চল্লিশ ডিগ্রি পার করা এই ভয়ানক গরমের সঙ্গে যুঝবার জন্য সেলেব মহলে ইদানীং যে বস্তুটি সবচেয়ে ইন, জানেন কি সেটি কী?
ডিটক্স ওয়াটার! ওয়াটার ডিটক্সের সঙ্গে একে গুলিয়ে ফেলবেন না যেন। এই জলের পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা আপনার অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি। এবং সেলেবরা খান বলে ভাববেন না যেন, এ এমন ‘বস্তু’ যা আপনার নাগালের বাইরে। সহজ ভাষায় বললে, ডিটক্স ওয়াটার হল ফ্রুট ইনফিউস্ড ওয়াটার। অনেকেই এমন আছেন, ব্যস্ততার জন্য গোটা ফল চিবিয়ে খাওয়ারও সময় হয় না। তাঁরা নিশ্চিন্তে ডিটক্স ওয়াটারে চুমুক দিন। ফলের পুষ্টিগুণ আপনার শরীর পাবে ষোলোআনা।
কীভাবে বানাবেন ডিটক্স ওয়াটার?
বড় মুখের একটি জার বা কাচের বোতল নেবেন। তা জল দিয়ে ভর্তি করে, বিভিন্ন রসালো ফল যেমন আঙুর, আপেল, তরমুজ, স্লাইস করা কমলালেবু (ছোট ছোট স্লাইস, কিন্তু খোসা ছাড়ানো নয়), শসা ইত্যাদি কুচি করে এর মধ্যে রাখুন। তার পর জারটি ফ্রিজে রেখে দিন কয়েক ঘণ্টার জন্য। যদি কালোজামের মতো ফল দেন, তা হলে চামচ দিয়ে সামান্য ক্রাশ করে দিন, যাতে ফাইবার, ফলের রস দুটোই জলে মিশতে পারে। সুন্দর গন্ধের জন্য এর মধ্যে পুদিনা পাতা দিতে পারেন। কী ফল দেবেন, সেটা সম্পূর্ণ আপনার পছন্দের উপর নির্ভর করছে। তবে সিজনাল ফল দিলে, তার উপকারিতা বেশি। একবার বানিয়ে রাখলে দু’-তিন দিন অনায়াসে তা খেতে পারেন।
গুণাগুণ
আমাদের প্রত্যেকেরই দিনে কম-বেশি ২-৩ লিটার জল খাওয়া উচিত, যাতে শরীর তার প্রয়োজনীয় জল পায় এবং দূষিত টক্সিন বেরিয়ে যায়। কিন্তু অত মেপে জল কে খায়! তার উপর এসিতে থাকার দরুন তেষ্টাও বিশেষ পায় না, ব্যস জলের সঙ্গেও আড়ি। অন্য দিকে ফলের রস ও ফাইবার সমৃদ্ধ এই জল খেতেও সুস্বাদু এবং বারবার চা-কফি কিংবা প্যাকেজড ফ্রুট জুস খাওয়ার চেয়ে এটির উপকার অনেক বেশি। ওয়াটার ইনফিউসড সিট্রাস ফল হজম করতে সাহায্য করে, কনস্টিপেশনের জন্য এটি ভাল ওষুধ। তা ছাড়া ভিটামিনে ভরপুর ডিটক্স ওয়াটার কিন্তু ত্বকেরও পরম বন্ধু। ওজন কমার সঙ্গেও সম্পর্ক আছে এই ফ্রুট ইনফিউসড জলের। কারণ এটি খাওয়ার ফলে পেট ভর্তি থাকে, খিদে কম পায়। তা ছাড়া ফলের পুষ্টিগুণ শরীরে যাচ্ছে, যা খিদে মেটাচ্ছে। সেই সঙ্গে ফলের মধ্যে থাকা সুগার কোশেন্ট শরীরের মিষ্টির চাহিদায় লাগাম পরাচ্ছে। এর নিট ফল? আপনার অতিরিক্ত ওজন ঝরবে বিনা আয়াসে।
এর পরই যে প্রশ্নটা আসে, তা হলে কি গোটা ফল খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই? ডিটক্স ওয়াটার খেলেও গোটা ফল অবশ্যই খেতে হবে। এই জল খেতে সুস্বাদু এবং ভীষণ উপকারী হলেও তা কখনও গোটা ফলের পরিপূরক হতে পারে না, কারণ ফলের ফাইবার এতে পুরোপুরি থাকছে না। আর কোনও কিছুই অতিরিক্ত করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়, এ ক্ষেত্রেও তাই। ডিটক্স ওয়াটার উপকারী হলেও দিনে ২-৩ লিটারের বেশি কিন্তু খাবেন না।
এ বার জেনে নিন, কোন প্রয়োজনে আপনি ডিটক্স ওয়াটারের কোন ফ্লেভারটি খাবেন।
হজমের জন্য ডিটক্স ওয়াটার
দু’ লিটার জল, গ্রেট করা আদা ১ টেবলচামচ, মাঝারি মাপের ১টি শসা (খোসা ছাড়ানো ও পাতলা করে স্লাইস করা), ছোট পেপারমিন্ট পাতা ১২টি দিয়ে এটি বানান। এই প্রত্যেকটি উপাদান আপনার ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে আরও ভাল কাজ করতে সাহায্য করে।
ফ্ল্যাট বেলি ডিটক্স ওয়াটার
বরফ ঠান্ডা জল ২৪ আউন্স, স্লাইস করা শসা, ফ্রেশ পুদিনা পাতা, স্লাইস করা লেবু অর্ধেক, একটি কমলালেবুর চার ভাগের এক ভাগ স্লাইস করা। পুদিনা পাতা ও লেবু হজমের দিকটা দেখে, শসার মধ্যে আছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি উপাদান, কমলালেবু ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী রাখে আবার কোলেস্টেরল কমায়। ফলে পেটের বাড়তি মেদ ঝরে সহজে।
খিদেয় লাগাম পরানোর ডিটক্স ওয়াটার
বরফ ঠান্ডা জল ২৪ আউন্স, ফ্রেশ পুদিনা পাতা, স্লাইস করা স্ট্রবেরি ১টি, স্লাইস করা লেবু অর্ধেক, দারচিনি ১/৪ টেবলচামচ, একটি আপেলের চার ভাগের এক ভাগ স্লাইস করা। এটি মাঝেমধ্যে খেলে খিদে মিটবে, আবার হজমের সমস্যারও ভয় নেই।
ডেলি ক্লেনজিং ডিটক্স ওয়াটার
বরফ ঠান্ডা জল ১ থেকে ২ লিটার (আপনি কী রকম টেস্ট চান, তার উপর জলের পরিমাণ নির্ভর করছে), তরমুজের স্লাইস, শসার স্লাইস, মুসুম্বি বা পাতিলেবু ১টি, পুদিনা পাতা ১০-১৩টি। এই ডিটক্স ওয়াটার আপনার শরীরের দূষিত টক্সিন একেবারে ফ্লাশআউট করে দেবে ও হজমশক্তিকে জোরদার রাখবে। ফলে আপনিও থাকবেন ফিট অ্যান্ড ফাইন।
এখানে আমরা আপনাদের কথা ভেবে কয়েকটি রেসিপি দিলাম। এ বার আপনি আপনার পছন্দ এবং প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে নিজের মতো ডিটক্স ওয়াটারের অন্য রেসিপিও ট্রাই করতে পারেন। তবে দেরি না করে হেলদি হ্যাবিটটা শুরু করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy