরা ফেরি’, ‘খুন পসিনা’, ‘লহু কে দো রং’, ‘টক্কর’, ‘দোস্তানা’, ‘কুরবানি’, ‘লাল বাদশা’ এবং ‘শোলে’। হিন্দি সিনেমা যত দিন থাকবে, তত দিন দর্শকদের মনে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে গব্বর সিংহের সঙ্গে সাম্বার কথোপকথন।
০৯১৫
তাঁকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল ২০১০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অতিথি তুম কব যাওগে’ ছবিতে। হিন্দির পাশাপাশি তিনি অভিনয় করেছেন ভোজপুরি, গুজরাতি, মরাঠি, পঞ্জাবি, হরিয়ানভি এবং সিন্ধি ছবিতে।
১০১৫
তাঁর নিজের নাম অনুসারে বহু ছবিতেই তাঁর অভিনীত চরিত্রের নাম ‘ম্যাক’। এই রীতি বলিউডে সচরাচর দেখা যায় না।
১১১৫
অভিনয়ের অবসরে ম্যাক মোহনের নেশা ছিল বই পড়া। খুঁটিয়ে পড়তেন একাধিক সংবাদপত্র। লেখার পাশাপাশি বলতেন ঝরঝরে আর সাবলীল ইংরেজি। বিখ্যাত পত্রিকা ‘রিডার্স ডাইজেস্ট’-এর একনিষ্ঠ পাঠক ছিলেন তিনি।
১২১৫
তাঁর স্ত্রী মিনি ছিলেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। বাবার চিকিৎসা উপলক্ষে তাঁর সঙ্গে ম্যাক মোহনের আলাপ হয়েছিল। তাঁরা বিয়ে করেন ১৯৮৬ সালে।
১৩১৫
তাঁদের দুই মেয়ে মঞ্জরী এবং বিনতি। ছেলের নাম বিক্রান্ত। বড় মেয়ে মঞ্জরী লেখক, পরিচালক ও প্রযোজক। তাঁর তৈরি শর্টফিল্ম পুরস্কৃতও হয়েছে।
১৪১৫
২০১০ সালের ১০ মে ৭২ বছর বয়সে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন ম্যাক মোহন।
১৫১৫
যাঁর সঙ্গে ম্যাক মোহনের দ্বৈরথ ছিল ছবিতে সবথেকে উপভোগ্য, সেই বিগ-বি-ও উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্মরণসভায়। ছিলেন তাঁর সঙ্গে কাজ করা স্পটবয়রাও। পর্দার খলনায়ক ভাবমূর্তিকে ছাপিয়ে এতটাই ছিল অভিনেতার ম্যাক মোহনের বিস্তার।