প্রতীকী ছবি।
ঝুঁকির খিদে যদি থাকে, তা হলে বাজারে নতুন মুখ দেখানো নানান ফ্লেক্সি ক্যাপের কথা ভেবে দেখতে পারেন। ভাবছেন এটা কী? আসুন দেখে নেওয়া যাক বাজারে বিনিয়োগের নতুন সুযোগ।
আমরা ইতিমধ্যেই দুই কিস্তিতে আলোচনা করেছি দেশে বসেও বিদেশে বিনিয়োগের উপায় নিয়ে। এখন আমরা দেখব ফ্লেক্সি ফান্ডের রকমসকম।
প্রথমেই বলে নেওয়া যাক যে, এই ফান্ডগুলি তুলনামূলক ভাবে নতুন। তাই এটা বলা মুশকিল যে এই ফান্ডগুলি কেমন পারফর্ম করবে। এদের ভবিষ্যৎ পুরোটাই নির্ভর করবে এই ফান্ড পরিচালনার দক্ষতার উপর। তাই প্রথমেই নিজের ঝুঁকির খিদে বুঝে নিয়ে এই ফান্ডে বিনিয়োগের কথা ভাববেন। তবে কী, বিনিয়োগ পরীক্ষা করার জন্য হাজার পাঁচেক টাকা ধরে নিতে পারেন গচ্চাই গেল, তা হলেও অবশ্য পরীক্ষামূলক ভাবে এ রাস্তায় পা দিতে পারেন।
ইতিহাস যখন নেই, তখন এই ফান্ডগুলির বিনিয়োগের লাভের সম্ভাবনাও সেই ভাবে করা মুশকিল। তাই প্রাথমিক ভাবে ঝুঁকি বেশি বলেই ধরে নেওয়া উচিত এই জাতীয় বিনিয়োগে। কিন্তু এটাও ঠিক যে, বিনিয়োগ কেউ অন্ধের মতো করে না। তা হলে কী দেখবেন নিজেকে সন্তুষ্ট করার জন্য?
যুক্তি বলে, যা যা তথ্য আছে আগে সেই তথ্য যাচাই করা উচিত। নতুন ফান্ডের ক্ষেত্রে এবং তা যদি নতুন কোনও বিনিয়োগের রাস্তায় হাঁটে যেখানে তুলনার সুযোগ কম, সেখানে ফান্ড পরিচালকের ইতিহাসটা খতিয়ে দেখা উচিত। তাঁর দক্ষতার ইতিহাসই এখানে প্রাথমিক ঝুঁকি মাপার অঙ্ক হয়ে দাঁড়াবে।
তার পর খতিয়ে দেখুন বিনিয়োগের কৌশল কী। যদি ফান্ডটি নতুন হয়, তা হলে সেটাই আপনার ঝুঁকি মাপার দ্বিতীয় মাপকাঠি। আর ফান্ডটি যদি বাজারে কিছু দিন আগে এসে থাকে, তা হলে সেই কৌশল আর এখনকার বিনিয়োগের ধারার মধ্যে সামঞ্জস্য আছে কি না, তা খতিয়ে দেখুন।
এই জাতীয় অনেক ফান্ডই বাজারে এসেছে বিনিয়োগের কৌশলে বিদেশি শেয়ারে বিনিয়োগের কথা বলে। কিন্তু তাদের অনেকের ঝুড়িতেই শেষমেশ বিদেশি শেয়ার ঠাঁই পায়নি। বলে রাখা ভাল এখনও পর্যন্ত।
আর একটা সমস্যা হচ্ছে এই ধরনের ফান্ড পরিচালনার খরচ লাভের গুড় খেয়ে নিতে চায়। তাই এ ব্যাপারে ফান্ড হাউসের তুলনামূলক ইতিহাস খুবই প্রয়োজনীয় তথ্য। অর্থাৎ, সেই ফান্ড হাউসের ফান্ড পরিচালনার খরচ অন্য সংস্থার তুলনায় কোথায় দাঁড়িয়ে। অবশ্যই এটা দেখতে হবে রিটার্নের অঙ্কের প্রেক্ষিতে। একই জাতীয় ফান্ড। একটিতে পরিচালনার খরচও বেশি, রিটার্নও বেশি। কিন্তু পরিচালনার খরচ দিয়ে আপনার আয় যদি অন্য একটি তুলনীয় ফান্ডের তুলনায় কম হয়, তা হলে আপনি দ্বিতীয়টিকেই বেছে নেবেন। নয় কি?
এর পর আসা যাক বিনিয়োগের কৌশলে। বাজারে এই জাতীয় নতুন একটি ফান্ড যেমন পরিষ্কার বলে দিচ্ছে যে, তাদের কটি শেয়ারে বিনিয়োগ লক্ষ্য। এবং তার মধ্যে সর্বাধিক কটি দেশি শেয়ার থাকবে।
এ বার দেখুন কী জাতীয় শেয়ারে বিনিয়োগ করতে চাইছে ফান্ডটি। বিনিয়োগের অঙ্ক বোঝাটা এমন একটা কঠিন বিষয় করে ফেলেছি আমরা যে, এখানে সাধারণ বোধের যে একটা বড় জায়গা আছে তাই ভুলে গিয়েছি আমরা। তাই অন্যের কথা না শুনে নিজেই একটু গুগল করে দেখুন। সব বোঝার দরকার নেই। কিন্তু কোনটা আপনার জন্য ভাল আর কোনটা নয়, সেটা বোঝার যোগ্যতা এবং সাধারণ জ্ঞান আপনার আছে। তাই দিয়ে প্রাথমিকটা বুঝে নিন। বাকিটা করবেন উপদেষ্টারা।
শেষ করার আগে ঝালিয়ে নেওয়া যাক একবার। ফ্লেক্সি ফান্ড বাজারে এসেছে। যারা বিদেশের শেয়ারে বিনিয়োগ করবে। তুলনামূলক ভাবে এ দেশে এটা বিনিয়োগের নতুন সুযোগ। তাই এমন ইতিহাস নেই যার উপর নির্ভর করে আমরা ঝুঁকির সিদ্ধান্ত নিতে পারি। তাই ঝুঁকির অঙ্কটা বেশি বলেই ধরে নিতে হবে।
একেবারেই কিছু না থাকলে ফান্ড বাছতে কী দেখব? হাতের কাছে যা যা তথ্য আছে তাই দিয়েই আস্থার পরিমাপ করব। যেমন ফান্ড ম্যানেজার। তাঁর দক্ষতার ইতিহাস গুগল করলেই পেয়ে যাবেন। তার সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন যে ফান্ড হাউস ফান্ডটি বাজারে ছাড়ছে, তার ইতিহাস। প্রতিশ্রুতি রাখার অঙ্কে সংস্থাটির ইতিহাস কী। নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতিগুলি খুঁটিয়ে পড়ুন। যেমন বিনিয়োগের কৌশল। তা কতটা নির্দিষ্ট করে বলা আছে। সংস্থাটির চালু ফান্ডগুলির ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি কতটা রক্ষা করেছে সংস্থাটি এই সব। এর পর অবশ্যই যাবেন উপদেষ্টার কাছে। নিজের পছন্দটা কতটা ঠিক তা যাচাই করতে। উপদেষ্টার কাছে অবশ্যই জেনে নিতে ভুলবেন না যে সিদ্ধান্ত ঠিক হলে তা কেন ঠিক এবং ভুল হলেই বা তা কেন ভুল। এতে কিন্তু আপনার লাভই হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy