Business Online: 3 Engineering student and friends started online venture with Rupees 2 lakh, now it is a 135 crore rupees turnover business dgtl
Online Business
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ফাঁকে ব্যবসায় তিন বন্ধু, দু’লক্ষ টাকার পুঁজি ফুলেফেঁপে বছরে আয় ১৩৫ কোটি
হিমাংশু চাওলা, সুমন পাত্র এবং শ্রেয় সহগলের সাহসী চিন্তার ফল ফলেছে। আজ তাঁদের ব্যবসা থেকে আয় হয় বছরে ১৩৫ কোটি টাকা। তাঁদের দু’টি সংস্থার ডালপালা ছড়িয়েছে দেশের অসংখ্য শহরে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:৫৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
পুঁজি বলতে মোটে দু’লক্ষ টাকা। এবং অবশ্যই অনিশ্চিত পথে পা বাড়ানোর সাহস। এই পুঁজি সম্বল করেই ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিন বন্ধু। কলেজে পড়াশোনার সময় থেকেই অনিশ্চিত পথে পা বাড়িয়েছিলেন তাঁরা। সেটা ছিল ২০১০ সাল।
০২১৬
তিন বন্ধুর সাহসী চিন্তার ফল ফলেছে। আজ তাঁদের ব্যবসা থেকে আয় হয় বছরে ১৩৫ কোটি টাকা। তাঁদের দু’টি সংস্থার ডালপালা ছড়িয়েছে দেশের অসংখ্য শহরে। তাতে কাজ করেন ৬৫০ জন কর্মী।
০৩১৬
২০১০ সালে গুরুগ্রাম থেকে ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিন বন্ধু— হিমাংশু চাওলা, সুমন পাত্র এবং শ্রেয় সহগল। সে সময় তিন জনই দ্বারকার নেতাজি সুভাষ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির পড়ুয়া।
০৪১৬
অনলাইনে ফুল, কেক, পেস্ট্রি এবং গ্রাহকদের পছন্দ মতো উপহার সামগ্রী বিক্রি করেন হিমাংশুরা। গোড়ায় অবশ্য হিমাংশুদের সঙ্গে সুমন যোগ দেননি। তবে ২০০৯ সালে তিনিও তাঁদের দলে ভিড়ে যান। সংবাদমাধ্যমের কাছে সুমন বলেন, ‘‘২০১০ সালে গুরুগ্রামের একটি বেসমেন্ট থেকে আমাদের পথচলা শুরু হয়েছিল।’’
০৫১৬
সুমন আরও বলেন, ‘‘শুরুতে আমাদের খুবই ছোট মাপের সংস্থা ছিল। গোড়ার দিকে মোটে এক জন কর্মী নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হয়েছিল।’’
০৬১৬
সুমন জানিয়েছেন, ‘ফ্লাওয়ার অরা’ নামের ওই সংস্থায় ওই এক জন কর্মীই একা হাতে সব সামলাতেন। গ্রাহকদের থেকে অর্ডার নেওয়া থেকে তাঁদের চাহিদার ফুল বা কেক-পেস্ট্রি ডেলিভারি করা অথবা সংস্থার কাজকর্ম চালানো— সবই করতেন তিনি।
০৭১৬
২০১০ সালের ভ্যালেন্টাইন’স ডে-র দিনটি সুমনদের সংস্থার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ১৪ ফেব্রুয়ারির দিনেই তাঁদের সংস্থায় প্রথম বার ক্রমাগত অর্ডার আসতে থাকে। সুমন জানিয়েছেন, সেই ভ্যালেন্টাই’স ডে-তে অর্ডারের সংখ্যা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে তাঁদেরকেও ডেলিভারি দিতে ময়দানে নামতে হয়েছিল।
০৮১৬
সে দিনের কথা মনে করে শ্রেয় বলেন, ‘‘সেই ভ্যালেন্টাই’স ডে-তে হিমাংশুর সঙ্গে আমিও ডেলিভারি দিতে রাস্তায় বেরিয়েছিলাম। দিল্লি এবং তার আশপাশের এলাকার অন্তত ৫০ শতাংশ ডেলিভারিই দিয়েছিলাম আমরা দু’জন।’’
০৯১৬
কয়েক বছরের মধ্যে দেশের বিভিন্ন শহরে পা রেখেছিল সুমনদের সংস্থা। সংবাদমাধ্যমের দাবি, দেশের ১১টি শহরে তাঁদের শাখা হয়েছে। সুমনদের সংস্থার ওয়েবসাইট ফ্লাওয়ারঅরা ডট কমের দাবি, বিভিন্ন নেটওয়ার্কের সাহায্যে দেশের ২২৯টিরও বেশি শহরে তাঁরা ফুল ডেলিভারি করেন।
১০১৬
সুমনদের সংস্থায় মুনাফা বাড়তে থাকায় ২০১৬ সালে তিন জন মিলে আরও একটি সংস্থা খোলেন। এ বার তাঁদের সেই সংস্থার ‘ব্র্যান্ড নেম’— বেকিংগো।
১১১৬
ফুল এবং উপহার সামগ্রীর পাশাপাশি কেক, পেস্ট্রিও গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে শুরু করেছিল বেকিংগো। চিরাচরিত বেকারির ব্যবসাকে কয়েকটি এলাকার মধ্যে গণ্ডিবদ্ধ করে না রেখে তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন হিমাংশুরা। তিনি বলেন, ‘‘এ দেশে বেকারিগুলি বরাবরই এলাকাভিত্তিক ব্যবসা করেছে। তাতে স্থানীয় লোকজনের চাহিদার কথা মাথায় রাখা হয়। সে সব বেকারিতে হয়তো দারুণ কিছু খাবার পরিবেশন করা হয়, তা একসঙ্গে অনেক জায়গায় পৌঁছয় না।’’
১২১৬
একসঙ্গে অনেক জায়গায় পৌঁছতে চেয়েছিলেন হিমাংশুরা। সেই সঙ্গে বেকারির ব্যবসায় নিজেদের ব্র্যান্ডকেই ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন। হিমাংশুর কথায়, ‘‘এ দেশে পিৎজা হাট বা ম্যাকডোনাল্ডের মতো কোনও ব্র্যান্ড নেই।’’
১৩১৬
নিজের কেক-পেস্ট্রি দিয়ে দেশীয়দের মন জয় করতে চেয়েছিলেন হিমাংশুরা। তাঁর দাবি, ‘‘দেশের যে কোনও জায়গায় উচ্চমানের কেক পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। স্থানীয় বেকারির থেকে ৫০০ রকমের কেক ডেলিভারি দিই আমরা।’’
১৪১৬
হিমাংশু জানিয়েছেন, মেরঠ, পানিপত, রোহতক, কারনাল, বেঙ্গালুরু, এবং হায়দরাবাদ-সহ দেশের ১১টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে বেকিংগো।
১৫১৬
গোড়ার দিকে ব্যবসায় ধীর গতি থাকলেও প্রথম বছরে ১০ লক্ষ টাকা আয় হয়েছিল হিমাংশুদের। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে ফ্লাওয়ার অরার আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটিতে। তাতে কর্মীসংখ্যা ১৫০। অন্য দিকে, ওই অর্থবর্ষে বেকিংগোর আয় ৭৫ কোটি টাকা। তাতে কাজ করেন ৫০০ জন।
১৬১৬
ব্যবসা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের দায়িত্বও ভাগ করে নিয়েছেন তিন বন্ধু। সুমন দেখেন মার্কেটিং। অন্য দিকে, সংস্থার ভিতরকার কাজকর্ম এবং ব্যবসা বাড়ানো-সহ একাধিক বিষয়ে মন দিয়েছেন হিমাংশু এবং শ্রেয়।