শি জিনপিংয়ের দেশের কাছে এই মুহূর্তে যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা ৩৪০টি। প্রতিটির ক্ষেত্রেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। চিন বিশ্বের সবচেয়ে বড় নৌবহরের অধিকারী।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:২০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
স্থলপথের পাশাপাশি জলপথেও শক্তিবৃদ্ধি করছে চিন। তারা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নৌবহরের অধিকারী। নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করে তোলার পরেই দূরের সমুদ্রে নজর দিয়েছে বেজিং।
০২১৯
শি জিনপিংয়ের দেশের কাছে এই মুহূর্তে যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা ৩৪০টি। প্রতিটির ক্ষেত্রেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। সম্প্রতি, চিনের নৌবহরকে ‘গ্রিন ওয়াটার নেভি’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
০৩১৯
‘গ্রিন ওয়াটার’ বা ‘সবুজ’ জল কী? কোনও দেশের উপকূলের নিকটবর্তী অংশের সমুদ্রের জলকে ‘গ্রিন ওয়াটার’ বলা হয়ে থাকে। ‘গ্রিন ওয়াটার নেভি’ কেবল নিজ দেশের সমুদ্র সংলগ্ন এলাকাতেই কাজ করতে পারে।
০৪১৯
সমুদ্রের রাজনীতিতে ‘গ্রিন ওয়াটার’-এর পাশাপাশি রয়েছে ‘ব্লু ওয়াটার’ও। ‘নীল’ জল বলতে বোঝায় কোনও দেশের সীমানা থেকে দূরবর্তী সমুদ্র। অর্থাৎ, অন্য দেশের সমুদ্রের উপর প্রভাব খাটাতে পারলে নৌবহরকে ‘ব্লু ওয়াটার নেভি’র তকমা দেওয়া হয়।
০৫১৯
বিশ্বের সবচেয়ে বড় নৌবাহিনী নিয়ে চিন আপাতত ‘সবুজ’ থাকলেও আগামী দিনে তারা ‘নীল’ জলের দিকে হাত বাড়াবে বলে খবর। সেই অনুযায়ী শুরু হয়েছে তোড়জোড়ও।
০৬১৯
গত কয়েক বছরে চিন যে ভাবে তৎপরতার সঙ্গে নৌবাহিনীর কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তাতে তাদের আসল উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ দানা বাঁধছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরাও তা নিয়ে চিন্তিত।
০৭১৯
কী করেছে চিন? গত কয়েক বছরে দেখা গিয়েছে, তারা বড়সড় ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী জাহাজ তৈরি করেছে। এ ছাড়া, জল-স্থল উভয় ক্ষেত্রেই কার্যকর শক্তিশালী জাহাজ এবং বিমান তৈরি করতে দেখা গিয়েছে তাদের।
০৮১৯
চিনের তৈরি প্রায় সব জাহাজই বেজিং থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরের জলে ভাসতে সক্ষম। যুদ্ধের ক্ষেত্রেও এই জাহাজ দূরের জলে অধিক কার্যকর।
০৯১৯
এই ‘নীল’ জলের জাহাজগুলিতে জ্বালানির চাহিদা মেটাতে দূরের কোনও বন্দরে সেগুলিকে নোঙর করানো প্রয়োজন। তাই অন্য দেশের উপকূলে চিন প্রাধান্য বিস্তার করতে আগ্রহী।
১০১৯
অন্যান্য দেশের বন্দরে আধিপত্য কায়েম করতে চাইছে বেজিং। এ ক্ষেত্রে, প্রাথমিক ভাবে তাদের নজরে রয়েছে আফ্রিকা মহাদেশের পূর্ব উপকূল। অতলান্তিক মহাসাগরের বন্দরগুলিতে ঘাঁটি তৈরি করতে চায় চিন।
১১১৯
এ ছাড়া, আমেরিকার ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসিস-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কম্বোডিয়াতেও নৌঘাঁটি তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে চিন।
১২১৯
বর্তমানে চিনের পিপ্লস লিবারেশন আর্মির একটি মাত্র বিদেশি নৌঘাঁটি রয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, কূটনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশের বন্দরেই বসতে পারে ‘ড্রাগনের থাবা’।
১৩১৯
বিদেশের নৌঘাঁটিগুলিকে কী কাজে লাগাবে চিন? শুধু অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজে জ্বালানি ভর্তি করতেই নয়, অন্য ভূমিকাও থাকবে এদের। এই ঘাঁটি থেকে ভবিষ্যতে চিন বিদেশে সামরিক অভিযানের রসদ সংগ্রহ করতে পারে।
১৪১৯
বিদেশি নৌঘাঁটি ব্যবহার করেই অন্য দেশগুলির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে চিন। জিনপিংয়ের সেই পরিকল্পনাও রয়েছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। এ ছাড়া, দূরের জাহাজ অভিযানে এই নৌঘাঁটিগুলি ‘নৌ স্টেশন’ হিসাবে কাজ করবে।
১৫১৯
বর্তমানে চিনের একমাত্র বিদেশি নৌঘাঁটি রয়েছে পূর্ব আফ্রিকার জিবুতি বন্দরে। যদিও চিনের দাবি, জিবুতি থেকে আফ্রিকা এবং পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে বিভিন্ন মানবিক উদ্যোগ এবং জলদস্যুতা-বিরোধী কার্যকলাপ পরিচালনা করা হয়।
১৬১৯
দূরের সমুদ্রে প্রভাব বিস্তার কিংবা বিদেশি ঘাঁটি তৈরির যাবতীয় অভিযোগ বার বার অস্বীকার করেছে চিন। তবে আমেরিকার গোয়েন্দাদের দাবি, উপগ্রহচিত্রে পশ্চিম এশিয়া এবং পূর্ব আফ্রিকায় চিনের তৎপরতার ছবি ধরা পড়েছে।
১৭১৯
আমেরিকার গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, যে ভাবে দ্রুততার সঙ্গে চিন এগোচ্ছে, তাতে যে কোনও দিন আরও একটি বিদেশি নৌবন্দর চিনের দখলে চলে যেতে পারে। চিন সেখানে রাতারাতি নৌঘাঁটিও তৈরি করতে পারে।
১৮১৯
আমেরিকার এই অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছে চিন। তাদের পাল্টা অভিযোগ, বিদেশের মাটিতে আমেরিকার ৭৫০টিরও বেশি ঘাঁটি রয়েছে। যা তারা অন্য দেশগুলির উপর নজর রাখতে ব্যবহার করে।
১৯১৯
নৌবাহিনীর তৎপরতা এবং জলপথে শক্তিবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে আমেরিকা এবং চিনের এই দ্বন্দ্ব বিশ্ব কূটনীতির ক্ষেত্রে ভাল বার্তা বহন করছে না। আগামী দিনে এটি বড় দ্বন্দ্বের চেহারা নিতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।