Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Netron Lake

এই হ্রদে নামলেই ‘পাথর’ হয়ে যায় পাখিরা! আশ্চর্যজনক ভাবে বেঁচে থাকে এক বিশেষ প্রজাতির পাখি

পৃথিবীতে এমন অনেক জলাশয়, হ্রদ আছে যেগুলি আজও রহস্যে ঘেরা। তেমনই একটি হ্রদ রয়েছে যেখানে নাকি পাখিরা নামলেই ‘পাথর’ হয়ে যায়! বিষয়টি শুনে কি অবাস্তব লাগছে? সত্যিই এমন ঘটনা ঘটে?

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২২ ১১:০৮
Share: Save:
০১ ১৩
পৃথিবীতে এমন অনেক জলাশয়, হ্রদ আছে যেগুলি আজও রহস্যে ঘেরা। তেমনই একটি হ্রদ রয়েছে যেখানে নাকি পাখিরা নামলেই ‘পাথর’ হয়ে যায়!

পৃথিবীতে এমন অনেক জলাশয়, হ্রদ আছে যেগুলি আজও রহস্যে ঘেরা। তেমনই একটি হ্রদ রয়েছে যেখানে নাকি পাখিরা নামলেই ‘পাথর’ হয়ে যায়!

০২ ১৩
বিষয়টি শুনে কি অবাস্তব লাগছে? সত্যিই এমন ঘটনা ঘটে? না কি এটা শুধুই একটা রটনা! সত্যিই কি হ্রদের এমন ক্ষমতা রয়েছে? কোথায় রয়েছে এই হ্রদ? এই রহস্যের নেপথ্যে কাহিনিই বা কী।

বিষয়টি শুনে কি অবাস্তব লাগছে? সত্যিই এমন ঘটনা ঘটে? না কি এটা শুধুই একটা রটনা! সত্যিই কি হ্রদের এমন ক্ষমতা রয়েছে? কোথায় রয়েছে এই হ্রদ? এই রহস্যের নেপথ্যে কাহিনিই বা কী।

০৩ ১৩
ভয়ঙ্কর এই হ্রদটির নাম নেট্রন। দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার উত্তর প্রান্তে রয়েছে এই হ্রদ। এটি একটি লবণাক্ত হ্রদ। এই হ্রদের আশপাশে কোনও জনবসতি নেই।

ভয়ঙ্কর এই হ্রদটির নাম নেট্রন। দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার উত্তর প্রান্তে রয়েছে এই হ্রদ। এটি একটি লবণাক্ত হ্রদ। এই হ্রদের আশপাশে কোনও জনবসতি নেই।

০৪ ১৩
দৈর্ঘ্যে ৫৭ কিলোমিটার এবং প্রস্থে ২২ কিলোমিটার নেট্রন হ্রদে এওয়াসো নায়গ্রো নদীর জল এসে পড়ে। আশপাশের বেশ কয়েকটি উষ্ণ প্রস্রবণের জলও এই হ্রদে পড়ে। ফলে বিভিন্ন খনিজে সমৃদ্ধ এই হ্রদের জল।

দৈর্ঘ্যে ৫৭ কিলোমিটার এবং প্রস্থে ২২ কিলোমিটার নেট্রন হ্রদে এওয়াসো নায়গ্রো নদীর জল এসে পড়ে। আশপাশের বেশ কয়েকটি উষ্ণ প্রস্রবণের জলও এই হ্রদে পড়ে। ফলে বিভিন্ন খনিজে সমৃদ্ধ এই হ্রদের জল।

০৫ ১৩
আগে এই হ্রদ নিয়ে বহু কথা শোনা গেলেও প্রামাণ্য তথ্য কিছু মেলেনি কোনও দিনই। ২০১১ সালে নিক ব্রান্ডট নামে এক বন্যপ্রাণ চিত্রগ্রাহক নেট্রন হ্রদের সামনে গিয়ে চমকে গিয়েছিলেন।

আগে এই হ্রদ নিয়ে বহু কথা শোনা গেলেও প্রামাণ্য তথ্য কিছু মেলেনি কোনও দিনই। ২০১১ সালে নিক ব্রান্ডট নামে এক বন্যপ্রাণ চিত্রগ্রাহক নেট্রন হ্রদের সামনে গিয়ে চমকে গিয়েছিলেন।

০৬ ১৩
হ্রদের পাড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল অসংখ্য পশুপাখির দেহ। ব্রান্ডট জানান, সেগুলো দেখে মনে হচ্ছিল যেন কোনও পাথরের মূর্তি সাজিয়ে রাখা!

হ্রদের পাড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল অসংখ্য পশুপাখির দেহ। ব্রান্ডট জানান, সেগুলো দেখে মনে হচ্ছিল যেন কোনও পাথরের মূর্তি সাজিয়ে রাখা!

০৭ ১৩
এর নেপথ্যের রহস্য জানতে শুরু হয় গবেষণা। কী ভাবে মৃত্যু হয়েছিল পাখিগুলির? কেনই বা ‘পাথরে’ পরিণত হয়েছিল? পরে জানা যায়, এই হ্রদের জলে সোডিয়াম কার্বোনেট এবং সোডার পরিমাণ অত্যধিক বেশি। প্রচুর সোডিয়াম ও কার্বোনেট যুক্ত ট্র্যাকাইট লাভা দিয়ে প্রায় ২৬ লক্ষ বছর আগে প্লিসটোসিন যুগে তৈরি হয়েছে নেট্রন হ্রদের তলদেশ।

এর নেপথ্যের রহস্য জানতে শুরু হয় গবেষণা। কী ভাবে মৃত্যু হয়েছিল পাখিগুলির? কেনই বা ‘পাথরে’ পরিণত হয়েছিল? পরে জানা যায়, এই হ্রদের জলে সোডিয়াম কার্বোনেট এবং সোডার পরিমাণ অত্যধিক বেশি। প্রচুর সোডিয়াম ও কার্বোনেট যুক্ত ট্র্যাকাইট লাভা দিয়ে প্রায় ২৬ লক্ষ বছর আগে প্লিসটোসিন যুগে তৈরি হয়েছে নেট্রন হ্রদের তলদেশ।

০৮ ১৩
পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, হ্রদের জল অস্বাভাবিক ক্ষারধর্মী (পিএইচ ১০.৫)। ত্বককে পুড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। যা পশুপাখির পক্ষে অসহনীয়।

পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, হ্রদের জল অস্বাভাবিক ক্ষারধর্মী (পিএইচ ১০.৫)। ত্বককে পুড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। যা পশুপাখির পক্ষে অসহনীয়।

০৯ ১৩
বছরের বেশির ভাগ সময় হ্রদের জলের তাপমাত্রা থাকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। ফলে জল দ্রুত বাষ্পীভূত হয়ে যায়। আর তলদেশে পড়ে থাকে জলের মতো তরল লাভা।

বছরের বেশির ভাগ সময় হ্রদের জলের তাপমাত্রা থাকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। ফলে জল দ্রুত বাষ্পীভূত হয়ে যায়। আর তলদেশে পড়ে থাকে জলের মতো তরল লাভা।

১০ ১৩
সোডিয়াম ও কার্বোনেটের জন্য হ্রদে জন্ম নেয় সায়োনোব্যাকটিরিয়া নামে অণুজীব। এই অণুজীবের শরীরে লাল রঞ্জক থাকে। ফলে হ্রদের জল লাল রঙের হয়।

সোডিয়াম ও কার্বোনেটের জন্য হ্রদে জন্ম নেয় সায়োনোব্যাকটিরিয়া নামে অণুজীব। এই অণুজীবের শরীরে লাল রঞ্জক থাকে। ফলে হ্রদের জল লাল রঙের হয়।

১১ ১৩
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই রঙেই আকৃষ্ট হয়ে পশুপাখি হ্রদে নামে। কিন্তু জলের অতিরিক্ত ক্ষারধর্মিতার জন্য সেগুলোর মৃত্যু হয়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই রঙেই আকৃষ্ট হয়ে পশুপাখি হ্রদে নামে। কিন্তু জলের অতিরিক্ত ক্ষারধর্মিতার জন্য সেগুলোর মৃত্যু হয়।

১২ ১৩
নেট্রন হ্রদের জল ক্ষারধর্মী হলেও এই হ্রদই পূর্ব আফ্রিকার লেসার ফ্লেমিঙ্গোদের সবচেয়ে বড় প্রজনন ক্ষেত্র। প্রায় ২৫ লক্ষ লেসার ফ্লেমিঙ্গো এই হ্রদে দেখতে পাওয়া যায়। কারণ এই হ্রদের অগভীর জলে পাওয়া যায় প্রচুর নীলাভ-সবুজ শৈবাল। এই শৈবাল খেয়েই তারা বেঁচে থাকে এবং বংশবৃদ্ধি করে।

নেট্রন হ্রদের জল ক্ষারধর্মী হলেও এই হ্রদই পূর্ব আফ্রিকার লেসার ফ্লেমিঙ্গোদের সবচেয়ে বড় প্রজনন ক্ষেত্র। প্রায় ২৫ লক্ষ লেসার ফ্লেমিঙ্গো এই হ্রদে দেখতে পাওয়া যায়। কারণ এই হ্রদের অগভীর জলে পাওয়া যায় প্রচুর নীলাভ-সবুজ শৈবাল। এই শৈবাল খেয়েই তারা বেঁচে থাকে এবং বংশবৃদ্ধি করে।

১৩ ১৩
বিজ্ঞানীদের ধারণা, হ্রদের এই ক্ষারধর্মীর সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে এই ফ্লেমিঙ্গোরা। ফলে নেট্রন হ্রদের জলে ফ্লেমিঙ্গোদের জমাট দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, হ্রদের এই ক্ষারধর্মীর সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে এই ফ্লেমিঙ্গোরা। ফলে নেট্রন হ্রদের জলে ফ্লেমিঙ্গোদের জমাট দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE