All about the first porn film and the history behind making adult movies dgtl
History of Pornography
সাত মিনিটের স্নানদৃশ্য, নদীর ধারে সঙ্গম! কেমন ছিল বিশ্বের প্রথম পর্ন ছবি?
পর্নোগ্রাফির সূচনা কোথায়? কবে থেকে ব্যক্তির নিভৃত পরিসরে জায়গা করে নিল নীলছবি? কোথায়, কী ভাবে তার শ্যুটিং হল? রইল পর্নোগ্রাফির সেই ইতিহাসের হদিস।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৩ ১১:৩২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
রাষ্ট্রীয় লাগাম, নিষেধাজ্ঞা, নজরদারি, পর্নোগ্রাফির উপর বার বার রাশ টেনেছে সরকার। কিন্তু এই ধরনের ছবি তৈরি বন্ধ করা যায়নি। কমেনি পর্নোগ্রাফির জনপ্রিয়তাও। নাগরিক সভ্যতার আড়ালে যৌন চাহিদা পরিতৃপ্ত করতে আজও বহু মানুষ নীলছবির পর্দায় চোখ রাখেন।
০২১৮
স্মার্টফোন, আইফোনের যুগে নীলছবি সহজলভ্য। কোথাও টাকা খরচ করে, কোথাও বিনামূল্যে এই ছবি দেখতে পাওয়া যায়। বাজারে অজস্র পর্নোগ্রাফির ওয়েবসাইট বিরাজমান। তাদের জনপ্রিয়তাও গগনচুম্বী।
০৩১৮
কিন্তু এই পর্নোগ্রাফির সূচনা কোথায়? কবে থেকে ব্যক্তির নিভৃত পরিসরে জায়গা করে নিল নীলছবি? কোথায়, কী ভাবে তার শ্যুটিং হল?
০৪১৮
প্রথম সবাক চলচ্চিত্রের কয়েক বছর পরেই পৃথিবীতে পর্নোগ্রাফির সূচনা। প্রথম পর্নোগ্রাফি সিনেমার শুটিং হয় ১৮৯৬ সালে। চলচ্চিত্রের ‘অশ্লীলায়নে’ প্রথম এগিয়ে এসেছিল ফ্রান্স।
০৫১৮
ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা ইউজিন পিরৌ এবং অ্যালবার্ট কির্চনার চলচ্চিত্রে যৌনতার অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে প্রথম একটি ভিডিয়ো তৈরি করেন। স্বল্প দৈর্ঘ্যের সেই ছবির নাম দেওয়া হয় ‘লে কৌচের দে লা মারি’।
০৬১৮
পৃথিবীর প্রথম পর্ন বা অশ্লীল ছবি হিসাবে সাত মিনিটের ‘লে কৌচের দে লা মারি’র পরিচয় পাওয়া যায়। এই ছবিতে এক যুবতীর স্নানদৃশ্যের মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছিল। শৌচাগারে গিয়ে ওই যুবতী নিজের শরীর থেকে একের পর এক পোশাক খুলে ফেলছিলেন।
০৭১৮
নারী শরীরকে কামোৎসুক দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রকাশ করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের এই পন্থা অন্য ফরাসি নির্মাতাদেরও পছন্দ হয়েছিল। তাই ক্রমে পর্দায় সাহসী দৃশ্য ফুটিয়ে তুলতে শুরু করেন তাঁরা।
০৮১৮
‘ফতিমাস কুচি কুচি ডান্স’, ‘দ্য বার্থ অফ দ্য পার্ল’-এর মতো ছবিতে এর পর কিছু কিছু সাহসী নারীদেহকেন্দ্রিক দৃশ্য দেখানো হয়েছিল। ১৮৯৬ সালেই ‘দ্য মে ইরউইন কিস’ ছবিতে ৪৭ সেকেন্ডের একটি ক্লিপে দেখানো হয় প্রথম চুম্বনদৃশ্য।
০৯১৮
তবে সে সময় এই সাহসী ছবিগুলি রক্ষণশীল সমাজের কোপে পড়েছিল। রোমান ক্যাথলিক চার্চ ‘দ্য মে ইরউইন কিস’ ছবি থেকে চুম্বনদৃশ্যটি কেটে ফেলার নিদান দেয়। তৎকালীন সমাজে প্রকাশ্যে নারী পুরুষের চুম্বন ছিল শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
১০১৮
বিশ শতকের শুরুর দিকে অস্ট্রিয়ায় সিনেমা দেখার রীতিনীতি ছিল কিছুটা ভিন্ন। রাতের দিকে পুরুষেরা দল বেঁধে প্রেক্ষাগৃহে যেতেন। যেখানে নীলছবি দেখানো হত। ১৯০৬ থেকে ১৯১১ সাল পর্যন্ত এই থিয়েটারগুলিতে মোট ৫২টি যৌন উত্তেজক ছবি দেখানো হয়েছিল। স্থানীয় যুবতীদের নগ্ন দেহ দেখানো হত এই ছবিগুলিতে। নির্মাণের নেপথ্যে ছিলেন জোহান স্কোয়ার্জার। ১৯১১ সালে সেন্সরশিপ কর্তৃপক্ষ জোহানের সবকটি ছবি নষ্ট করে ফেলার নির্দেশ দেন।
১১১৮
আদ্যোপান্ত যৌন উত্তেজক, সঙ্গমদৃশ্য সম্বলিত প্রথম পর্নোগ্রাফি ছবির জন্ম কিন্তু ফ্রান্সে হয়নি। তার প্রেক্ষাপট লুকিয়ে আর্জেন্টিনায়। যদিও ফরাসি নির্মাতাদের ইন্ধনেই আর্জেন্টিনায় পর্নোগ্রাফির পথ চলা শুরু হয়।
১২১৮
ফ্রান্সে পর্ন ছবির উদ্ভাবকদের মধ্যে প্যাথে ব্রাদার্সের নাম করা হয়। তাঁদের হাত ধরেই বিশ শতকের শুরুর দিকে বুয়েনাস আইরেসের অলিগলিতে শুরু হয়েছিল ‘অশ্লীল’ ছবির শ্যুটিং। ফ্রান্সে রক্ষণশীল সমাজ এবং সরকারের চোখ এড়িয়ে পর্নোগ্রাফির উৎপাদন বৃদ্ধি করতে আর্জেন্টিনাকে বেছে নেওয়া হয়।
১৩১৮
সবচেয়ে প্রাচীন পর্নোগ্রাফি ছবি হিসাবে উঠে আসে আর্জেন্টিনার ‘এল সার্তোরিয়ো’ বা ‘এল সাতারিয়ো’র নাম। এই ছবিটিতে নারী, পুরুষের সঙ্গমদৃশ্য দেখানো হয়েছিল। ক্যামেরাবন্দি হয়েছিল সঙ্গমের বিভিন্ন ভঙ্গি। এই ছবিটিতেই প্রথম খুব কাছ থেকে যৌনাঙ্গের প্রদর্শন করা হয়েছিল বলে দাবি করেন বিশেষজ্ঞেরা।
১৪১৮
‘এল সার্তোরিয়ো’তে শুধু যৌনতা নয়, ছিল যৌনতার আদলে কাহিনির ছোঁয়াও। রোজারিয়ো শহরের নদীর ধারে ছবিটির শুটিং হয়। কাহিনি অনুযায়ী, এক দল স্বল্পবসনা রমনী নদীর ধার দিয়ে হাঁটছিলেন। তাঁদের দেখতে পান স্যাটার বা অশ্বমানব। এটি গ্রিক পুরাণের একটি পুরুষ চরিত্র, যার ঘোড়ার মতো কান এবং লেজ রয়েছে।
১৫১৮
স্যাটার ওই রমনীদের মধ্যে থেকে এক জনকে নিজের কাছে টেনে নেন এবং তাঁর সঙ্গে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হন। একাধিক ভঙ্গিতে সঙ্গমের দৃশ্য দেখানো হয় ওই ছবিতে। স্যাটারকে এর পর অন্য রমনীরা এসে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন।
১৬১৮
ছবিটি বর্তমানে প্রাচীন পর্নোগ্রাফির দলিল হিসাবে সঙ্গম এবং যৌনতা সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা কিনসে ইনস্টিটিউটে সংরক্ষিত রয়েছে। তাঁদের তথ্য অনুযায়ী, ছবিটি ১৯০৭ থেকে ১৯১২ সালের মধ্যে তৈরি করা হয়েছিল।
১৭১৮
বিশ শতকের গোড়ায় পশ্চিমে যার সূচনা, বিনোদনের দুনিয়ায় সেই পর্নোগ্রাফি ক্রমে ডালপালা মেলে প্রাচ্যেও। চিন, জাপান, ভারতেও ধীরে ধীরে নীলছবির নির্মাণ শুরু হয়। রমরমিয়ে চলে সে ছবির ব্যবসা। স্মার্টফোনের যুগে আরও সহজলভ্য হয়ে ওঠে পর্ন ছবি।
১৮১৮
পর্নোগ্রাফির বিকাশের পথে প্রথম থেকেই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সভ্য, রুচিশীল সমাজের ভ্রুকুটি। কিন্তু সমাজ নয়, ব্যক্তি মানুষের নিভৃত পরিসরে অনেক আগেই জায়গা পাকা করে নিয়েছে পর্নোগ্রাফি। তাই নিষেধাজ্ঞা জারি করেও তাকে আটকে রাখা যায়নি।