Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Giovanni Vigliotto

আইনি বিচ্ছেদ না করেই ১০৫টি বিয়ে! নাম-পরিচয় নিয়েও ঘোল খাইয়েছিলেন জিওভানি

এক শহর থেকে পালিয়ে জিওভানি আশ্রয় নিতেন অন্য শহরে। আগের স্ত্রীর হাতিয়ে নেওয়া টাকা দিয়ে এবং গয়না বিক্রি করে জীবন কাটাতে কাটাতেই চলত নতুন ‘শিকারের’ খোঁজ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:০৩
Share: Save:
০১ ২১
জিওভানি ভিজিলিওত্তো। সারা জীবনে ১০০-রও বেশি মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন ‌আমেরিকার এই প্রতারক। আর তাই তাঁকে বিশ্বের সব থেকে বড় ‘বিগামিস্ট’ (যাঁরা কোনও আইনি বিচ্ছেদ না করেই একের পর এক বিয়ে করেন) বলে গণ্য করা হয়।

জিওভানি ভিজিলিওত্তো। সারা জীবনে ১০০-রও বেশি মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন ‌আমেরিকার এই প্রতারক। আর তাই তাঁকে বিশ্বের সব থেকে বড় ‘বিগামিস্ট’ (যাঁরা কোনও আইনি বিচ্ছেদ না করেই একের পর এক বিয়ে করেন) বলে গণ্য করা হয়।

০২ ২১
১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৮১ সালের মধ্যে শতাধিক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন জিওভানি। কিন্তু কোনও স্ত্রীর সঙ্গেই তিনি আইনি প্রক্রিয়া মেনে বিচ্ছেদ করেননি।

১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৮১ সালের মধ্যে শতাধিক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন জিওভানি। কিন্তু কোনও স্ত্রীর সঙ্গেই তিনি আইনি প্রক্রিয়া মেনে বিচ্ছেদ করেননি।

০৩ ২১
সম্প্রতি জিওভানির জীবন কাহিনির বিবরণ দিয়ে টুইটারে একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস। সেখানেই তাঁর শতাধিক বিয়ে করার উল্লেখ রয়েছে।

সম্প্রতি জিওভানির জীবন কাহিনির বিবরণ দিয়ে টুইটারে একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস। সেখানেই তাঁর শতাধিক বিয়ে করার উল্লেখ রয়েছে।

০৪ ২১
মনে করা হয়, জিওভানি তাঁর আসল নামও ছিল না। মূলত জিওভানি পরিচয়েই তিনি বহু মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। মাঝেমধ্যে ব্যবহার করতেন অন্য নামও।

মনে করা হয়, জিওভানি তাঁর আসল নামও ছিল না। মূলত জিওভানি পরিচয়েই তিনি বহু মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। মাঝেমধ্যে ব্যবহার করতেন অন্য নামও।

০৫ ২১
এ-ও মনে করা হয়, শেষ স্ত্রীকে বিয়ে করার সময় জিওভানি নাকি তাঁর আসল নাম ব্যবহার করেছিলেন।

এ-ও মনে করা হয়, শেষ স্ত্রীকে বিয়ে করার সময় জিওভানি নাকি তাঁর আসল নাম ব্যবহার করেছিলেন।

০৬ ২১
কিন্তু কেন আইনি বিচ্ছেদ না করে একের পর এক বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন জিওভানি! বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি মূলত উচ্চবিত্ত পরিবারের মহিলাদেরই ‘শিকার’ বানাতেন। অল্পবয়সি বিত্তশালী বিধবাদের প্রেমের ‘ফাঁদে’ ফেলতেন জিওভানি।

কিন্তু কেন আইনি বিচ্ছেদ না করে একের পর এক বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন জিওভানি! বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি মূলত উচ্চবিত্ত পরিবারের মহিলাদেরই ‘শিকার’ বানাতেন। অল্পবয়সি বিত্তশালী বিধবাদের প্রেমের ‘ফাঁদে’ ফেলতেন জিওভানি।

০৭ ২১
শেষমেশ নিজের ‘কুকীর্তি’ লুকিয়ে রাখতে পারেননি জিওভানি। ধরা পড়ার সময় তার বয়স ছিল ৫৩ বছর। সেই সময় জিওভানি দাবি করেন, ১৯২৯ সালের ৩ এপ্রিল ইটালির সিসিলি দ্বীপের সিরাকুসায় তাঁর জন্ম।

শেষমেশ নিজের ‘কুকীর্তি’ লুকিয়ে রাখতে পারেননি জিওভানি। ধরা পড়ার সময় তার বয়স ছিল ৫৩ বছর। সেই সময় জিওভানি দাবি করেন, ১৯২৯ সালের ৩ এপ্রিল ইটালির সিসিলি দ্বীপের সিরাকুসায় তাঁর জন্ম।

০৮ ২১
এ-ও জানিয়েছিলেন, তার আসল নাম নাকি নিকোলাই পেরুসকভ। যদিও সরকারি আইনজীবীর দাবি ছিল, জিওভানির আসল নাম ফ্রেড জিপ এবং ১৯২৯ নয়, ১৯৩৬ সালের ৩ এপ্রিল তাঁর জন্ম।

এ-ও জানিয়েছিলেন, তার আসল নাম নাকি নিকোলাই পেরুসকভ। যদিও সরকারি আইনজীবীর দাবি ছিল, জিওভানির আসল নাম ফ্রেড জিপ এবং ১৯২৯ নয়, ১৯৩৬ সালের ৩ এপ্রিল তাঁর জন্ম।

০৯ ২১
সরকারি আইনজীবী এ-ও দাবি করেন, জন্মস্থান নিয়েও মিথ্যে বলছেন জিওভানি। ইটালি নয়, আসলে নাকি আমেরিকার নিউ ইয়র্কে জন্মেছিলেন তিনি।

সরকারি আইনজীবী এ-ও দাবি করেন, জন্মস্থান নিয়েও মিথ্যে বলছেন জিওভানি। ইটালি নয়, আসলে নাকি আমেরিকার নিউ ইয়র্কে জন্মেছিলেন তিনি।

১০ ২১
সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, ১৯৪৯ থেকে ১৯৮১-এর মধ্যে সালের মধ্যে জিওভানি ১০৫ জন মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। এবং তাঁর স্ত্রীরা কেউই একে অপরকে চিনতেন না।

সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, ১৯৪৯ থেকে ১৯৮১-এর মধ্যে সালের মধ্যে জিওভানি ১০৫ জন মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। এবং তাঁর স্ত্রীরা কেউই একে অপরকে চিনতেন না।

১১ ২১
প্রতি বারই জাল পরিচয় ব্যবহার করে মোট ১৪টি দেশের মহিলাদের বিয়ে করেছিলেন জিওভানি। যার মধ্যে শুধু আমেরিকারই ২৭টি শহরের মহিলাদের তিনি বিয়ে করেছিলেন।

প্রতি বারই জাল পরিচয় ব্যবহার করে মোট ১৪টি দেশের মহিলাদের বিয়ে করেছিলেন জিওভানি। যার মধ্যে শুধু আমেরিকারই ২৭টি শহরের মহিলাদের তিনি বিয়ে করেছিলেন।

১২ ২১
জিওভানি মহিলাদের সঙ্গে মূলত আলাপ জমাতেন বাড়ির বাইরে। রেস্তরাঁ বা সব্জি বাজারে। প্রথম আলাপের কয়েক দিনের মধ্যেই বিয়ের প্রস্তাব দিতেন ইনিয়ে বিনিয়ে। মহিলা রাজি হলে কোনও কারণ দেখিয়ে দিন কয়েকের মধ্যেই বিয়ে ঠিক করে ফেলতেন। স্ত্রীর মনে বিশ্বাস তৈরি করতে আইনি প্রক্রিয়া মেনেই তিনি বিয়েগুলি করতেন।

জিওভানি মহিলাদের সঙ্গে মূলত আলাপ জমাতেন বাড়ির বাইরে। রেস্তরাঁ বা সব্জি বাজারে। প্রথম আলাপের কয়েক দিনের মধ্যেই বিয়ের প্রস্তাব দিতেন ইনিয়ে বিনিয়ে। মহিলা রাজি হলে কোনও কারণ দেখিয়ে দিন কয়েকের মধ্যেই বিয়ে ঠিক করে ফেলতেন। স্ত্রীর মনে বিশ্বাস তৈরি করতে আইনি প্রক্রিয়া মেনেই তিনি বিয়েগুলি করতেন।

১৩ ২১
বিয়ের পর কয়েক দিন সংসার করার পরই নতুন স্ত্রীর অর্থ এবং গয়না নিয়ে পালিয়ে যেতেন জিওভানি।

বিয়ের পর কয়েক দিন সংসার করার পরই নতুন স্ত্রীর অর্থ এবং গয়না নিয়ে পালিয়ে যেতেন জিওভানি।

১৪ ২১
বিয়ের কিছু দিনের মধ্যে সদ্যবিবাহিতা স্ত্রীকে জিওভানি বলতেন, কর্মসূত্রে তাঁকে অনেক দূরে যেতে হবে। স্ত্রীকেও সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার কথা বলতেন তিনি। জিওভানির কথা শুনে স্ত্রী টাকা, গয়না, জামাকাপড়ের ব্যাগ গুছিয়ে ফেললে তিনি সেই ব্যাগ নিয়ে চম্পট দিতেন।

বিয়ের কিছু দিনের মধ্যে সদ্যবিবাহিতা স্ত্রীকে জিওভানি বলতেন, কর্মসূত্রে তাঁকে অনেক দূরে যেতে হবে। স্ত্রীকেও সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার কথা বলতেন তিনি। জিওভানির কথা শুনে স্ত্রী টাকা, গয়না, জামাকাপড়ের ব্যাগ গুছিয়ে ফেললে তিনি সেই ব্যাগ নিয়ে চম্পট দিতেন।

১৫ ২১
এক শহর থেকে পালিয়ে জিওভানি আশ্রয় নিতেন অন্য শহরে। আগের স্ত্রীর হাতিয়ে নেওয়া টাকা দিয়ে এবং গয়না বিক্রি করে জীবন কাটাতে কাটাতেই চলত নতুন ‘শিকারের’ খোঁজ।

এক শহর থেকে পালিয়ে জিওভানি আশ্রয় নিতেন অন্য শহরে। আগের স্ত্রীর হাতিয়ে নেওয়া টাকা দিয়ে এবং গয়না বিক্রি করে জীবন কাটাতে কাটাতেই চলত নতুন ‘শিকারের’ খোঁজ।

১৬ ২১
এ ভাবেই জীবন কাটছিল জিওভানির। এর মধ্যেই আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশের থানায় জিওভানির নামে বহু অভিযোগ জমা পড়তে থাকে।

এ ভাবেই জীবন কাটছিল জিওভানির। এর মধ্যেই আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশের থানায় জিওভানির নামে বহু অভিযোগ জমা পড়তে থাকে।

১৭ ২১
জিওভানির শেষ স্ত্রী ছিলেন শ্যারন ক্লার্ক। তিনি ইন্ডিয়ানায় মোটা বেতনের চাকরি করতেন। সামাজিক পরিচিতিও ছিল অন্যদের থেকে বেশি।

জিওভানির শেষ স্ত্রী ছিলেন শ্যারন ক্লার্ক। তিনি ইন্ডিয়ানায় মোটা বেতনের চাকরি করতেন। সামাজিক পরিচিতিও ছিল অন্যদের থেকে বেশি।

১৮ ২১
জিওভানি তাঁর টাকাপয়সা হাতিয়ে পালালে শ্যারন তাঁকে খুঁজে বার করার পণ নেন। অনেক দিন ধরে তন্নতন্ন করে খোঁজ চালানোর পর শ্যারন জানতে পারেন জিওভানি ফ্লোরিডায় আছেন। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে জিওভানির নতুন আস্তানায় হানা দেন শ্যারন। ১৯৮১ সালের ২৮ ডিসেম্বর গ্রেফতার হন জিওভানি।

জিওভানি তাঁর টাকাপয়সা হাতিয়ে পালালে শ্যারন তাঁকে খুঁজে বার করার পণ নেন। অনেক দিন ধরে তন্নতন্ন করে খোঁজ চালানোর পর শ্যারন জানতে পারেন জিওভানি ফ্লোরিডায় আছেন। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে জিওভানির নতুন আস্তানায় হানা দেন শ্যারন। ১৯৮১ সালের ২৮ ডিসেম্বর গ্রেফতার হন জিওভানি।

১৯ ২১
১৯৮৩ সালের জানুয়ারিতে জিওভানির বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। তাঁকে মোট ৩৪ বছর কারাবাসের সাজা শোনানো হয়। যার মধ্যে জালিয়াতির জন্য ২৮ এবং আইন না মেনে একের পর এক বিয়ে করার জন্য ছ’বছরের সাজা শোনানো হয়। জরিমানাও করা হয় কোটি কোটি টাকা।

১৯৮৩ সালের জানুয়ারিতে জিওভানির বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। তাঁকে মোট ৩৪ বছর কারাবাসের সাজা শোনানো হয়। যার মধ্যে জালিয়াতির জন্য ২৮ এবং আইন না মেনে একের পর এক বিয়ে করার জন্য ছ’বছরের সাজা শোনানো হয়। জরিমানাও করা হয় কোটি কোটি টাকা।

২০ ২১
জীবনের শেষ আট বছর অ্যারিজোনা স্টেট কারাগারে কাটিয়েছিলেন জিওভানি। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে ১৯৯১ সালে ৬১ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

জীবনের শেষ আট বছর অ্যারিজোনা স্টেট কারাগারে কাটিয়েছিলেন জিওভানি। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে ১৯৯১ সালে ৬১ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

২১ ২১
তবে বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন একবারের জন্যও নিজের দোষ স্বীকার করেননি জিওভানি। উল্টে তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর একমাত্র অপরাধ ছিল মহিলাদের প্রতি দুর্বলতা। বিচার চলাকালীন নিজেকে ‘আবেগপ্রবণ প্রেমিক’ বলেও দাবি করেন জিওভানি।

তবে বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন একবারের জন্যও নিজের দোষ স্বীকার করেননি জিওভানি। উল্টে তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর একমাত্র অপরাধ ছিল মহিলাদের প্রতি দুর্বলতা। বিচার চলাকালীন নিজেকে ‘আবেগপ্রবণ প্রেমিক’ বলেও দাবি করেন জিওভানি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy