Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

রিচার্জ করার ব্যাটারি এনে নোবেল রসায়নে

কাজটা শুরু করেছিলেন হুইটিংহাম। জন্ম ব্রিটেনে। বয়স এখন ৭৮। কাজ করেছেন আমেরিকায়, বিংহামটন ইউনিভার্সিটি, নিউ ইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটিতে।

এম স্ট্যানলি হুইটিংহাম, জন বি গুডেনাফ ও আকিরা ইয়োশিনো

এম স্ট্যানলি হুইটিংহাম, জন বি গুডেনাফ ও আকিরা ইয়োশিনো

সংবাদ সংস্থা
স্টকহলম শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৫৯
Share: Save:

কয়েক দশক আগেও ট্রানজিস্ট র রেডিয়োর ব্যাটারির চার্জ ফুরোলে তা ফেলে দিতে হত। এখন হয় না।

কারণ, আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহারের প্রায় সব ব্যাটারিই এখন ‘রিচার্জেবল’। মোবাইল, ল্যাপটপ থেকে বিদ্যুতে চলা বা হাইব্রিড গাড়িতে এখন লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। বাজারে এসেছে ১৯৯১ সালে। ওজনে হাল্কা, ঢের বেশি শক্তিমান এই ব্যাটারি বদলে দিয়েছে প্রতিটি মানুষের জীবন। যাঁরা এই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মূলে, সেই তিন জনকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করল নোবেল কমিটি। রয়‌্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস ঘোষণা করল, রসায়নে এ বছর নোবেল পাচ্ছেন, এম স্ট্যানলি হুইটিংহাম, জন বি গুডেনাফ এবং আকিরা ইয়োশিনো। তিন জনের মধ্যে সমান ভাবে ভাগ হবে পুরস্কারের অর্থমূল্য।

কাজটা শুরু করেছিলেন হুইটিংহাম। জন্ম ব্রিটেনে। বয়স এখন ৭৮। কাজ করেছেন আমেরিকায়, বিংহামটন ইউনিভার্সিটি, নিউ ইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। হুইটিংহামের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যান গুডেনাফ। সবচেয়ে বেশি বয়সে নোবেলজয়ী হিসেবে পেটন রৌসের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন তিনি। রৌস পেয়েছিলেন ৮৭ বছর বয়সে, চিকিৎসাবিজ্ঞানে। গুডেনাফের জন্ম জার্মানিতে, ১৯২২ সালে। ৯৭ বছর বয়সি এই বিজ্ঞানী ব্যাটারি তৈরির জন্য গবেষণাটি করেছিলেন আমেরিকার টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৭১ বছর বয়সি ইয়োশিনোর জন্ম-কর্ম জাপানে। গবেষণা করেছেন টোকিয়োর আসাহি কর্পোরেশন ও নাগোয়ার মেইজো ইউনিভার্সিটিতে।

হঠাৎ কোনও উদ্ভাবন নয়, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি তৈরির কাজে হুইটিংহাম হাত দিয়েছিলেন সচেতন ভাবেই। গত শতকে ৭০-এর দশকে তখন তেল সঙ্কট তীব্র। তাই খুঁজছিলেন জীবাশ্ম জ্বালানির উপরে নির্ভরতা থেকে মুক্তির কোনও পথ। তারই সূত্রে জলে ভাসে এমন হাল্কা ধাতু লিথিয়াম দিয়ে তৈরি করেন একটি ব্যাটারি। শক্তি সঞ্চয় বা জোগান দেওয়ার কাজটি করতে পারলেও এটি ছিল ভঙ্গুর। গুডেনাফ লিথিয়ামের বদলে অন্য ধাতু ব্যবহার করে অনুরূপ একটি ব্যাটারি তৈরি করেন। যা ছিল আর একটু উন্নত। ৪ ভোল্টের বিদ্যুৎ জোগাতে সক্ষম ছিল এটি। এর পরে ইয়োশিনো কার্বন-জাত কোনও বস্তুর মধ্যে লিথিয়াম আয়নকে রাখার ব্যবস্থা করেন। এ ছিল এক ম্যারাথন দৌড়। এক জন তার অংশটুক দৌড়ে ব্যাটন তুলে দিয়েছেন আর এক জনের হাতে। তাতেই কেল্লা ফতে! বাণিজ্যিক ভাবে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার শুরু হয় ১৯৯১-এ। যে ব্যাটারি ধরে রাখতে পারে সূর্যের আলো বা বায়ুপ্রবাহ থেকে পাওয়া শক্তিও। ইয়োশিকো এ দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ভাল বিজ্ঞানীর দু’টি গুণ থাকা জরুরি। ভাবনার নমনীয়তা ও অধ্যবসায়। কখনও হাল ছাড়লে চলবে না।’’

এ ব্যাপারে বয়স যে কোনও বাধা নয়, গুডেনাফ তার প্রমাণ। ৯৭ বছর বয়সে এখনও নিয়মিত যান ল্যাবরেটরিতে। সতীর্থ ও পরিচিতেরা শুধু নন, নেট-দুনিয়াও জানেন তাঁর আর একটি গুণের কথা। হাসতে পারেন বটে গুডেনাফ। দম ফাটা, প্রাণ খোলা, দমকে দমকে হাসি। চারটে ঘর পেরিয়েও যা অনায়াসে কানে আসে। তাঁর নোবেল জয়ের পরে এখন যে হাসি শুনতে নেট-জগতে কান পাতছে গোটা দুনিয়া।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy