All you need to know about India's new parliament house of 2023 and inside story of it dgtl
New Parliament Building
থিম ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’, নতুন সংসদ ভবনের দ্বার পাহারা দেবে পুরাণের রক্ষীরা
ঢেলে সাজানো হয়েছে সংসদ ভবনের অন্দর। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বিখ্যাত উপকরণ নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন সংসদ ভবন। নাগপুরের সেগুনকাঠ থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর থেকে আনা কার্পেট! কী নেই সেখানে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৪৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৫
২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর। নয়া সংসদ ভবনের ভূমিপূজা এবং শিলান্যাস করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রায় আড়াই বছর ধরে চলেছিল ভবন নির্মাণের কাজ। এর পর ২০২৩ সালের ২৮ মে উদ্বোধন হয়েছিল নতুন সংসদ ভবনের। উদ্বোধনের আগে ভবনের মাটি ছুঁয়ে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করেছিলেন মোদী।
০২২৫
সেই সংসদ ভবনেই মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রবেশ করলেন সাংসদেরা। দুপুর ১টা ১৫ মিনিট থেকে নতুন লোকসভা ভবনে শুরু হল সংসদের বিশেষ অধিবেশন।
০৩২৫
নতুন ভবনে প্রবেশকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রস্তুতি ছিল তুঙ্গে। নতুন সংসদ ভবনে প্রবেশের আগে পুরনো সংসদ ভবনের সামনে ‘ফটোসেশন’ করেন সাংসদরা। মধ্যমণি হয়ে ছবি তুলতে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রীও।
০৪২৫
পুরনো সংসদ ভবন থেকে নতুন সংসদ ভবনে সংবিধান নিয়ে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। নতুন সংসদ ভবনের নাম ‘পার্লামেন্ট হাউস অফ ইন্ডিয়া’।
০৫২৫
নতুন সংসদ ভবনের মোট ছ’টি প্রবেশদ্বার রয়েছে। আর সেই ছয় দরজায় পাহারায় রয়েছে ছয় ‘বিশেষ’ রক্ষী।
০৬২৫
কয়েকটি বাস্তবের এবং কয়েকটি পৌরাণিক কাহিনির প্রাণীর মূর্তি বসানো হয়েছে ছ’টি দরজায়। প্রত্যেকটি মূর্তি সংসদের বিভিন্ন দিক নির্দেশ করে।
০৭২৫
এই ছ’টি প্রবেশদ্বার হল— গজ দ্বার, অশ্ব দ্বার, গরুড় দ্বার, মকর দ্বার, শার্দুল দ্বার এবং হংস দ্বার। প্রতিটি দরজায় একটি করে প্রাণীর ভাস্কর্য রয়েছে। সেই অনুযায়ী দরজাগুলির নামকরণ করা হয়েছে।
০৮২৫
গজ দ্বারের নামকরণ করা হয়েছে হাতির নামে, যা বুদ্ধি, স্মৃতি, সম্পদ এবং প্রজ্ঞার প্রতিনিধিত্ব করে। এই দরজাটি ভবনের উত্তর দিকে। বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী, উত্তর দিক বুধের সঙ্গে যুক্ত এবং বুদ্ধির উৎস বলে।
০৯২৫
ঘোড়ার নামানুসারে অশ্ব দ্বার নামকরণ করা হয়েছে। শক্তি এবং সাহসের প্রতীক ঘোড়া।
১০২৫
নতুন সংসদ ভবনের তৃতীয় প্রবেশদ্বারের নাম রাখা হয়েছে গরুড় দ্বার। এটি সংসদ ভবনের পূর্ব দিকের প্রবেশদ্বার। পৌরাণিক মতে গরুড় পক্ষীরাজ। গরুড়কে বিষ্ণুর বাহন বলে মনে করা হয়। গরুড়কে ধর্ম এবং কর্তব্যের প্রতীক বলে মনে করা হয়।
১১২৫
মকর দ্বার নতুন সংসদ ভবনের চতুর্থ দ্বার। কিংবদন্তি সামুদ্রিক প্রাণীর নামে এই দ্বারের নামকরণ করা হয়েছে, যা বিভিন্ন প্রাণীর সংমিশ্রণ।
১২২৫
পঞ্চম দরজার নাম শার্দুল দ্বার। যা আর একটি পৌরাণিক প্রাণীর নামানুসারে তৈরি হয়েছে। শার্দুলের শরীর সিংহের, কিন্তু মাথা ঘোড়া, হাতি বা তোতাপাখির। সরকারি সূত্রে খবর, নতুন সংসদ ভবনের গেটে শার্দুলের উপস্থিতি দেশের জনগণের শক্তির প্রতীক।
১৩২৫
হংস দ্বার সংসদের ষষ্ঠ এবং অন্তিম দ্বার। রাজহাঁসের নামে নামকরণ করা হয়েছে এই দ্বারের। পুরাণ অনুযায়ী, হংস হল জ্ঞানের দেবী সরস্বতীর বাহন। মনে করা হয় হংস মোক্ষ, আত্ম-উপলব্ধি এবং প্রজ্ঞার প্রতীক।
১৪২৫
এই ছ’টি দ্বার ছাড়াও ঢেলে সাজানো হয়েছে সংসদ ভবনের অন্দরমহল। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বিখ্যাত উপকরণ নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন সংসদ ভবন। নাগপুরের সেগুনকাঠ থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর থেকে আনা কার্পেট, কী নেই সেখানে!
১৫২৫
নতুন সংসদ ভবন নির্মাণে দেশ জুড়ে বিভিন্ন রাজ্যের নামীদামি শিল্পকর্মের ব্যবহার করা হয়েছে। ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর ধারণাকে তুলে ধরতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে সরকারি সূত্রে খবর।
১৬২৫
রাজস্থানের সরমথুরা থেকে লাল এবং সাদা বেলেপাথর এনে তৈরি হয়েছে সংসদ ভবনের একাংশ। লাল কেল্লা এবং হুমায়ুনের সমাধি তৈরিতে ব্যবহৃত বেলেপাথরও সরমথুরা থেকেই আনা। ভবনটিতে ব্যবহৃত সেগুনকাঠ আনা হয়েছে মহারাষ্ট্রের নাগপুর থেকে। সংসদের গালিচাগুলি উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর থেকে আনানো।
১৭২৫
নতুন সংসদ ভবন তৈরিতে ব্যবহৃত কেশরিয়া সবুজ মার্বেল পাথর উদয়পুর, লাল গ্রানাইট পাথর অজমেরের লাখা এবং সাদা মার্বেল পাথর রাজস্থানের আমবাজি থেকে আনা। ভবনের ভিতরে থাকা সমস্ত আসবাবপত্র তৈরি হয়েছে বাণিজ্যনগরী মুম্বইতে।
১৮২৫
নতুন সংসদ ভবনের উচ্চ এবং নিম্নকক্ষ (রাজ্যসভা এবং লোকসভা)-এর ‘ফলস সিলিং’ তৈরিতে ব্যবহৃত ইস্পাতের কাঠামো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দমন এবং দিউ থেকে আনানো।
১৯২৫
ভবনের পাথরের ‘জালি’র কাজগুলি রাজস্থানের রাজনগর এবং উত্তরপ্রদেশের নয়ডা থেকে আনানো হয়েছিল। নতুন সংসদ ভবনে থাকা অশোকস্তম্ভে ব্যবহৃত উপকরণগুলি মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদ এবং রাজস্থানের জয়পুর থেকে আমদানি করা।
২০২৫
লোকসভা, রাজ্যসভার বিশাল দেওয়াল এবং সংসদ ভবনের বাইরে থাকা অশোকচক্র মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে তৈরি করা। ভবনের অন্দরে ব্যবহৃত পাথরের খোদাইয়ের কাজ করেছেন রাজস্থানের আবু রোড এবং উদয়পুরের ভাস্কররা। নতুন সংসদ ভবন তৈরিতে ব্যবহৃত অনেক পাথর রাজস্থানের কোতপুতালি থেকেও আনা হয়েছিল।
২১২৫
নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের জন্য বালি (যা কালো বালি বা এম-বালি নামেও পরিচিত) আনা হয়েছে হরিয়ানার চরখি দাদরি থেকে। নির্মাণে ব্যবহৃত ইট হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে আনানো হয়েছিল। সংসদ ভবনের পিতলের কারুকার্যের জন্য ব্যবহৃত পিতল আনা হয়েছে গুজরাতের আমদাবাদ থেকে।
২২২৫
নতুন লোকসভা হলে মোট আসনের সংখ্যা ৮৮৮। নতুন সংসদের নিম্নকক্ষের নকশা ভারতের জাতীয় পাখি ময়ূরের থিমের উপর তৈরি করা হয়েছে।
২৩২৫
উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার অন্দরের নকশা তৈরি হয়েছে জাতীয় ফুল পদ্মের থিমে। রাজ্যসভা হলের মোট আসনসংখ্যা ৩০০টি।
২৪২৫
নতুন সংসদ ভবনে পাকাপাকি ভাবে স্থান পেতে চলেছে স্বর্ণদণ্ড ‘সেঙ্গল’। বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে সেটিকে স্পিকারের চেয়ারের সামনে রাখা হবে। তবে এই সেঙ্গল নিয়েও তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
২৫২৫
কেন্দ্রের শাসকদলের তরফে দাবি করা হচ্ছে, ব্রিটিশরা ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক হিসাবে সেঙ্গল তুলে দিয়েছিল জওহরলাল নেহরুর হাতে। প্রাচীন চোল সাম্রাজ্যের রীতি অনুসারে গোপালাচারীর অনুপস্থিতিতেই লর্ড মাউন্টব্যাটেন ১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট এই স্মারক তুলে দেন নেহরুর হাতে। যদিও কংগ্রেসের তরফে ‘মিথ্যা এবং আজগুবি’ বলে বিজেপির এই দাবি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, সেঙ্গলের বিষয়ে কোনও প্রামাণ্য নথি নেই।