সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মুম্বই থেকে দুবাই পর্যন্ত জলের তলা দিয়ে ছুটবে উচ্চ গতিসম্পন্ন ট্রেনটি। ফলে দুই শহরের মধ্যে যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ উন্নত হবে। যদিও বছর কয়েক আগে এই প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৫৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
সময় কমতে চলেছে মুম্বই থেকে দুবাই যাতায়াতের। আকাশপথে মুম্বই থেকে দুবাই যেতে সময় লাগে প্রায় তিন ঘণ্টা। সেই সময়ের থেকে আরও এক ঘণ্টা কম লাগবে আর কয়েক বছরের মধ্যে। ভারত থেকে দুবাই যেতে লাগবে মাত্র দু’ঘণ্টা! তাও আবার সমুদ্রপথে। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি।
০২১৪
ভারত ও দুবাইয়ের মধ্যে এমন একটি চুক্তি প্রস্তাবিত হয়েছে, যা বাস্তবায়ন হলে দুবাই ভ্রমণ করা সম্ভব হবে রেলপথের মাধ্যমে। সমুদ্রের নীচ দিয়ে প্রস্তাবিত রেলপথটি তৈরি হলে ভারত থেকে দুবাইয়ের মধ্যে যাতায়াত আরও সহজসাধ্য হয়ে উঠবে বলে আশা করা যায়। যাঁদের প্রায়শই দুবাই যাতায়াত করতে হয় তাঁদের কাছে এই সংবাদ অত্যন্ত সুখকর।
০৩১৪
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মুম্বই থেকে দুবাই পর্যন্ত জলের তলা দিয়ে ছুটবে উচ্চ গতিসম্পন্ন ট্রেনটি। গতি হবে ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটার থেকে হাজার কিলোমিটার। ফলে দুই শহরের মধ্যে যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থাও বেশ উন্নত হবে। যদিও বছর কয়েক আগে এই প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে এর অনুমোদন এবং বাস্তবায়ন নিয়ে এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি।
০৪১৪
প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে ২০৩০ সালের মধ্যেই সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে ছুটবে সাধারণ বুলেট ট্রেনের চেয়েও দ্বিগুণ গতিবেগসম্পন্ন এই বিশেষ ট্রেনটি। এর ফলে দুই দেশের দু’টি শহরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই রেলপথের ফলে জুড়ে যাবে বাণিজ্যনগরী মুম্বই ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দুবাই।
০৫১৪
মুম্বই থেকে দুবাইয়ের ফুজাইরাহ পর্যন্ত চালু হওয়ার কথা চলছে এই ট্রেনের। দ্রুতগতির এই ট্রেনের কথা প্রথম উঠে আসে ২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি-ভারত কনক্লেভে। আমিরশাহির তৎকালীন জাতীয় উপদেষ্টা কমিশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানিয়েছিলেন এই ট্রেনের ভাবনার কথা।
০৬১৪
সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, এই প্রকল্পে প্রথমেই সমীক্ষা করে দেখতে হবে এই ধরনের কোনও রেললাইন পাতা যাবে কি না। দূরত্বটাও মাথায় রাখতে হবে। ৬০০ কিমি প্রতি ঘণ্টায় জলস্তরের ভারসাম্য বজায় রেখে এই ট্রেনে পরিষেবা চালু করার জন্য চাই উচ্চ প্রযুক্তির কারিগরি দক্ষতাও।
০৭১৪
ম্যাগনেটিক ফ্লোটিং ট্রেন (মাগলেভ) রেললাইন ও ইঞ্জিনের মধ্যে কোনও ঘর্ষণ থাকবে না। ম্যাগনেটিক রিপালশন সিস্টেম বেস্ড সুইফ্ট ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন (চৌম্বকীয় বিকর্ষণ সম্পন্ন) পদ্ধতিতে চলবে এই ট্রেন। দুই জোড়া চুম্বক ঠেলে এগিয়ে দেবে ট্রেনটিকে। ফলে যাত্রা হবে আরামদায়ক ও দ্রুত।
০৮১৪
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ন্যাশনাল অ্যাডভাইজ়ার ব্যুরো লিমিটেডের পরিকল্পনা অনুসারে দু’হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করা যাবে এই রেলপথের মাধ্যমে। সমুদ্রের তলদেশের মনোমুগ্ধকর পরিবেশে রোমাঞ্চকর ভ্রমণের স্বাদ নিতে পারবেন যাত্রীরা। এক অনন্য অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে পারবেন যাত্রীরা।
০৯১৪
ভারত ও আরবের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ন্যাশনাল অ্যাডভাইজ়ার ব্যুরো এই প্রকল্পের প্রস্তাব করে বেশ কয়েক বছর আগে। বুলেট ট্রেনটি চালু হলে দু’দেশের নাগরিকের যাতায়াতের যেমন সুবিধা বাড়বে, তেমনই আরব ও ভারতের বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও লক্ষ্মীলাভ হবে।
১০১৪
সম্প্রতি ন্যাশনাল অ্যাডভাইজ়ার ব্যুরো লিমিটেডের প্রতিনিধি বলে দাবি করা একটি সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্টের তরফে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে। রেলপথটি তৈরি হওয়ার পর তা কেমন দেখতে লাগবে তারই কাল্পনিক দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে ভিডিয়োটিতে। বিশেষ প্রযুক্তির এই উচ্চগতির ট্রেন ও রেলপথের জন্য প্রয়োজন কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ।
১১১৪
চাহিদার প্রায় ৮৫ শতাংশ তেল আমদানি করে ভারত। হরমুজ প্রণালী দিয়েই সৌদি আরব, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে অপরিশোধিত তেল বয়ে আনে দেশীয় তেল সংস্থাগুলি। এই জলপথ দিয়েই বিশ্বের অধিকাংশ তেল আমদানি-রফতানি হয়। ভারতে সৌদি আরব দিনে ৬৩ লক্ষ ব্যারেল তেল রফতানি করে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, কুয়েত, কাতার, ইরাক করে ৩৩ লক্ষ ব্যারেল। ইরান পাঠায় ১৩ লক্ষ ব্যারেল।
১২১৪
এই রেলপথ চালু হলে নয়া যাত্রাপথে কম সময়ে তেল এসে পৌঁছবে ভারতে। সহজতর হয়ে উঠবে সেই যাত্রা। এই বিপুল গতিসম্পন্ন ট্রেনটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে দৃঢ় করবে এমনটাই আশা করছেন দু’দেশের বাণিজ্যিক মহলের কর্তারা।
১৩১৪
ট্রেনগুলিতে যাত্রী পরিবহণ ছাড়াও জল, তেল বিনিময় হবে এই পথে। ফুজাইরাহ থেকে তেল আসবে মুম্বই বিমানবন্দরে আর নর্মদা নদীর জল যাবে ওই দেশে। রেলপথে যুক্ত করা গেলে সেখান থেকে আরও সস্তায়, সহজে ও দ্রুত অপরিশোধিত তেল ভারতে আনা ও জল পাঠানো যেতে পারে।
১৪১৪
এটি চালু হলে ভারতের ক্ষেত্রে এটি হবে প্রথম সমুদ্র রেলপথ। বিদেশে এই ধরনের পরিষেবা ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে। জাপান, কোরিয়া, কানাডায় রয়েছে এই ধরনের ব্যবস্থা। অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, ইজ়রায়েল, ব্রিটেনও চেষ্টা করছে এই রেলপথকে তাদের দেশে চালু করার।