এখন প্রশ্ন হল যে মুনাফা হলেই কি কর দেওয়া আবশ্যিক? উত্তরে বলা যায় কিছু ক্ষেত্রে তো অবশ্যই হ্যাঁ। যখন একটি সম্পদ এক জন মালিকের হাত থেকে অন্য এক জনের কাছে হস্তান্তরিত করা হয়, তখন এই ধরনের কর আরোপ হয়। যদিও সমস্ত মূলধন লাভ ট্যাক্সের জন্য দায়বদ্ধ নয়। দীর্ঘমেয়াদী লাভের জন্য কর প্রদানের পদ্ধতি স্বল্পমেয়াদী লাভের থেকে অনেকটাই আলাদা। করদাতা ব্যক্তিরা তাদের মূলধন লাভ করের বোঝা কমাতে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক কৌশল ব্যবহার করতে পারেন।
ক্যাপিটাল গেইন হিসেবে চিহ্নিত করা করের ধরনের হিসেবে দেখতে গেলে মূলধনী লাভ মূলত দুই প্রকারের হয়। প্রথমত, স্বল্পমেয়াদী মূলধনী লাভ কর। ৩৬ মাসেরও কম সময় ধরে রাখা যে কোনও সম্পদকে স্বল্পমেয়াদী সম্পদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে এই সময়কাল ২৪ মাস। এই ধরনের সম্পদ বিক্রির মাধ্যমে যে মুনাফা পাওয়া যায়, তা স্বল্পমেয়াদী মূলধন লাভ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং সেই ওই লাভের উপরে কর আরোপ করা হয়।
স্বল্পমেয়াদী লাভ এবং দীর্ঘমেয়াদী লাভ ট্যাক্সেশন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিধান রয়েছে। আয়কর আইনের ধারা ৮০সি-এর অধীনে, বিনিয়োগকারী এক বছরের মধ্যে তার সম্পত্তি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে, স্বল্পমেয়াদী মূলধন লাভের উপর ১৫ শতাংশ হারে কর ধার্য হবে। আবার দীর্ঘমেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে এক লক্ষ টাকার ইক্যুইটি-ভিত্তিক তহবিল ও শেয়ারের ওপর কর ধার্য করা হবে ১০ শতাংশ।
ধারা ৫৪ অনুসারে, একটি বিদ্যমান আবাসিক সম্পত্তি বিক্রয় এবং অন্য আবাসিক সম্পত্তি কেনার জন্য অর্থ পুনঃবিনিয়োগ করার মাধ্যমে প্রাপ্ত লাভের উপর কর ছাড় পাওয়া যায়। ২০১৯ সালের বাজেট অনুসারে, দেশের কোনও নাগরিক তার আবাসিক সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে সংগ্রহ করা তাদের দীর্ঘমেয়াদী মূলধন লাভের ওপর একটি ছাড় পেতে সক্ষম হবে। তারা সর্বোচ্চ দু’টি আবাসিক সম্পত্তিতে এই বিনিয়োগ করলে ছাড় পেতে পারেন। তবে এই ক্ষেত্রে পুঁজিগত লাভ ২ কোটি টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়।
আয়কর অইনের ধারা ৫৪ এফ অনুযায়ী, আবাসিক সম্পত্তি ছাড়াও যে কোনও সম্পদ বিক্রির মাধ্যমে প্রাপ্ত লাভের ওপর ছাড় পেতে পারেন। আবাসিক সম্পত্তি নয় এমন দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ বিক্রির মাধ্যমে মূলধনী লাভ করা হলে এই সুবিধা পাওয়া যায়। এই ধরনের ছাড় পেতে, সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীকে একটি নতুন সম্পত্তি কেনার জন্য পুনরায় বিনিয়োগ করতে হবে। এই ধরনের একটি ক্রয়, বিক্রয়ের ১২ মাস আগে বা কমপক্ষে ২৪ মাস পরে করা উচিত।
আয়কর অইনের ধারা ৫৪ সি অনুযায়ী বিদ্যমান আবাসিক সম্পত্তি বিক্রয় এবং নির্দিষ্ট বন্ডে এর অর্থ পুনঃবিনিয়োগ করার মাধ্যমে প্রাপ্ত লাভের ওপর ছাড় পাওয়া যায়। কোনও বিনিয়োগকারী প্রথম সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত অর্থকে ছয’মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট বন্ডে পুনর্বিনিয়োগ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি উল্লিখিত ধারার অধীনে ছাড় পেতে পারেন। এই ধরনের বন্ডে বিনিয়োগ করা তহবিলগুলিতে ৬০ মাস পরেই আবেদন করা যায়।
কৃষি উদ্দেশ্যে জমি হস্তান্তরের মাধ্যমে গৃহীত মূলধনী লাভের ওপর কর ছাড় পাওয়া যায়। কোনও ব্যক্তি কৃষিজমি হস্তান্তরের মাধ্যমে সংগৃহীত স্বল্পমেয়াদী বা দীর্ঘমেয়াদী মূলধনী লাভের ওপর উল্লিখিত ধারার অধীনে ছাড় পেতে পারেন। তবে উল্লিখিত সম্পদ বিক্রির ২৪ মাস আগে সম্পত্তি হস্তান্তর করতে হবে। এই ধরনের স্থানান্তরের তারিখ থেকে ৩৬ মাসের মধ্যে একটি নতুন সম্পদ কেনার জন্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত পরিমাণ পুনর্বিনিয়োগ করতে হবে। মনে রাখবেন, ৬০ বছরের বেশি বয়সী কোনও ব্যক্তি, যাঁদের নূন্যতম বার্ষিক আয় ৩ লক্ষ টাকা, তাঁরা দীর্ঘমেয়াদী মূলধন লাভ কর থেকে অব্যাহতি পাবেন।
পাশাপাশি, ক্যাপিটাল গেইন অ্যাকাউন্ট স্কিমে বিনিয়োগ করেও কর বাঁচানো যেতে পারে। ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স কমানোর কৌশলগত পদক্ষেপ হিসাবে, কোনও বিনিয়োগকারী তাঁদের উপার্জনকৃত একটি মূলধনী লাভ অ্যাকাউন্টে জমা করতে পারেন। এই কৌশলটি এমন সময়ে গ্রহণ করা যেতে পারে যখন তারা তাদের ট্যাক্স বাঁচাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে একটি নতুন আবাসিক সম্পত্তিতে বিনিয়োগ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy