আমেরিকা থেকে বিমানে দিল্লি বিমানবন্দরে নামার পর প্রিয়ঙ্কাকে দেখার জন্য আলোকচিত্রী-সহ অনুরাগীদের ভিড় উপচে পড়ে। নিরাপত্তারক্ষীদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নিজস্বী তুলতে অভিনেত্রীর কাছাকাছি চলে আসেন কয়েক জন অনুরাগী।

নিরাপত্তারক্ষীদের ঠেলে সরিয়ে দিয়ে প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে ছবিও তুলতে দেখা যায় একাধিক অনুরাগীকে। এই ঘটনায় প্রিয়ঙ্কা বিরক্তি প্রকাশ করলেও পরে বিমানবন্দরের বাইরে এসে চিত্রগ্রাহকদের হাত জোড় করে নমস্কার করে হাসিমুখেই কপুরথলা হাউসের দিকে চলে যান তিনি।

পরিণীতি এবং রাঘবের আংটিবদলের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন পোশাকশিল্পী মণীশ মলহোত্র। তবে, প্রিয়ঙ্কা এবং মণীশ ছাড়া বলিপাড়ার অন্যান্য কলাকুশলীকে দেখা যায়নি এই অনুষ্ঠানে।

সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বাগ্‌দান পর্বের অনুষ্ঠানে পরিণীতির পরনে ছিল মণীশ নির্মিত সাদা রঙের সাবেকি পোশাক। পরিণীতির সঙ্গে মানানসই পোশাক পরেছিলেন রাঘবও। পোশাকশিল্পী পবন সচদেবা, যিনি সম্পর্কে রাঘবের মামা, রাঘবের পরনে বিশেষ শেরওয়ানি তৈরির দায়িত্বে ছিলেন।

প্রিয়ঙ্কা এবং মণীশ ছাড়াও আংটিবদলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদেরা। নিমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় ছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল, আদিত্য ঠাকরে, পি চিদম্বরম, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মানের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বেরা।

অতিথিদের আপ্যায়ন করার জন্য ছিল এলাহি আয়োজন। কপুরথলা হাউস সেজে উঠেছিল আলোর রোশনাই এবং বাহারি ফুলে। অন্দরমহলে ভরে উঠেছিল ফুলের রঙ্গোলিতে। মেঝেতে সাদা, গোলাপি এবং হলুদরঙা ফুলের পাশাপাশি সাজানো হয়েছিল মোমবাতি দিয়েও।

শুভলগ্নে পরিণীতি এবং রাঘবের আংটিবদলের অনুষ্ঠানপর্ব সারার পর নিমন্ত্রিতদের জন্য মধ্যাহ্নভোজ এবং নৈশভোজের এলাহি আয়োজন করা হয়েছিল। খাবারের দায়িত্বে ছিলেন পরিণীতির দুই ভাই সহজ এবং শিবাঙ্গ। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, দুই ভাইয়ের খাবারের ব্যবসাও রয়েছে।

বোন পরিণীতির আংটিবদলের অনুষ্ঠানে মেনুও নজরকাড়া করেছিলেন অভিনেত্রীর দুই ভাই। বলিপাড়া সূত্রে খবর, সেলিব্রিটি শেফ বরুণ তুলিও নাকি খাবারের দায়িত্বে ছিলেন।

খাবারের তালিকায় ছিল পুরনো দিল্লির কাবাবের ছড়াছড়ি। দিল্লির বিশেষ আমিষ খাবার বাদেও তালিকায় বাদ পড়েনি নিরামিষ খাবারও। মিষ্টি জাতীয় খাবার বরাবর পছন্দের পরিণীতির। তাই ডেজ়ার্টের তালিকাও ছিল লম্বা।

পরিণীতি এবং রাঘবের আংটিবদলের অনুষ্ঠানের সূচনা হয় শিখ রীতির প্রার্থনা ‘আদ্রস’ দিয়ে। ছিল ভজনের আয়োজন, অবশ্য তা গুরদ্বারে সংঘটিত হয়েছিল। শনিবার বিকেল ৫টায় শিখ ধর্মগ্রন্থ গুরু গ্রন্থসাহেব-এর অংশ শুকুমণি সাহেব পাঠ করা হয়। তার পরই শুরু হয়েছিল ‘আদ্রস’ বা প্রার্থনা।

জনসমক্ষে একাধিক বার পরিণীতি এবং রাঘবকে একসঙ্গে দেখা গেলেও নিজেদের প্রেম নিয়ে এত দিন মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন এই জুটি। মুম্বইয়ের রেস্তরাঁ থেকে বিমানবন্দর, সর্বত্রই একসঙ্গে ধরা দিয়েছেন চর্চিত যুগল। তবে বাগ্‌দান এবং বিয়ে নিয়ে কখনও টুঁ শব্দ করেননি দু’জনের কেউই।

এক জন অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত এবং অপর জন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কারণে পরিণীতি এবং রাঘবের সম্পর্কের সূত্রপাত কী ভাবে হয়, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কৌতূহল জেগেছে নেটব্যবহারকারীদের।

সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, রাঘব ইংল্যান্ডের লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স-এ পড়াশোনা করেছেন। অন্য দিকে, পরিণীতিও ইংল্যান্ডের ম্যাঞ্চেস্টার বিজ়নেস স্কুলের প্রাক্তন পড়ুয়া। বলিপাড়ার অনুমান, বিদেশে পড়াশোনা করার সময়েই আলাপ হয় দু’জনের। দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ব থেকেই প্রেমের সূত্রপাত।

যশরাজ ফিল্মসে মার্কেটিংয়ের কাজ করতে করতে ২০১১ সালে সিনেমার পর্দায় অভিষেক হয় পরিণীতির। গত মাসে মুম্বইয়ের রেস্তরাঁয় ডেটে গিয়ে আলোকচিত্রীদের ক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়েন রাঘব এবং পরিণীতি। সেই থেকে শুরু দু’জনের প্রেমের জল্পনা। তার পর থেকে একাধিক বার এক ফ্রেমে ধরা দিয়েছেন চর্চিত যুগল। বাগ্‌দানের অনুষ্ঠানপর্ব সারা হলেও বিয়ের বিস্তারিত সময়সূচি এখনও জানা যায়নি।

সম্প্রতি ‘চমকিলা’ ছবির শুটিং শেষ করেছেন পরিণীতি। ইমতিয়াজ আলি পরিচালিত এই ছবিতে গায়ক-অভিনেতা দিলজিৎ দোসাঞ্জের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যাবে পরিণীতিকে। এই ছবির অধিকাংশ শুটিং হয়েছে পঞ্জাবে।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই আমেরিকার বিখ্যাত ‘কোয়াচেলা ভ্যালি মিউজ়িক অ্যান্ড আর্ট ফেস্টিভ্যাল’-এ গান গাইতে দেখা গিয়েছে দিলজিৎকে। সেখানে উপচে পড়েছিল দর্শক-শ্রোতার ভিড়। প্রশংসার পাশাপাশি কটাক্ষেরও শিকার হন দিলজিৎ। পারফর্ম করার সময় এক মহিলা দর্শককে ভারতের জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিতে বলেন বলে দিলজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগের বিরুদ্ধে অবশ্য সরব হন দিলজিৎ। দিলজিৎ জানান, এই কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। পঞ্জাবি ভাষা বুঝতে না পেরে তাঁর বাক্যের ভিন্ন অর্থ বার করা হয়েছে বলে দাবি গায়কের। দিলজিৎ জবাবে লেখেন, “মিথ্যা খবর আর নেতিবাচকতা ছড়াবেন না। আমি বলেছিলাম, এটা আমার দেশের পতাকা, যা সেই মহিলা নিয়ে এসেছেন। এর অর্থ, তিনি আমার অনুষ্ঠানে আমার দেশকে বহন করে এনেছেন। যদি পঞ্জাবি না বোঝেন, দয়া করে গুগল করে নিন।”