প্রতীকী ছবি
আমি পেশায় সঞ্চয় উপদেষ্টা। আর সেই কারণেই আমাকে লগ্নি নিয়ে নানান প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। যে প্রশ্নগুলো সাধারণ ভাবে উঠে আসে নিয়মিত তার মধ্যে একটি হল সূচক নির্ভর মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে। অনেকেই এই জাতীয় ফান্ডে বিনিয়োগ করে থাকেন কারণ নিয়মিত সঞ্চয়ের ঝুলি উল্টেপাল্টে দেখার হ্যাঁপা থেকে বাঁচার জন্য। কিন্তু বিনিয়োগ করার পরে দেখেন যে সংশ্লিষ্ট সূচকটির সঙ্গে এক তালে তাঁর বিনিয়োগ ওঠা-নামা করছেনা! তাই তাঁদের প্রশ্ন, “এটা কেন হবে?”
এই প্রশ্নটা তো স্বাভাবিক। সূচক নির্ভর তহবিলে লগ্নি করার মানেটাই তো হল সূচকে যে অনুপাতে যে শেয়ার আছে, সেই অনুপাতে সেই শেয়ারে বিনিয়োগ করা। আর চুপচাপ বসে থেকে সূচকের ওঠা-নামার সুযোগ নেওয়া। তাই একে ‘প্যাসিভ ইনভেস্টমেন্ট’ বলা হয়।
এই ধরনের তহবিলেও ফান্ড ম্যানেজার থাকে। কিন্তু তাঁর কাজ হল যে সূচকের উপর নির্ভর করে তহবিলটা তৈরি তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে কিনা তা নিশ্চিত করা। আর তাঁর আরেকটা কাজ হল তহবিলটা চালু করার সময় সেইসব শেয়ার সেই অনুপাতে বাছা যে অনুপাতে সেই শেয়ারগুলো সূচকের মধ্যে আছে।
ব্যাপারটা খুব সহজ মনে হচ্ছে তাই তো? কিন্ত তা আদৌ নয়। একটা উদাহরণ নেওয়া যাক। ধরা যাক, আমাকে একটি ফান্ড বাছাই করতে হবে যা এনএসই মিডক্যাপ ২০০ সূচক অনুসরণ করবে এবং সেই তহবিলে প্রায় ২০০০কোটি টাকা উঠেছে। এই বার ফান্ড পরিচালক হিসাব করলেন সূচকে যে সব শেয়ার যে অনুপাতে আছে সেই অনুপাতে কোন শেয়ার কটা ২০০০ কোটি টাকায় কিনতে হবে। এবার বাজারে তিনি কেনা শুরু করলেন কিন্তু এত শেয়ার এক সঙ্গে বাজারে নাও মিলতে পারে। তাই পোর্টফোলিও তৈরির প্রক্রিয়াটি একটু সময় সাপেক্ষ হয়েউঠতে পারে এ ক্ষেত্রে। তারই পাশাপাশি কিছু টাকা তাঁকে হাতে রাখতে হচ্ছে নগদ যোগানের চাহিদা মেটাতে। তাতে যেটা হল তা খুব সোজা। একদিনে সব শেয়ার কিনতে না পারায় সূচকে বিভিন্ন অবস্থানে শেয়ারগুলো তহবিলে ঢুকল। আর তহবিল তৈরির প্রথম দিন থেকেই যে সূচকের উপর ভিত্তি করে তহবিলটা তৈরি করার কথা তারসঙ্গে একটা ফারাক তৈরি হল। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভাল বিশ্বজুড়ে ‘প্যাসিভ’ বিনিয়োগগুলি এখন কিন্তু কম্পিউটার নির্ভর হয়ে উঠেছে ট্রাকিং এবং লগ্নির ক্ষেত্রে। বিনিয়োগের জগতে যাদের আমরা বলছি ‘ট্রেডবট’।
তাই আমরা যখন ভাবি একটি ইনডেক্স ফান্ডের রিটার্ন সম্পূর্ণভাবে সেই সূচকের সঙ্গে সমান হওয়া উচিত তা কিন্তু হয় না। আর তা হয় না অনেকটাই বাজারের কারণেই।
কিন্তু কতটা বিচ্যুত হয়েছে তা বুঝবেন কী করে? ট্র্যাকিং এরর বা ট্র্যাকিং ত্রুটি অনুপাত বেশ সহজ। এটা মূলত দৈনিক রিটার্ন ট্র্যাক করে পোর্টফোলিও ও বেঞ্চমার্কের মধ্যে আনুপাতিক ফারাকের অঙ্ক। আমরা যে সংখ্যাটি পাই তা জানান দেয় ফান্ডের পোর্টফোলিও সূচকের সঙ্গে কতটা তাল মিলিয়ে চলছে। আর এটা যত কম হবে ফান্ডটি ততটাই সূচকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে।
তবে এই বিচ্যুতির অনুপাত দিয়ে ফান্ডটি আপনাকে কত ভাল রিটার্ন দিচ্ছে তা যাচাই করা ঠিক নয়। এ ক্ষেত্রে ইনফরমেশন রেশিও (আইআর) অর্থাৎ তথ্য অনুপাতের উপর নির্ভর করতে হবে। এটাও একটা অনুপাত। যার থেকে ফান্ডটির সূচক থেকে বিচ্যুতি সত্ত্বেও রিটার্ন দিতে কতটা দক্ষ তার একটা অনুমান করা সম্ভব। এই অনুপাতটি যত বেশি হবে জানবেন ফান্ডটির ম্যানেজার তত ভাল তহবিল থেকে টাকা লগ্নি করছেন।
প্রতিবেদক সঞ্চয় উপদেষ্টা। বক্তব্য নিজস্ব।
বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy