Antony Blinken, the US secretary of state’s visit comes amid tense exchanges as China’s foreign minister says US should respect the ‘Taiwan issue’ dgtl
Antony Blinken
অবিশ্বাসের আবহে শি-র দেশে ব্লিঙ্কেন! আন্তরিকতা না কি ‘বড়’ পদক্ষেপের আগে প্রতিপক্ষকে মেপে নেওয়া?
সাম্প্রতিক অতীতে তাইওয়ান-সহ একাধিক বিষয়ে আমেরিকা এবং চিনের ‘স্নায়ুযুদ্ধ’ চলছে। তার আঁচ পড়েছে বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের ফেব্রুয়ারির বৈঠকের। সফরের প্রস্তুতির মধ্যেই ব্লিঙ্কেনের অবশ্য ‘ছন্দপতন’ হয়েছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৩ ১৩:৪৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
বছর পাঁচেক পর অবশেষে চিনের মাটিতে পা রাখলেন আমেরিকার কোনও শীর্ষ প্রতিনিধি। রবিবার থেকে চিন সফর শুরু হল বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের।
০২২০
গত ফেব্রুয়ারিতে ব্রিঙ্কেনের এই সফর হওয়া চূড়ান্ত হয়েছিল। তবে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনার আবহে শেষ মুহূর্তে তা ভেস্তে যায়।
০৩২০
১৪ জুন আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের তরফে গোড়ায় একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ১৬ থেকে ২১ জুনের সফরে চিন ছাড়াও লন্ডনে যাবেন ব্লিঙ্কেন। তবে শেষমেশ রবিবার শি-র দেশে পা রাখেন তিনি।
০৪২০
চিন সফরে গিয়ে সে দেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ব্লিঙ্কেনের সাক্ষাৎ হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট করেনি আমেরিকা। যদিও চিনা বিদেশ মন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে জানানো হয়েছে।
০৫২০
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ব্লিঙ্কেনই হবেন জো বাইডেন সরকারের কোনও শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধি, যিনি চিন সফরে যাবেন। স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্বের দুই শক্তিধর দেশের মধ্যে আসন্ন বৈঠক ঘিরে প্রত্যাশার পারদ চড়ছে। তবে ব্লিঙ্কেনের সফর নিয়ে নাকি তেমন হেলদোল নেই চিনের।
০৬২০
সাম্প্রতিক অতীতে তাইওয়ান-সহ একাধিক বিষয়ে আমেরিকা এবং চিনের ‘স্নায়ুযুদ্ধ’ চলছে। তার আঁচ পড়েছে ব্রিঙ্কেনের ফেব্রুয়ারির বৈঠকে। সফরের প্রস্তুতির মধ্যেই ব্লিঙ্কেনের অবশ্য ‘ছন্দপতন’ হয়েছে।
০৭২০
চিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে দখলদারি বন্ধ করায় আমেরিকাকে ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েছে চিন। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ‘সিএনএন’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিনের দাবি, ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে সাম্প্রতিক ফোনালাপে বেজিংয়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার অনুরোধ করেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী কিন গ্যাং। এমনকি, তাঁদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমেরিকার হস্তক্ষেপ বন্ধ করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
০৮২০
সংবাদমাধ্যমের দাবি, ব্লিঙ্কেনের সফর ঘিরে বিশেষ উৎসাহী নয় চিন। বিশ্বের এই দুই শক্তিধর দেশের মধ্যে সম্পর্ক যে ‘মধুর’ নয়, তার প্রমাণ মিলেছে সাম্প্রতিক অতীতের নানা ঘটনায়।
০৯২০
সাম্প্রতিক অতীতে তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে দু’দেশের স্নায়ুযুদ্ধের সূত্রপাত। তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ডের অংশ মনে করে চিন। তবে একে বরাবরই ‘স্বশাসিত’ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে আমেরিকা। যদিও তাইওয়ান নিয়ে ‘কৌশলগত অস্বচ্ছতা’ বজায় রেখেছে তারা। অন্য দিকে, এ ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের মতকে উপেক্ষা করেছে চিন।
১০২০
আমেরিকার হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির গত বছরের তাইওয়ান সফরকে ঘিরে চিনের সঙ্গে বাইডেনের দেশের স্নায়ুযুদ্ধ বেড়েছে বই কমেনি। চিনের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে গত অগস্টে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেইতে অবতরণ করেছিল পেলোসির বিমান।
১১২০
ফেব্রুয়ারিতে ব্লিঙ্কেনের চিন সফর বাতিলের নেপথ্যে আরও কারণ ছিল বলে মনে করা হয়। গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহে আমেরিকার সামরিক ঘাঁটিগুলির উপর দিয়ে ওড়া চিনের একটি বেলুন গুলি করে নামানো হয়েছিল।
১২২০
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সামরিক সূত্রের মতে, তাদের ঘাঁটিগুলির তথ্য বৈদ্যুতিন ভাবে সংগ্রহ করে তা বেজিংয়ের কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম ওই বেলুনটি।
১৩২০
ব্লিঙ্কেনের সফর নিয়ে বিশেষ হইচই নেই চিনের জাতীয় সংবাদমাধ্যমে। আন্তর্জাতিক শান্তি এবং নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণাকারী এক সংস্থা ‘দ্য স্টিমসন সেন্টার’-এর ডিরেক্টর ইয়ুন সান বলেন, ‘‘ব্লিঙ্কেনের সফর ঘিরে পশ্চিমি দেশগুলির মতো ততটা উৎসাহী নয় চিন। ’’
১৪২০
ওয়াশিংটনের সরকারি নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ‘দ্য স্টিমসন সেন্টার’-এর। ইয়ুনের দাবি, ‘‘বেলুনকাণ্ডের পর আরও এক বার নিজেদের মুখ পুড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে চিনের। সে কারণে এই সফর ঘিরে প্রত্যাশাও সচেতন ভাবে কম রাখা হয়েছে।’’
১৫২০
চিনের মতো আমেরিকাও অবশ্য প্রকাশ্যে এই সফর ঘিরে বিশেষ হইচই করছে না। আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক শীর্ষ কূটনীতিক ড্যানিয়েল ক্রিটেনব্রিঙ্ক বুধবার সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘বেজিংয়ে যাওয়ামাত্র (দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে) যে বড়সড় কিছু পরিবর্তন হবে, তেমন আশা নিয়ে চিনে যাচ্ছি না আমরা। একে আর পাঁচটা সফরের মতোই মনে করা হচ্ছে।’’
১৬২০
ক্রিটেনব্রিঙ্কের মন্তব্য, ‘‘বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিয়েই বেজিংয়ে পা রাখব। আশা করি আমাদের লক্ষ্যপূরণের কাছাকাছি পৌঁছতে সফল হব।’’
১৭২০
সংবাদমাধ্যমের দাবি, সাম্প্রতিক কালে আমেরিকার বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের জেরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা নিয়ে বাইডেন সরকারের ‘আন্তরিকতা’ নিয়ে সন্দিহান চিন।
১৮২০
চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গত মাসে বলেছিলেন, ‘‘এক দিকে (দ্বিপাক্ষিক) আলোচনার অনুরোধ করছে আমেরিকা। অন্য দিকে, যে কোনও উপায়ে চিনকে দমিয়ে রাখতে চাইছে। আমেরিকার পক্ষ থেকে এ ধরনের মিশ্র সঙ্কেতে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। এর জেরে ব্লিঙ্কেনের সফর ঘিরে বিশেষ আশাবাদী নয় চিন।’’
১৯২০
ব্লিঙ্কেনের সফরের সময় কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে? চিনা বিশেষজ্ঞদের দাবি, তাইওয়ান ছাড়াও আমেরিকার প্রযুক্তি রফতানিতে নিয়ন্ত্রণ বিশেষ করে চিনে অত্যাধুনিক সেমিকন্ডাক্টর এবং চিপ তৈরির যন্ত্রাংশ সরবরাহে রাশ টানার বিষয়ে তুলতে পারেন জিনপিংয়ের আধিকারিকেরা।
২০২০
আগামী বছর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক ‘মধুর’ করার এটাই কি শেষ সুযোগ আমেরিকার? পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ ওয়াং বলেন, ‘‘(বাইডেন সরকারের) হাতে আর বিশেষ সময় নেই। আমেরিকায় রাজনৈতিক মেরুকরণ এতটা স্পষ্ট যে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ঘটানোর জন্য চলতি বছরে আর সুযোগ পাওয়া কঠিন হবে বাইডেন সরকারের।’’