Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Presents
Savings Tips

Portfolio:একমাত্র সুনির্দিষ্ট পোর্টফোলিয়োই এড়াতে পারে বাজারের ঝুঁকি

বর্তমানে নবাগত বিনিয়োগকারীদের যে প্রধান সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, তা হল, বিনিয়োগের পোর্টফোলিয়ো তৈরি করার প্রয়োজনীয় জ্ঞান এবং বাজার সম্পর্কে ধারণার অভাব।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

তন্ময় দাস
শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৪:১৭
Share: Save:

বিনিয়োগকারীদের অভিধানে একটি শব্দ প্রায়শই শোনা যায়— ‘পোর্টফোলিয়ো’। এই শব্দটি স্টক, বন্ড, ফান্ড এবং নগদ হিসেবে যে কোনও আর্থিক সম্পদের সমন্বয়কে বোঝায়। এক জন বিনিয়োগকারী তাঁর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই পোর্টফোলিয়ো তৈরি করেন। যেগুলি সাধারণত কোনও আর্থিক পেশাদার, হেজ ফান্ড, ব্যাঙ্ক বা অন্যন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা, সহনশীলতা, সময়সীমা, উদ্দেশ্য ইত্যাদি অনুযায়ী পোর্টফোলিয়ো তৈরি করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ বলা যেতে পারে, ভবিষ্যতের লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে বিনিয়োগের সম্বলিত বিযয়টিই হল পোর্টফোলিয়ো।

বর্তমানে নবাগত বিনিয়োগকারীদের যে প্রধান সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় তা হল, বিনিয়োগের পোর্টফোলিয়ো তৈরি করার প্রয়োজনীয় জ্ঞান এবং বাজার সম্পর্কে ধারণার অভাব। কোনও লক্ষ্যে পৌঁছানোর পরে প্রত্যাশিত অর্থ পেতে কোন কোন সিকিওরিটি বেছে নিতে হবে কিংবা বিনিয়োগের সময় ঝুঁকিগুলি কী ভাবে ভারসাম্যপূর্ণ হতে পারে, বিনিয়োগের পোর্টফোলিয়ো সম্পর্কিত এবং ঝুঁকি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় ভাল ভাবে বুঝে নেওয়া প্রয়োজন।

প্রথমত, পোর্টফোলিয়োর কার্যক্ষমতা কী ভাবে পরিমাপ করা যায় তা জানা অত্যন্ত জরুরি। এটি ভবিষ্যৎ সঞ্চয়ের একটি স্থির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তার উপরে নির্ভর করে তৈরি করা হয়। বলা যেতে পারে, এই পোর্টফোলিয়ো আপনার বিনিয়োগের উপর অঙ্ক কষে তৈরি করা একটি যুক্তিসঙ্গত অনুপাত, যেগুলি শেয়ার, ফান্ড, বন্ড ইত্যাদি হতে পারে। যখন আয়ের প্রত্যাশিত স্তরটি গ্রহণযোগ্য বাজার ঝুঁকির সমান হয়, তখনই এই পোর্টফোলিয়ো রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়।

পোর্টফোলিয়ো তৈরি, পরিচালনা করার জন্য সুস্পষ্ট ব্যাবহারিক নির্দেশিকা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগের বিন্যস্তকরণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সব থেকে ভাল পদ্ধতি। তবে মনে রাখবেন, অধিক বিন্যস্তকরণ কিন্তু মুনাফার অঙ্ক কমিয়ে দিতে পারে। সেই কারণেই সঠিক বিন্যস্তকরণের কৌশল রপ্ত করতে হবে।

ভবিষ্যতে বিনিয়োগের জন্য অর্থের উৎস খুঁজে বের করা অত্যন্ত জরুরি। এই অর্থের উৎস হতে পারে আয়ের অংশ, সঞ্চয়, উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত, ঋণ ইত্যাদি। তবে হ্যাঁ, বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত অর্থ বৃদ্ধি করতে চাইলে সঠিক ভাবে তা পুনরায় বিনিয়োগ করা জরুরি। কিন্তু ঝুঁকি সম্পর্কে সর্বদা সচেতন থাকুন।

বিনিয়োগের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য বা ব্যবহার দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। প্রথমটি হচ্ছে আর্থিক বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ। দ্বিতীয়টি হচ্ছে সময়মতো একটি নির্দিষ্ট আয়ের লক্ষ্যে বিনিয়োগ। যদি বৃদ্ধির জন্যেই বিনিয়োগ করা হয়, সেই ক্ষেত্রে উচ্চ মুনাফা ও প্রবৃদ্ধির ব্যবসা, ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির মূল লক্ষ্য, লভ্যাংশের হার, সম্পদের তুলনামূলক উচ্চ মূল্যায়ন, অবসর জীবন কিংবা সুদূর ভবিষ্যতে ব্যক্তিগত বা পারিবারিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য উপযুক্ত— ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করতে হয়।

আবার অন্য দিকে, নির্দিষ্ট আয়ের জন্য বিনিয়োগ করা হলে স্বল্প মুনাফা ও স্বল্প প্রবৃদ্ধির ব্যবসা, বিদ্যমান ব্যবসা-প্রধান লক্ষ্য, উচ্চ লভ্যাংশ হার, সম্পদের তুলনামূলক স্বল্প মূল্যায়ন, জীবনযাত্রা ও দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহের জন্য উপযুক্ত অর্থ— ইত্যাদি বিষয়ে বিবেচনা করতে হয়।

কোনও বিনিয়োগকারী বিনিয়োগের আগে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন যে সামগ্রিক ভাবে সাজানো পোর্টফোলিয়োর কিন্তু ঝুঁকিকে দূরে সরিয়ে দেয় না। বরং ঝুঁকির পরিমাণকে হ্রাস করে। আরও সহজ করে বললে বাজারের ঝুঁকির বিশ্লেষণ করে, সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগকৃত অর্থকে সমান ভাবে ভাগ করে তাঁর রিটার্নকে সামঞ্জস্য পর্যায়ে আনা হয়।

উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, যদি কোনও বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিয়োতে ভিন্ন তিনটি শেয়ার থাকে। বাজার অনুযায়ী একটির দাম ৩০ শতাংশ হ্রাস পায়, তবে স্বয়ংক্রিয় ভাবে সমগ্র পোর্টফোলিয়োর ৩০ শতাংশের মান হ্রাস পাবে না। কারণ সেই সময় পোর্টফোলিয়োতে থাকা অন্য দু’টি শেয়ারের মান হয়তো ৩০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে। ফলত সেক্ষেত্রে পোর্টফোলিয়োতে অন্তর্ভুক্ত সিকিওরিটির শেয়ারগুলি পুনরায় গণনা করে পোর্টফোলিয়োর মান মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

সর্বদা বাজার অনুযায়ী, পোর্টফোলিয়োর ঝুঁকি কমানো দরকার। মনে রাখবেন, বিনিয়োগের বৈচিত্র এনে ঝুঁকি এড়ানো যায়। কিন্তু সম্পূর্ণ দূর করা যায় না। বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি কমাতে বিভিন্ন প্রকল্পে, খাতে, শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত। যাতে, একটি খাতের লোকসান হলে অন্য খাতের লাভে পুষিয়ে যায়।

মনে রাখবেন, পোর্টফোলিয়ো রক্ষণাবেক্ষণ আসলে পাকা হাতে খেলা। দৈনন্দিন জীবনে ব্যস্ততার মধ্যে বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীর পক্ষে পোর্টফোলিয়োতে চোখ রাখা সম্ভবপর নয়। সেই কারণেই, এক জন আর্থিক পরামর্শদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করা প্রয়োজন। যে হেতু এক জন পেশাদার পরামর্শদাতা দীর্ঘ দিন ধরে এই বিষয়গুলির সঙ্গে যুক্ত, তাই স্বভাবতই বাজারে নির্দিষ্ট হারের জন্য কী উত্থান-পতন হতে পারে তা বোঝার ক্ষমতা তাঁর অনেকটাই বেশি। ওঁর পরামর্শ বিভিন্ন ঝুঁকি এড়াতে সাহায্য করবে।

একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ পোর্টফোলিয়ো বিনিয়োগকারীরা বেশ কয়েকটি কারণে তৈরি করে। যেমন,

১। এটি ঝুঁকি কমাতে সাহায়্য করে।

২। বৈচিত্র্য বিনিয়োগকারীদের মূলধন বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। বয়স্ক বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে মূলধন বাড়ানোর চেয়ে তা বজায় রাখা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

৩। স্টকগুলির পোর্টফোলিয়ো বৈচিত্র্যপূর্ণ হলে লাভের অংশ ঘরে তোলার সুযোগ অনেক বেশি।

অন্য বিষয়গুলি:

Savings Tips savings Risk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy