বিজ্ঞানীদের কল্পনায় আঁকা হয়েছিল ‘আইরাস’ এবং ‘জিজিএসই-৪’-এর সংঘর্ষের সেই মুহূর্ত।
কান ঘেঁষে রক্ষা পেল দু’টি ঘুমন্ত উপগ্রহ। ভারতীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোরে মহাকাশে ভয়ঙ্কর এক সংঘর্ষে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। নাসা ও লিওল্যাবস জানিয়েছিল, দু’টি স্যাটেলাইট ‘আইরাস’ ও ‘জিজিএসই-৪’ শেষ পর্যন্ত মাত্র ২৫ মিটার বা ৮২ ফুট দূরত্ব দিয়ে একে অতিক্রম করে কোনও রকমে রক্ষা পেল। সংঘর্ষ হলে তার ফল হত সুদূর প্রসারি হত বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
মহাকাশের বর্জ্য উপর নিয়মিত নজরদারি চালায় স্পেস ডেব্রি ট্র্যাকিং সার্ভিস লিওল্যাব্স। তারা জানিয়েছিল বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৯ মিনিট নাগাদ মহাকাশে দু’টি উপগ্রহের মধ্যে ভয়ঙ্কর ধাক্কা লাগতে পারে। নাসার তরফেও এই খবর সমর্থন করা হয়েছিল।
বুধবার লিওল্যাবস টুইট করে জানায়, ওই সময় ‘আইরাস’ ও ‘জিজিএসই-৪’ উপগ্রহ দু’টি নূন্যতম দূরত্বে চলে আসবে। তখন তাদের দূরত্ব হবে বড় জোর ১৫ থেকে ৩০ মিটার। অর্থাৎ, ৪৯ থেকে ৯৮ ফুটের মধ্যে। এই সময় উপগ্রহ দু’টি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৯০০ কিলোমিটার বা ৫৬০ মাইল উপরে অবস্থান করবে।
The NASA/NIVR IRAS satellite and the NRO/USN POPPY 5B satellite (aka GGSE 4) are predicted to make a close approach on Wednesday. POPPY 5B has 18-metre-long gravity gradient booms so a 15-to-30 metre predicted miss distance is alarming https://t.co/H1UckcoaAH
— Jonathan McDowell (@planet4589) January 27, 2020
উৎক্ষেপণের পর সব সময় নজর রাখা হয়,কোনও উপগ্রহ বা কোনও মহাকাশবর্জ্য অথবা কোনও মহাজাগতিক বস্তু যেন মহাকাশযানের ৬০ কিলোমিটারে মধ্যে না এসে পড়ে। তা হলে তা মহাকাশযানের পক্ষে হয়ে উঠবে অত্যন্ত বিপজ্জনক।
আরও পড়ুন: ভোরে পৃথিবীর কক্ষপথে দুই উপগ্রহের মধ্যে ভয়ঙ্কর সংঘর্ষের আশঙ্কা, হুঁশিয়ারি নাসার
ওয়াশিংটনে নাসার সদর দফতরে ‘পাথফাইন্ডার মিশন’-এর অন্যতম সদস্য জ্যোতির্বিজ্ঞানী অমিতাভ ঘোষ জানিয়েছেন, সংঘর্ষ হলে টুকরো টুকরো হয়ে যেত তুলনায় হাল্কা উপগ্রহটি। ফলে মহাকাশে কৃত্তিম উপগ্রহগুলির কক্ষপথের একাংশে ‘স্পেস ডেব্রি’ বা মহাকাশের ধূলিকণার বিশাল ‘মেঘ’-এর জন্ম নিত। যে মেঘ কোনও মহাকাশযানের পক্ষে হয়ে উঠতে পারত অত্যন্ত বিপজ্জনক।
আরও পড়ুন: কলকাতার শীত এ বার নোবেলবর্ষী, শহরের লাভ হল কি!
যে পথে সংঘর্ষে হতে পারত দু'টি উপগ্রহের মধ্যে
‘লিওল্যাব্স’-এর একটি সূত্র জানাচ্ছে, কাছাকাছি চলে আসা উপগ্রহ দু’টির মধ্যে ‘আইরাস’ উৎক্ষেপণ হয়েছিল আজ থেকে ৩৭ বছর আগে, ১৯৮৩-তে। জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার ফলে উপগ্রহটি ঘুমিয়ে পড়েছিল (ডিকমিশন্ড) বেশ কয়েক বছর আগেই। ‘জিজিএসই-৪’, ৫৩ বছর আগে ১৯৬৩ সালে উৎক্ষেপণ হয়েছিল। এটি মূলত ছিল একটি সামরিক উপগ্রহ। তবে বিজ্ঞান গবেষণার জন্যও তাতে ছিল একটি ‘পে-লোড’।
1/ We are monitoring a close approach event involving IRAS (13777), the decommissioned space telescope launched in 1983, and GGSE-4 (2828), an experimental US payload launched in 1967.
— LeoLabs, Inc. (@LeoLabs_Space) January 27, 2020
(IRAS image credit: NASA) pic.twitter.com/13RtuaOAHb
দু’টি উপগ্রহের ওজন ও গতিবেগ
উৎক্ষেপণের সময় ‘আইরাস’-এর ওজন ছিল ১ হাজার ৮৩ কিলোগ্রাম। যা লম্বায় সাড়ে ১১ ফুটেরও বেশি। চওড়ায় সাড়ে ১০ ফুট। আর উচ্চতায় সাড়ে ৬ ফুটের কিছু বেশি।
সেই দৈত্যাকার উপগ্রহ ‘আইরাস’। লম্বায় সাড়ে ১১ ফুট, উচ্চতায় সাড়ে ৬ ফুটেরও বেশি।
তুলনায় অনেকটাই হাল্কা ‘জিজিএসই-৪’। উৎক্ষেপণের সময় যার ওজন ছিল ৮৫ কিলোগ্রাম।
উপগ্রহ ‘জিজিএসই-৪’।
দু’টি উপগ্রহ পৃথিবীর কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করছে যথেষ্ট গতিবেগে। তাদের আপেক্ষিক গতিবেগ সেকেন্ডে সাড়ে ১৪ কিলোমিটারেরও বেশি।
ছবি সৌজন্যে: নাসা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy