Canadian PM Justin Trudeau said to be dominated by Sikh leader Jagmeet Singh dgtl
Jagmeet Singh
আড়াল থেকে ট্রুডোকে চালনা করেন এক শিখ নেতা? কার কথায় ‘ওঠেন-বসেন’ কানাডার প্রধানমন্ত্রী?
নিজ্জর হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ভারত এবং কানাডার সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। তবে এই ‘শত্রুতার’ শুরু হয়ে গিয়েছিল অনেক আগে। নেপথ্যে উঠে আসছে কানাডার এক শিখ নেতার নাম।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডের আঁচ এসে লেগেছে ভারত-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। ওই হত্যাকাণ্ডে ভারতের যোগসূত্র রয়েছে বলে অভিযোগ কানাডার। ভারতীয় এক কূটনীতিককে তারা বহিষ্কারও করেছে।
০২১৮
এটাওয়ার অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে কড়া ভাষায় জবাবও দেওয়া হয়েছে। ভারতও কানাডার এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করে পাঁচ দিনের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।
০৩১৮
নিজ্জর হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে কেন অবনতি হল ভারত এবং কানাডার সম্পর্কের? কেনই বা খলিস্তানপন্থী শিখ নেতাকে এত গুরুত্ব দিচ্ছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী? সূত্রের খবর, নেপথ্যে রয়েছেন আর এক শিখ নেতা।
০৪১৮
কানাডার নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)-র নেতা জগমিত সিংহ। আড়ালে বসে তিনিই ট্রুডোকে প্রভাবিত করছেন বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের। কানাডার রাজনীতিতে এই জগমিতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
০৫১৮
কানাডায় প্রচুর সংখ্যক ভারতীয় বাস করেন। প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে অনেকেই শিখ ধর্মাবলম্বী। সেখানে ৭ লক্ষ ৭০ হাজার শিখ রয়েছেন। যা দেশের মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ। ভারতেও জনসংখ্যার বিচারে শিখদের অনুপাত কানাডার চেয়ে কম।
০৬১৮
এই শিখ ভোটব্যাঙ্ককে মাথায় রেখে চলে কানাডার রাজনৈতিক দলগুলি। ট্রুডোও তার ব্যতিক্রম নন। জগমিত এবং তাঁর দলকে সন্তুষ্ট করে চলতে হয় ট্রুডোকে।
০৭১৮
কানাডায় মোট ১৮ জন শিখ ধর্মাবলম্বী সাংসদ রয়েছেন। যাঁদের মধ্যে ১৭ জনেরই শিকড় পঞ্জাবে। এই ১৭ সাংসদের মধ্যে অন্যতম জগমিত। তিনি কানাডার শিখ নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষমতাশালী।
০৮১৮
২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর কানাডায় ভোট হয়। ৪৪তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের সেই ভোটে ট্রুডোর দল দ্য লিবারেল পার্টি ১৫৭টি আসন পেয়েছিল। কিন্তু তা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের জন্য যথেষ্ট ছিল না।
০৯১৮
কানাডার প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে ট্রুডোকে মোট ১৭০টি আসনে জিততে হত। তিনি ১৩ আসন কম পেয়েছিলেন। এখানেই ময়দানে নামেন জগমিত এবং তাঁর দলের সদস্যেরা।
১০১৮
ক্ষমতায় বসতে এনডিপির সঙ্গে সমঝোতা করতে হয়েছিল ট্রুডোকে। জগমিতের হাতে ছিল ২৫টি আসন। তাঁর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এনডিপির সমর্থন লাভ করেন ট্রুডো। তার পরেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে পারেন।
১১১৮
ফলে ট্রুডোর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার নেপথ্যে জগমিতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জগমিত না চাইলে ট্রুডো ক্ষমতায় আসতেই পারতেন না। তার পর থেকে এনডিপিকে সমীহ করে চলে কানাডার শাসকদল।
১২১৮
১৯৭৯ সালে কানাডাতেই জন্ম জগমিতের। তাঁর বাবা এবং মা ভারতীয় ছিলেন। ২০১১ সালে এনডিপির হাত ধরে কানাডার রাজনীতিতে পা রাখেন তিনি। ২০১৪ সালে অন্টারিয়ো প্রদেশের নির্বাচনে জেতেন।
১৩১৮
খলিস্তান আন্দোলনকে সমর্থন করেন জগমিত। তাঁর কথাতেই ট্রুডোকেও ভারত সরকার-বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন করতে হচ্ছে বলে মত অনেকের।
১৪১৮
বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে ২০২০ সালে নিজ্জরকে সন্ত্রাসবাদী হিসাবে ঘোষণা করে ভারত সরকার। তার আগে ২০১৮ সালে ভারতে এসেছিলেন ট্রুডো। সেই সময় তাঁকে পঞ্জাবের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ ভারতে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’দের একটি তালিকা দিয়েছিলেন। সেখানে নিজ্জরের নাম ছিল।
১৫১৮
ট্রুডো ভারত সরকারকে সে সময় আশ্বস্ত করেছিলেন যে, ভারতের অভ্যন্তরীণ কোনও বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে কানাডা সমর্থন করে না। কানাডার মাটিতে তাকে প্রশ্রয়ও দেওয়া হবে না।
১৬১৮
সম্প্রতি, ট্রুডো কানাডার সংসদে ভাষণ দেওয়ার সময় নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারতের যোগসূত্রের সরাসরি অভিযোগ করেন। এর পর জগমিত বলেন, ‘‘কানাডার মাটিতে কানাডার নাগরিককে কোনও বিদেশি সরকার খুন করেছে, এ কথা আমি ভাবতেও পারছি না।’’
১৭১৮
বহু বছর ধরেই খলিস্তানিরা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শিখ ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে আলাদা একটি দেশ গঠনের দাবি জানান। ১৯৮৪ সালে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হত্যাকাণ্ডে এই খলিস্তানি আন্দোলনের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
১৮১৮
ওই ঘটনার পরেই ভারতে খলিস্তানি আন্দোলনকে সন্ত্রাসবাদের তকমা দেওয়া হয় এবং নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ভারত ছেড়ে কানাডায় আশ্রয় নেন খলিস্তানপন্থী শিখরা। ট্রুডোর আমলে খলিস্তানি আন্দোলন আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বলে দাবি।