চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসেই চিন থেকে নাকি প্রায় ১৫০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ তুলে নিয়েছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। এমন তথ্যই উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এ।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৪ ০৯:০৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
চিন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। কয়েক দশক ধরে অর্থনৈতিক দিক থেকে দ্রুত বৃদ্ধি দেখেছে শি জিংপিংয়ের দেশ। তবে চিনের এই অর্থনৈতিক সাফল্য হয়তো কিছুটা থমকে যেতে চলেছে। এমনটাই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটা অংশ।
০২১৮
গত বছর প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের দিক থেকে ক্ষতির মুখ দেখেছে চিন। সে ধারা এ বছরেও অব্যাহত। গত বছর থেকে চিনে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ অনেকটাই কমেছে।
০৩১৮
চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসেই চিন থেকে প্রায় ১৫০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ তুলে নিয়েছেন বিনিয়োগকারীর। এমন তথ্যই উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এ।
০৪১৮
এর পরেই বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, অর্থনৈতিক দিক থেকে ধাক্কা খেতে পারে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকার।
০৫১৮
মজার বিষয় হল, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে যে পরিমাণ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ চিনে ঢুকেছে, তার থেকে বেশি বিনিয়োগ সে দেশ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
০৬১৮
চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে ১০০০ কোটি ডলার বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল চিনে। তবে ‘স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফ ফরেন এক্সচেঞ্জ’-এর মতে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এই অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসেই চিন থেকে মোট ১৪৮০ কোটি ডলার বা ১১৬০ কোটি পাউন্ডের বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে।
০৭১৮
বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাহারের কারণে যদি চিনের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হয় তা হলে তার প্রভাব অন্য দেশের উপরও পড়তে পারে। বিশেষ করে তেল রফতানি করা দেশগুলির উপর।
০৮১৮
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিনা অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগের কারণে ইতিমধ্যেই ‘বন্ধু’ সৌদি আরবের মতো তেল রফতানিকারক দেশগুলি তাদের তেল উৎপাদন কমিয়েছে।
০৯১৮
যদি তেলের রফতানি কমে, তা হলে পশ্চিম এশিয়ার অনেক দেশের রাজস্বেই টান পড়তে পারে। তাই ক্ষতির মুখ থেকে বাঁচতে আগেভাগেই সে দেশগুলি তেল উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
১০১৮
‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর সঙ্গে কথা বলার সময় চিনা অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ তথা অর্থনীতিবিদ ডানকান রিগলি জানিয়েছেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মূলত চিনে নিজেদের সম্পত্তি বিক্রি করে বা মুনাফা বার করে নিয়ে সে দেশ থেকে ব্যবসা গোটাচ্ছেন।
১১১৮
ডানকানের মতে, আমেরিকার সঙ্গে চিনের ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণেই বিনিয়োগকারীরা বেজিং থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করছেন। আমেরিকায় রফতানি করা পশ্চিম বিশ্বের সংস্থাগুলি সরবরাহ শৃঙ্খলে ঝুঁকি কমাতে ভিয়েতনাম এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলিতে নিজেদের অফিস এবং ব্যবসা খুলছে।
১২১৮
২০০৮ সালে চিনের প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসেছিলেন জিনপিং। তিনিই দেশের অর্থনীতিকে বর্তমানের জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন। অর্থনীতিতে আমেরিকার সঙ্গে সমানে সমানে টেক্কা দিয়েছে চিন।
১৩১৮
কিন্তু বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, চিনের মানুষ জিনপিং সরকারের উপর এখন যারপরনাই বিরক্ত। গত কয়েক বছরে তাঁর একাধিক নীতি জনমানসে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। তারও প্রতিফলন দেখা গিয়েছে অর্থনীতির পরিসংখ্যানে।
১৪১৮
মূলত কোভিড অতিমারির পর থেকেই চিনের অর্থনীতিতে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি চিনের অনেক বিত্তশালীও সে দেশ ছাড়তে শুরু করেছেন। কমছে বড়লোকদের সংখ্যা।
১৫১৮
চিনে বড়লোকদের দেশ ছাড়ার চল শুরু হয়েছে বছর দুয়েক আগে থেকেই। গত বছরেও একাধিক বড় ব্যবসায়ী চিন ছেড়েছেন।
১৬১৮
২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ২,৭০০ শতকোটিপতিদের মধ্যে ৬০০ জনেরও বেশি চিনের বাসিন্দা ছিলেন। তবে ফোর্বস পত্রিকা অনুযায়ী, গত বছর সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬২-তে।
১৭১৮
কিন্তু কেন এই বিত্তশালীরা চিন-বিমুখ? আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ এবং সে দেশের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিবেশের কারণেই দেশ ছাড়ছেন চিনের বড়লোকেরা। সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের অর্থও।
১৮১৮
তার মধ্যেই আবার চিনে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।