প্রতীকী ছবি।
দেশে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তির ক্ষেত্রেই তারা যদি নির্দিষ্ট অঙ্কের বেশি কিছু রোজগার করেন, তা হলে তার উপার্জিত অর্থের থেকে কিছু পরিমাণ অর্থ কর হিসেবে সরকারকে প্রদান করতে হয়। বলা যেতে পারে, যে ব্যক্তির উপার্জন যত বেশি, সেই ব্যক্তিকে তত বেশি কর জমা দিতে হয় সরকারের ঘরে। যদিও বেশ কয়েকটি উপায়ে কর ছাড় পাওয়া যেতে পারে। যেমন সরকারি খাতে বিনিয়োগ, সঞ্চয়, স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ ইত্যাদি। তবে অনেকেই হয়ত জানেন না যে দান বা জনকল্যাণ মূলক কাজে ক্ষেত্রে প্রদেয় টাকার উপরে ভিত্তি করে মোটা টাকা কর ছাড় পাওয়া সম্ভব।
কর ছাড় বিষয়টি ঠিক কী?
কিছু শর্ত মেনে চললে কোনও ব্যক্তির করযোগ্য আয় থেকে একটি অংশ কর প্রদান বাবদ প্রদেয় অর্থ থেকে বাদ দেওয়া যেতে পারে। এবং এটিই কর ছাড় নামে পরিচিত। এই শর্তের মধ্যে একটি হল দান।
সমাজে অন্দরেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু স্থানকে সরকারের পক্ষ থেকে করমুক্ত প্রতিষ্ঠান বলে ঘোষণা করে সিলমোহর দেওয়া হয়েছে। যেই সমস্ত প্রতিষ্ঠান জনকল্যাণকর কাজ করে অথবা বিভিন্ন ধর্মীয় অথবা দাতব্য সংস্থা হল করমুক্ত প্রতিষ্ঠান। কোনও ব্যক্তির বার্ষিক উপার্জন করের আওতায় পড়লে বিনিয়োগের পাশাপাশি এমন কিছু প্রতিষ্ঠানে দান করে কর ছাড় পাওয়া যেতে পারে।
কারা এই কারণে দান করতে পারবেন?
কোনও ব্যক্তি যদি কর প্রদানের যোগ্য হয়ে থাকেন, তবে তিনি ৮০জি ধারার অধীনে কর ছাড়ের দাবি করার জন্য যোগ্য। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ভারতীয় পাসপোর্টধারী হতে হবে। অনাবাসী ভারতীয় হলেও অসুবিধা নেই। মনে রাখতে হবে, দান কার্যে অর্থ প্রদান করে প্রতি ক্ষেত্রেই কর ছাড় পাওয়ার যোগ্যতা অর্জনের জন্য ভারতবর্ষে অন্তত পক্ষে একটি করযোগ্য আয় থাকা আবশ্যক।
এনজিও তে দান করার পূর্বে মনে রাখা প্রয়োজন যে নিশ্চিত রূপে এই বিষয়টি আয়কর বিভাগে আনুষ্ঠানিক ভাবে নিবন্ধিত হয়েছে। এটি সাধারণত ১২এ-এর অধীনে নিবন্ধিত হতে হবে। এই ধরনের জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য পরিচিত প্রতিষ্ঠানগুলিতে দান করার মাধ্যমে কর ছাড় পেতে গেলে, ধারা ৮০জি-র অধীনে কর ছাড়ের আবেদন করা যেতে পারে। এ ছাড়াও ১৯৬১ সালের আয়কর আইন অনুযায়ী ধারা ৮০জিজিএ বা ৩৫সি-র অধীনে কর থেকে অব্যাহতি পাওয়া যেতে পারে।
ভারতের কিছু বড় এনজিও-র উল্লেখ করা হল, যেখানে দান করা যেতে পারে —
১। স্মাইল ফাউন্ডেশন
২। অক্ষয় পাত্র ফাউন্ডেশন
৩। গুঞ্জা
৪। শিশুদের বাঁচাও
৫। সালাম বম্বে ফাউন্ডেশন
৬। মহিলা ডাকতা সমিতি
৭। শঙ্করা নেত্রালয়
৮। সিনিয়র সিটিজেন বেঙ্গালুরু
৯। কৈলাস সত্যার্থী চিলড্রেনস ফাউন্ডেশন
১০। অন্নমৃত ফাউন্ডেশন
দান করার সময় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন:
১। একটি প্রতিষ্ঠানে দান করার সময় যদি কর ছাড়ের সুবিধা পেতে হয়, তবে অর্থ প্রদান প্রক্রিয়াটি অবশ্যই চেক, ডিমান্ড ড্রাফট, অনলাইন ব্যাঙ্কিং, নেট ব্যাঙ্কিং, অথবা ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে হওয়া উচিত। এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে ২০০০ টাকার বেশি পরিমাণ অর্থের অনুদান নগদে করা উচিত নয়। নগদ আকারে অর্থ দান করলে করে কোনওরকম ছাড় পাওয়া সম্ভব নয়।
২। কর কর্তনের সুবিধা পাওয়ার জন্য অবশ্যই প্রমাণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিকে যত পরিমাণ অর্থ দান করা হয়েছে তার একটি স্ট্যাম্প-সহ রসিদ পেতে হবে। এবং বিশদে কিছু বিবরণও থাকা প্রয়োজন। যেমন সংশ্লিষ্ট এনজিও-র নাম, ঠিকানা, প্যান, অর্থ অনুদানকারী ব্যক্তির নাম, অনুদান হিসেবে প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ, সব কিছুর উল্লেখ থাকা প্রয়োজন।
৩। অনুদান একশো শতাংশ কর ছাড়ের যোগ্য কিনা তা পরীক্ষা করে নেওয়া প্রয়োজন। ফর্ম ৫৮-এর জন্য এনজিওকে অনুরোধ করতে হবে, যেখানে মোট প্রকল্পের খরচ, অনুমোদিত পরিমাণ, এবং সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের এখনও পর্যন্ত সংগৃহীত তহবিলের বিবরণ রয়েছে। এই ফর্মটি ছাড়া কর ছাড়ের দাবি প্রত্যাহার করা হবে।
কর ছাড়ের নিয়ম: ধারা ৮০জি অনুসারে, একটি এনজিওতে কোনও ব্যক্তি যে পরিমাণ অনুদান করে, তার একটি অংশ কর কর্তনের যোগ্য। এর জন্য সর্বোচ্চ সীমা মোট আয়ের দশ শতাংশ ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যেও কিছু প্রতিষ্ঠানে দান করলে কর অব্যাহতি একশো শতাংশ আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে তার পরিমাণ ৫০ শতাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy