শিশুশিল্পীদের নৃত্যানুষ্ঠান Sourced by the ABP
গত ২৬ অগস্ট শিশির মঞ্চে শিঞ্জন নৃত্যালয়ের ২৮তম বার্ষিক অনুষ্ঠান উদ্যাপিত হল। শিঞ্জনের প্রতিষ্ঠাতা নৃত্যশিল্পী অলোকা কানুনগো শৈশবেই ওড়িশি নৃত্যগুরু কেলুচরণ মহাপাত্রের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। বিবাহসূত্রে কলকাতাবাসী হওয়ার কারণে সাময়িক ভাবে নৃত্যশিক্ষায় ছেদ পড়লেও, আশির দশকে গুরু কেলুচরণ কলকাতার ‘পদাতিক’ সংস্থার উদ্যোগে নৃত্যশিবির শুরু করলে, অলোকা প্রথম সারির ছাত্রী হিসেবে প্রথম শিবিরেই যোগদান করেন। তার পর ধীরে ধীরে নৃত্যগুরু কেলুচরণের যোগ্য শিষ্যা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এবং বিদেশে ওড়িশি নৃত্যের ধারক ও বাহক নৃত্যাঙ্গনা অলোকা কানুনগো তাঁর নৃত্য নিবেদনে দর্শকদের মুগ্ধ করে রেখেছেন, কয়েক দশক ধরে। ওড়িশি নৃত্যের প্রচার ও প্রসারে নানা গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড করে খ্যাতি অর্জন করেন অলোকা। বিগত ২৮ বছর ধরে শিঞ্জন নৃত্যালয়ের মাধ্যমে নৃত্যশিক্ষা দান করে গুরু কেলুচরণের নৃত্যধারাকেই প্রবাহিত করে চলেছেন তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে। সেই নৃত্যধারাকেই দর্শক আরও একবার প্রত্যক্ষ করল কেলুচরণের সুযোগ্য শিষ্যা অলোকা এবং অলোকার সুযোগ্যা শিষ্যার নৃত্যনির্মিতির মধ্য দিয়ে। অনুষ্ঠানে মঙ্গলাচরণ নিবেদন করে শিশুশিল্পী আরাধ্যা গোস্বামী। ৭-৮ বছরের আরাধ্যা সে দিন অনুষ্ঠানের শুরুতেই তার নৃত্য পরিবেশনায় প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। এর পর জয়িতা গঙ্গোপাধ্যায় ও শ্রীজিতা ভট্টাচার্যের উপস্থাপনা— দশাবতার। কেলুচরণের নৃত্যধারায় ও অলোকার পরিচালনায় এই নৃত্য দেখতে দেখতে গত চার দশকে বহুল-প্রচারিত ওড়িশি আঙ্গিকে বিভিন্ন শিল্পীর নৃত্য উপস্থাপনায় দশাবতার নৃত্যের কথা মনে পড়ছিল। এই নৃত্য যেন বঙ্গ সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে যুক্ত হয়ে গিয়েছে।
এর পরের নিবেদন পল্লবী। পরপর তিন জন অতিথি শিল্পী (অলোকারই শিষ্যার কাছে একই ঘরানার শিক্ষায় শিক্ষিত) তিনটি পল্লবী নিবেদন করেন। অভিষিক্তা ঘোষের উপস্থাপনা কামোদী পল্লবী। রীতি চৌধুরীর নিবেদন পল্লবী। ইয়াভি গুপ্তার নিবেদন নট পল্লবী। পরবর্তী অনুষ্ঠান নমো গণেশ, নৃত্যনির্মাণে অলোকা কানুনগো। শিশু বিভাগের নৃত্যশিল্পীরা ছিল এই নৃত্য নিবেদনে— আরাধ্যা গোস্বামী, দেবস্মিতা দাস, ঈশানী পাল, জাহ্নবী বিশ্বাস, সৃজিতা নন্দী, শোভা রায় ঘোষ, স্নেহাদৃতা রায়, সংভিকা পাল। পরবর্তী নিবেদন দুর্গা, নিবেদিতা দত্তের উপস্থাপনায়। পৌলমী চক্রবর্তীর উপস্থাপনায় কামোদী পল্লবী। এই নৃত্যের পরিকল্পনা এবং সঙ্গীত পূর্বে উপস্থাপিত কামোদী পল্লবীর পুনরাবৃত্তি বলে মনে হয়। এই প্রসঙ্গে বলা প্রয়োজন, রেকর্ড করা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের সঙ্গে স্টেজে ঘুঙুরের জন্য আলাদা মাইক্রোফোন দিয়ে শব্দমিশ্রণ না করলে, ঘুঙুরের শব্দের অভাব থেকেই যায়, বিশেষত একক নৃত্যের ক্ষেত্রে। ভবিষ্যতে এ দিকে নজর দিলে ভাল হয়। শেষ তিনটি সমবেত নৃত্য, জয়দেব রচিত ‘ললিত লবঙ্গলতা’, ‘মাখন চুরি’ ও ‘রাস’ সুপরিকল্পিত ও দৃষ্টিনন্দন হয়েছিল। রেকর্ড করা সঙ্গীতে গুরু কেলুচরণ মহাপাত্রের পাখোয়াজ বাদন আজও শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। এ দিনের শিল্পীরা সকলেই নাচ শিখছেন। ভবিষ্যৎই বলে দেবে, তাদের শিল্পী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কতখানি সফল হয়ে উঠতে পারল। শিল্পীরা— অর্যমা কুণ্ডু, এষা দত্ত, মনীষা বড়ুয়া, সাগরিকা মোহান্তি, সমাদৃতা বসু, শিউলি মহাপাত্র, সুমন মণ্ডল, যাজ্ঞসেনী সরকার, স্বরলিপি রায়, ইয়াভি গুপ্তা, নিবেদিতা দত্ত। সঞ্চালনায় সেঁজুতি বসু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy