Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪

স্নানের ঘরে বাষ্পে ভাসো...

এ যুগে স্নানঘরের স্থান বাড়ির বাইরে নয়। বরং অন্দরসজ্জায় বাথরুমের ভূমিকা অন্য ঘরের মতোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। স্নানঘরের সৌন্দর্য নির্ভর করে তা সাজানোর উপরে

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৩৬
Share: Save:

বা ড়ির বাইরে এক কোণে পড়ে থাকত অন্ধকার, ঘুপচি, স্যাঁতসেঁতে সেই স্নানঘর। যার মেঝেতে শ্যাওলার চাষ। বাড়ির কোনও সদস্য সেই ঘরে সময় কাটানোর কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারত না। কিন্তু আধুনিক দিনযাপনে স্নানঘরের সংজ্ঞা পালটেছে। তারও সাজপাঠ শুরু হয়েছে। ফ্যাশনদুরস্ত হয়ে উঠছে বর্তমান স্নানঘর। বলে বলে টেক্কা দিতে পারে বাড়ির অন্য ঘরের সঙ্গেও। একটু যত্ন নিলেই বাথরুমের ভোলবদল সম্ভব।

ভাগ করুন: স্নানঘরে শুকনো ও ভিজে জায়গার ভাগ করে নেওয়াটা জরুরি। আগেকার দিনের বাথরুমে ঢুকেই থাকত স্নানের জায়গা ও পিছনের দিকে থাকত কমোড। কিন্তু বাথরুমকে ড্রাই ও ওয়েট, দু’ভাগে ভাগ করতে প্রথমেই এই ধারণাটা বদলে ফেলতে হবে। বেসিন ও কমোড নিয়ে আসতে হবে বাথরুমের দরজার দিকে। ভিতর দিকে থাকবে স্নানের জায়গা। শাওয়ার কার্টেন দিয়ে স্নানের জায়গা আলাদা করে নিতে পারেন। মেঝেয় ডিভাইডার দিয়েও ভাগ করা যায়।

পদতলে: এর পরেই মেঝের পালা। বাথরুমের মেঝে ভিজে থাকার সম্ভাবনা বেশি। ফলে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। তাই মেঝেতে এমন কোনও টাইল্‌স ব্যবহার করবেন না, যাতে পা পিছলে যেতে পারে। বাথরুমের মেঝেতে পাথরের ব্যবহার বেশ নিরাপদ। প্রয়োজনে রাফ টাইল্‌সও ব্যবহার করতে পারেন। আবার এমন রাফ টাইল্‌স ব্যবহার করবেন না, যার ভিতরে ময়লা জমতে পারে। বিশেষত, স্নানঘরের মেঝেয় মোজ়াইক একেবারেই স্বাস্থসম্মত নয়। মোজ়াইক খুব তাড়াতাড়ি ক্ষয়ে যায়। এর মধ্যে যে ছোট পাথরকুচি ব্যবহার হয়, তার মাঝে ধুলো-বালি জমে নোংরা হয় তাড়াতাড়ি। ফলে জীবাণু ও রোগ ছড়াতে পারে। এখন অনেক বাথরুমেই কার্পেটের মতো ফ্লোরম্যাটও ব্যবহার করা হয়। সে রকম কিছু ম্যাট বা বাথরুম কার্পেটও রাখতে পারেন স্নানঘরে।

দেওয়ালে: জলের ব্যবহার হওয়ায় জল ছেটার সম্ভাবনা থাকে। ফলে দেওয়ালের রং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই দেওয়ালে অন্তত পাঁচ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত টাইল্‌স বা ওয়াশেব্‌ল তেল রং করাতে পারেন। তা হলে নোংরা হলেও তা ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে ফেলতে পারবেন।

স্টোরেজ সংক্রান্ত: স্নানঘরে বড় মাপের স্টোরেজ রাখার জায়গা পাওয়া যায় না। কিন্তু রোজকার ব্যবহারের ব্রাশ, পেস্ট, সাবান, তোয়ালে রাখার জায়গা তো চাই। স্টোরেজ বানাতে কমোডের উপরের জায়গা ব্যবহার করতে পারেন। দরজার পিছনেও ছোট্ট স্টোরেজের ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে অতিরিক্ত জায়গা লাগবে না। বেসিনের উপরে বা নীচের অংশেও তাক বানিয়ে নিতে পারেন। তাকের ব্যবস্থা করলে তা ভার্টিক্যালি করবেন। এতে জায়গা নষ্ট হবে না।

অতিথি শিল্পী: এ বার বাথরুমের অতিথি শিল্পী তথা অ্যাকসেসরিজ় বাছার পালা। পুরো মেকআপের পরেও সাজ সম্পূর্ণ করতে যেমন দুল বা হারের প্রয়োজন, ঠিক তেমনই বাথরুমের পুরো মেকওভারের পরেও কিছু সাজসঙ্গীর দরকার। ছোট ছোট ইনডোর প্ল্যান্টস রাখতে পারেন বাথরুমে। কাচের বোতলে ছোট পাথর বা বালি পুরে বাইরে থেকে রঙিন রিবন বেঁধে দিতে পারেন। বিভিন্ন রকমের আয়না দিয়ে একটা দেওয়ালও সাজিয়ে ফেলা যায়। বাথরুমের বেসিনের পাশে যদি অনেকটা জায়গা থাকে, তা হলে সেখানে ফিশবোল বা ফুলদানি রাখতে পারেন।

আরও আলো: একটা ছোট্ট জানালার খুব প্রয়োজন। কিন্তু সব বাথরুমে সেই পরিসর থাকে না। তার অভাব পূরণ করতে হবে আলো দিয়ে। বাথরুম বলেই কম ওয়াটের আলো নয়। একাধিক সুন্দর অ্যাম্বিয়্যান্সের আলো লাগাতে পারেন। প্রয়োজন মতো বদলে বদলে জ্বালাতে পারেন তা। এতে বাথরুমের ভোল বদল তো হবেই, বিদ্যুৎও সাশ্রয় করতে পারবেন।

সুরভিত: বাথরুমে যেন দুর্গন্ধ বাসা বাঁধতে না পারে, সে দিকে খেয়াল রাখবেন। বাজারচলতি এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করতে পারেন। সুগন্ধী ফুল, পপুরিও রাখা যায়।

পরিচ্ছন্নতা ও সুস্বাস্থ্য

স্নানঘরের পরিচ্ছন্নতার উপরে নির্ভর করে পরিবারের স্বাস্থ্য। তাই নিয়মিত বাথরুম পরিষ্কার করা জরুরি।

সপ্তাহে এক-দু’দিন বাথরুমের মেঝে, ফ্লোরম্যাট, কমোড, বেসিন পরিষ্কার করা উচিত।

ফ্লোরম্যাটের কাজ যেন বেশি সূক্ষ্ম না হয়। তা হলে পরিষ্কার করাও সময়সাপেক্ষ হবে। ম্যাট খুব নোংরা হয়ে গেলে তা পালটে ফেলাই শ্রেয়।

মাসে এক বার বাথরুমের দেওয়াল পরিষ্কার করতে পারেন।

বাথরুমে ফিনাইল ব্যবহার করাই যায়। তবে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করবেন কি না, তা নির্ভর করছে আপনার মেঝের উপরে।

বাথরুমের সব জলনিকাশি ব্যবস্থা যেন ঠিকঠাক কাজ করে। না হলে বাথরুমের মেঝেতে জল জমে শ্যাওলা পড়তে পারে।

স্নানঘরের পরিসর যেমনই হোক না কেন, একটু যত্ন নিলেই তা হয়ে উঠতে পারে আধুনিক ও সুন্দর।

অন্য বিষয়গুলি:

Child Bath
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE