বিওয়াইসির নেতা মাহরাং বালুচের নেতৃত্বে বালুচিস্তানের বহু মানুষ রবিবার গ্বদরের উপান্তে জড়ো হয়েছিলেন। মূল উদ্দেশ্য, পাকিস্তানি পুলিশের হাতে আটক প্রতিবাদীদের মুক্তি এবং বালুচিস্তানের উপর দিয়ে যাওয়া চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর (সিপিইসি)-এর বিরোধিতা করা। পাশাপাশি গ্বদরে বালুচদের অবাধে প্রবেশের দাবি তুলেও রাস্তায় নামেন তাঁরা।
অভিযোগ, এই নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলাকালীন প্রতিবাদীদের উপর চড়াও হয় নিরাপত্তবাহিনী। নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। বিক্ষোভ দমন করতে সমাবেশ থেকে বহু মহিলা এবং পুরুষকে আটক করার অভিযোগও উঠেছে সে দেশের বাহিনীর বিরুদ্ধে। এর পরে উত্তেজনা আরও ছড়ায়। বালুচিস্তানের মানুষের ক্ষোভ আরও তীব্র হয়। মাস্তুং থেকে তুরবত এবং খুজদার থেকে কোয়েটা পর্যন্ত প্রতিটি শহরই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বছর দুয়েক ধরে পাকিস্তানের অর্থনীতির উপর দিয়ে ঝড় বয়ে চলেছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার তলানিতে ঠেকেছে। ইসলামাবাদের উপর ভারী হয়েছে ঋণের বোঝা। এই পরিস্থিতিতে দেশটি দেউলিয়া হয়ে যেতে বসেছিল। তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় চিন। তারা পাকিস্তানকে অর্থসাহায্য করেছে। সে দেশে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প শুরু করেছে বেজিং।
পাকিস্তানের উপর দিয়ে তিন হাজার কিলোমিটারের চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর (সিপিইসি) তৈরি করছে বেজিং। এই প্রকল্পের আওতায় পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ অংশে রাস্তা এবং রেলপথ নির্মিত হবে। চিনের কাশগড় থেকে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর হয়ে ইসলামাবাদ, লাহোর পেরিয়ে আরব সাগরের তীরে গ্বদর পর্যন্ত বিস্তৃত সিপিইসি। এই করিডর নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছে চিন।
বালুচিস্তানের মানুষের সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের বিরোধ দীর্ঘ দিনের। এই অঞ্চলের মানুষ পাক সরকারকে স্বীকার করে না। বরং তাদের দাবি, জোর করে তাদের পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বালুচিস্তানের দাবি, পাকিস্তানের জন্মের পর ১৯৪৮ সালের ২৭ মার্চ অন্যায় ভাবে বালুচিস্তান দখল করে পাক সেনা। তার আগে এটি একটি স্বাধীন প্রদেশ ছিল।
বর্তমানে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ বালুচিস্তান। এটি নানা সম্পদের খনি। বালুচিস্তানের মাটিতে লুকিয়ে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সাফল্যের বীজ। অথচ, এই বালুচিস্তানকেই সবচেয়ে অবহেলা করা হয় বলে অভিযোগ। এখানে পাক সরকারের কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হয় না। তাই অনেক ক্ষেত্রেই এখনও অনেক পিছিয়ে বালুচিস্তান। অভিযোগ, এই প্রদেশের মানুষকে পিছনে রেখে কেবল এখানকার সম্পদ ব্যবহার করে কার্যসিদ্ধি করে পাক সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy