Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

শিকড় খোঁজা নারী

‘আগুনপাখি নাটকে। লিখছেন পিয়ালী দাসজীবন মানুষকে অনেক শিক্ষা দেয়, বোধের উত্তরণ ঘটায়। পুঁথিগত বিদ্যার বাইরেও যার মূল্য কোনও অংশে কম নয়।। যেমনি ভাবেই অবিভক্ত ভারতের এক মুসলিম রমণী জীবনের বেশির ভাগটাই একান্নবর্তী পরিবার, স্বামী-সংসারকে দিয়েও এক সময় অনুভব করে শিকড়ের টান।

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

জীবন মানুষকে অনেক শিক্ষা দেয়, বোধের উত্তরণ ঘটায়। পুঁথিগত বিদ্যার বাইরেও যার মূল্য কোনও অংশে কম নয়।। যেমনি ভাবেই অবিভক্ত ভারতের এক মুসলিম রমণী জীবনের বেশির ভাগটাই একান্নবর্তী পরিবার, স্বামী-সংসারকে দিয়েও এক সময় অনুভব করে শিকড়ের টান। দেশভাগের পর স্বামী ছেলে-মেয়ে পূর্ব-পাকিস্তানে চলে গেলেও সে যেতে নারাজ। দৃঢ় চিত্তেই এই সিদ্ধান্ত নেয়। তার উপলব্ধি ‘চারাগাছ এক জায়গা থেকে আর জায়গায় লাগাইলে হয়, এক দ্যাশ থেকে আর দ্যাশে লাগাইলেও বোধায় হয়, কিন্তুক গাছ বুড়িয়ে গেলে আর কিছুতেই ভিন্ মাটিতে বাঁচে না।’ ব্রিটিশ শাসন এবং দেশভাগের পটভূমিতে রচিত হাসান আজিজুল হক-এর এই এক সাড়া জাগানো উপন্যাস অবলম্বনে সম্প্রতি মঞ্চস্থ হল ‘আগুনপাখি’ নাটকটি। নির্দেশনায় সুমন্ত রায়। প্রযোজনায় যাদবপুর মন্থন।

আশ্চর্যের বিষয় গল্পের এই কেন্দ্রীয় চরিত্রটির কোনও নাম দেননি লেখক। এ যেন একই জীবন-চক্রে বাঁধা নারীদের প্রতিনিধি। নির্দেশকও সে পথই অবলম্বন করেছেন। তবে এই নারী সত্তার নির্মাণে নির্দেশকের মুন্সিয়ানার অভাব চোখে পড়ল। এই কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রটিকে তিনজন অভিনেত্রীর মাধ্যমে দৃশ্যায়িত করা হয়। কৈশোর, যৌবন এবং উত্তর যৌবন—জীবনের এই তিনটি সময়ের ধারক হিসেবে তাদেরকে পৃথকভাবে ব্যবহার করলেই ভাল হত। একক সত্তাকে বোঝাতে একই দৃশ্যে মাঝে মাঝে তিনজনকেই ব্যবহার করার বিষয়টি স্পষ্টতা পায় না। তবে ভাল লাগে কিছু দৃশ্যের নির্মাণ। ছেলেবেলায় মেয়েটির সঙ্গী-সাথিদের সঙ্গে কিতকিত সহ নানান খেলায় মেতে ওঠার দৃশ্য কিংবা দাঙ্গার ভয়াবহ পরিবেশ রচনায় তিনি সক্ষম হন। ভাল লাগে দেশ ছাড়া উদ্বাস্তুদের সারিবদ্ধ ভাবে চলে যাওয়ার দৃশ্য। গ্রাম বাংলায় ওলাওঠার মতো মারণ রোগের প্রকোপ বোঝাতে, ওলা বুড়ির মানুষকে গ্রাস করার দৃশ্যটা অপ্রয়োজনীয় মনে হয়। নির্মাণের কিছু অসংলগ্নতায় গল্পের চলনটা মাঝে মাঝে বাধাপ্রাপ্ত হয়। তবে ঘটনাবহুল এই উপন্যাসের বিশাল ক্যানভাসকে মঞ্চায়িত করার ভাবনা সত্যিই প্রশংসনীয়।

স্বল্প উপস্থিতিতেও মন ছুঁয়ে যায় পৌলমী চট্টোপাধ্যায়ের মন প্রাণ সত্তা উজাড় করা অভিনয়। এই নারী চরিত্রটির জ্বালা-যন্ত্রণার ভাব প্রকাশে তাঁর পরিণত মনস্কতার প্রকাশ ঘটে। এই নারীর ভূমিকায় মুগ্ধ করে সঙ্গীতা পালের অভিনয়ও। এছাড়াও অভিনয়ে ছিলেন অস্মিতা চট্টোপাধ্যায়, পাপিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়, কাঞ্চন আমিন, রাজেশ্বরী নন্দী, সোহম সরকার প্রমুখ। নাটকে সঙ্গীতের ব্যবহার (অভিজিৎ আচার্য) উল্লেখের দাবি রাখে।

অন্য বিষয়গুলি:

Agunpakhi theatre
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy