Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

শেষমেশ এসে গেল স্বপ্নের কম্পিউটার

গুগল কোম্পানির এআই কোয়ান্টাম টিম পেয়েছে সাফল্য। যে সাফল্যের পিছনে ধাওয়া করছিল তাবড় তাবড় থেকে শুরু করে অনেক স্টার্টআপ সংস্থাও।

‘সিকামোর’ প্রসেসরের সামনে দাড়িয়ে গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই।—ছবি এএফপি।

‘সিকামোর’ প্রসেসরের সামনে দাড়িয়ে গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই।—ছবি এএফপি।

পথিক গুহ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:১৪
Share: Save:

অনেক দিন ধরেই হবে-হবে করছিল, শেষ পর্যন্ত হয়েই গেল। কী? কোয়ান্টাম কম্পিউটার। তথ্য প্রযুক্তির স্বপ্ন পূরণ।

গুগল কোম্পানির এআই কোয়ান্টাম টিম পেয়েছে সাফল্য। যে সাফল্যের পিছনে ধাওয়া করছিল তাবড় তাবড় থেকে শুরু করে অনেক স্টার্টআপ সংস্থাও। আইবিএম থেকে এমআইটি, ক্যালটেক প্রভৃতির গবেষকেরা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মাঝে গুগল-এর গবেষকেরা তৈরি করে ফেললেন স্বপ্নের কম্পিউটার। আজ, বৃহস্পতিবার, প্রকাশিত হচ্ছে ‘নেচার’ জার্নালের যে সংখ্যাটি, তাতে গুগল-এর বিজ্ঞানীরা তাঁদের সাফল্যের বর্ণনা দিচ্ছেন।

ওঁদের বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন ‘সিকামোর’ প্রসেসর, এমন যন্ত্রগণক যা সাড়ে তিন মিনিটে করে ফেলবে সেই গণনা, যা এখনকার কম্পিউটার করত দশ হাজার বছরে। স্বভাবতই অনেক বিশেষজ্ঞ এই সাফল্যকে বলেছেন ‘কিটি হক মুহূর্ত’। রাইট ভাইদের সেই মাত্র ১২ সেকেন্ডের উড়ান, যা শুরু করেছিল আজকের বিমান যাত্রা। ওই যে এখনকার কম্পিউটারের দশ হাজার বছরের কাজ মাত্র সাড়ে ৩ মিনিটে করে ফেলা, এটাকেই তথ্য প্রযুক্তির পরিভাষায় বলা হয় ‘কোয়ান্টাম সুপ্রিমেসি’ (এখনকার কম্পিউটারকে টেক্কা দেওয়া)। ২০১২ সালে বিজ্ঞানী জন প্রেসকিল ওই শব্দবন্ধ উদ্ভাবন করেন। অবশ্য ওঁর প্রশ্ন ছিল, ‘তেমনটা কি সম্ভব হবে কখনও?’ তা-ই হয়েছে।

নাম কেন কোয়ান্টাম কম্পিউটার? উত্তর সহজ। এখনকার কম্পিউটার কাজ করে বিদ্যুতের সুইচ অন অথবা অফ হয়ে। আর কোয়ান্টাম কম্পিউটারে একই মুহূর্তে সুইচ অন এবং অফ দু’টোই একসঙ্গে। এটা যেন কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অন্যতম জনক আরউইন শ্রয়েডিঙ্গার-এর কল্পিত পরীক্ষার মতন। কোয়ান্টাম যে অদ্ভূতুড়ে, সেটা বোঝাতে শ্রয়েডিঙ্গার ওই কাল্পনিক পরীক্ষার কথা বলেছিলেন। যেখানে ডালাবন্ধ একটা বাক্সের মধ্যে আছে একটা হাতুড়ি, পটাশিয়াম সায়নাইড ভর্তি শিশি এবং একটা বিড়াল। কোয়ান্টাম মেকানিক্স কোনও কিছুই নিশ্চিত করে বলে না, তার কাছে সব কিছুই সম্ভাবনা। মানে, হাতুড়ির ঘা বিষ ভর্তি শিশির গায়ে পড়ার সম্ভাবনার কথাই শুধু বলে কোয়ান্টাম। তা হলে? হাতুড়ির ঘা শিশির গায়ে পড়েছে এবং পড়েনি। অর্থাৎ, পটাশিয়াম সায়নাইড বাক্সের মধ্যে ছড়িয়েছে এবং ছড়ায়নি। ফলে বেড়ালটা মরেছে এবং মরেনি। ডালাবন্ধ অবস্থায় একটার বদলে দু’টো বেড়াল। জীবিত ও মৃত। আর বাক্সের ডালা খুললে? তখন একটাই বেড়াল। জীবিত অথবা মৃত। ডালা খোলা মানে কোয়ান্টামের জগৎ থেকে বেরিয়ে আসা। ডালাবন্ধ অবস্থায় ওই যে ‘অথবা’ দূরে চলে গিয়ে ‘এবং’ দশা, সেটাই কোয়ান্টাম। সেই জন্যই কোয়ান্টাম কম্পিউটারে ইলেকট্রিক সুইচ অন এবং অফ দু’টোই একসঙ্গে।

গুগল কোম্পানির সাফল্যে প্রতিযোগী সংস্থাগুলি যারপরনাই ঈর্ষান্বিত। আইবিএম বলেই দিয়েছে, ‘ও কিস্যু না, অচিরেই ভুল প্রমাণিত হবে ওদের সাফল্য’। গুগল কিন্তু কোমর বেঁধে নেমেছে। মাসখানেক আগে এক বার সাফল্যের রিপোর্ট বার করেও প্রত্যাহার করে নিয়েছিল গুগল। আজ প্রখ্যাত ‘নেচার’ জার্নালে রিপোর্টটি প্রকাশিত। অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করছেন, রিপোর্ট খাঁটি।

অন্য বিষয়গুলি:

Quantum Computer Quantum Supremecy Google Sycamore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy