All you need to know about Lun-class ekranoplan dgtl
Ground-effect vehicle
বহু যুদ্ধবিমান নিয়ে উড়ত সমুদ্রের উপর দিয়ে! কোথায় গেল ‘কাস্পিয়ান সাগরের দৈত্য’?
লুন-শ্রেণির এক্রানোপ্লান পৃথিবীর একমাত্র জিইভি যেটি যুদ্ধযান হিসাবে কাস্পিয়ান সাগরের উপর মোতায়েন করা হয়েছিল। অন্য এক্রানোপ্লানগুলি যুদ্ধের জন্য ব্যবহার করা হয়নি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:১৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
‘গ্রাউন্ড এফেক্ট ভেহিক্যাল (জিইভি)’, এমন একটি যান যা ভূপৃষ্ঠ বা সমুদ্রপৃষ্ঠের সামান্য উচ্চতায় উচ্চগতিতে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে।
০২১৭
সহজ ভাবে বোঝালে, বাতাসের চাপে বিমান উড়তে পারে৷ রানওয়েতে দৌড়নোর সময় গতি বৃদ্ধি পেলে বিমানের দু’পাশের ডানা বাতাস সজোরে চাপ দেয়। ফলে অভিকর্ষজ টান কাটিয়ে বাতাসে ভেসে থাকে বিমান। একে ‘গ্রাউন্ড এফেক্ট’ বলে।
০৩১৭
মূলত এই তত্ত্বের উপরে দাঁড়িয়েই জিইভি তৈরি হয়েছে। তবে জিইভি সাধারণ বিমানের থেকে আকারে অনেক বড় এবং অনেক ভারী। বহনক্ষমতাও অনেক বেশি।
০৪১৭
এক নজরে দেখলে জিইভিকে অনেকটা জাহাজ এবং বিমানের মিশ্রণ বলে মনে হতে পারে। তবে একটি জিইভির ভিতরে এঁটে যেতে পারে বেশ কয়েকটি সাধারণ বিমান। জিইভি পরিচিত এক্রানোপ্লান নামেও।
০৫১৭
লুন-শ্রেণির এক্রানোপ্লান পৃথিবীর একমাত্র জিইভি যেটি যুদ্ধযান হিসাবে কাস্পিয়ান সাগরের উপর মোতায়েন করা হয়েছিল। অন্য এক্রানোপ্লানগুলি যুদ্ধের কাজে ব্যবহার করা হয়নি।
০৬১৭
১৯৭৫ সালে এক্রানোপ্লানের নকশা তৈরি করেন রোস্টিস্লাভ আলেক্সিয়েভ। ১৯৭৫ সালের পর থেকেই সোভিয়েত সেনার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে দাঁড়ায় এক্রানোপ্লান। সোভিয়েত পতনের পর রাশিয়ার নৌবাহিনীও দীর্ঘ দিন সেই যান ব্যবহার করেছিল। এক সময়ে বিশ্বের ত্রাস হয়ে উঠেছিল এই যান।
০৭১৭
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় চার মিটার বা প্রায় ১৩ ফুট উঁচু দিয়ে উড়তে পারত এক্রানোপ্লান। বড় বড় ডানা দিয়ে বাতাস কেটে এগিয়ে যেতে পারত সেই ‘রাক্ষুসে’ বিমান।
০৮১৭
বিমানের মতো দেখতে হলেও এক্রানোপ্লানগুলিকে বিমান বা হোভারক্রাফ্ট হিসাবে ধরা হত না। বরং এক্রানোপ্লানকে জাহাজ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছিল ‘ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন’।
০৯১৭
‘গ্রাউন্ড এফেক্টের’ কারণে এক্রানোপ্লান সমুদ্র বা জলপৃষ্ঠের কয়েক মিটার উঁচু দিয়ে উড়তে পারত।
১০১৭
লুন-শ্রেণির এক্রানোপ্লানটি পরীক্ষামূলক কেএম এক্রানোপ্লানের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছিল। যার নাম দেওয়া হয়েছিল, ‘কাস্পিয়ান সাগরের দৈত্য’।
১১১৭
লুন এক্রানোপ্লান চলত আটটি ‘কুজনেটসভ এনকে-৮৭’ যান্ত্রিক পাখার সাহায্যে। এক্রানোপ্লানটি সর্বোচ্চ ৫৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে ছুটে যেতে পারত।
১২১৭
জলপথে শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তৈরি ওই যুদ্ধযানে ছিল পি-২৭০ মসকিট ক্ষেপণাস্ত্র।
১৩১৭
তবে শীঘ্রই সেই যান বাতিল হয়ে যায়। এক্রানোপ্লানটির নকশায় বেশ কিছু ত্রুটি ছিল। ‘গ্রাইন্ড এফেক্টের’ কারণে জলের উপর উড়তে সক্ষম হলেও স্থলপথে ওড়ার সময় যানটির দুর্ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল ছিল।
১৪১৭
পাশাপাশি, বেশি উঁচুতে উড়তে সক্ষম ছিল না বলে খুব সহজেই শত্রুদের হামলার মুখে পড়ার আশঙ্কাও বাড়ছিল। তাই পরবর্তী কালে এক্রানোপ্লান না তৈরির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে রাশিয়া।
১৫১৭
দ্বিতীয় লুন-শ্রেণির এক্রানোপ্লানটি আশির দশকের শেষের দিকে তৈরি করা হয়েছিল। যখন এটির নির্মাণ কাজ চলছিল, তখন এটিকে একটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল হিসেবে তৈরির কথা ভাবা হচ্ছিল। ঠিক হয়, নতুন জিইভি তথা এক্রানোপ্লানটির নাম দেওয়া হবে ‘স্প্যাসেটেল’ (উদ্ধারকারী)।
১৬১৭
তবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত পতনের পর ওই যানের নির্মাণ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে সেই অসম্পূর্ণ যানটি ভলগা নদী সংলগ্ন মধ্য রাশিয়ার নিঝনি নোভগোরোড শহরের একটি পুরনো শিল্পকর্মশালায় সংরক্ষিত রয়েছে।
১৭১৭
রাশিয়া ছাড়া জার্মানিও জিইভি তৈরির দিকে এগিয়েছিল। কিন্তু পরে সে দেশেও জিইভি তৈরি বন্ধ হয়ে যায়।