Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
National News

এক ঘরে ঢুকিয়ে মহিলা কর্মীদের নগ্ন করে ‘ফিটনেস টেস্ট’, তোলপাড় সুরত

বিবাহিত মহিলাদের তো বটেই, অবিবাহিতদেরও প্রেগনেন্সি সম্পর্কিত নানা রকম অস্বস্তিকর প্রশ্ন এবং শারীরিক পরীক্ষা করা হয় বলে অভিযোগ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
সুরত শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:২৮
Share: Save:

প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ‘মেডিক্যাল ফিটনেস টেস্ট’ হওয়ার কথা। কিন্তু শিক্ষানবীশ মহিলা কর্মীদের এক ঘরে ঢুকিয়ে নগ্ন করে সেই শারীরিক সুস্থতা ও সক্ষমতার পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠল গুজরাতের সুরতের পুর হাসপাতালের বিরুদ্ধে। সুরত পুর কর্পোরেশনের কর্মী সংগঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পুর কমিশনার। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন সুরতের মেয়র।

ঘটনা সুরত মিউনিসিপ্যাল ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এসএমআইএমইআর) হাসপাতালে। এই হাসপাতাল পরিচালনার ভার পুর কর্পোরেশনের উপর। তিন বছর আগে ১০ জন ‘ট্রেনি ক্লার্ক’ নিয়োগ করা হয় ওই হাসপাতালের জন্য। প্রশিক্ষণের মেয়াদ শেষে বৃহস্পতিবার তাঁরা প্রথামাফিক মেডিক্যাল ফিটনেস টেস্ট দিতে ওই হাসপাতালে যান। সেখানেই এই ঘটনা ঘটে।

সুরত পুর কর্পোরেশনের কর্মী ইউনিয়নের অভিযোগ, ফিটনেস টেস্টের নামে ১০ জন মহিলা কর্মীকে গাইনোকলজি ওয়ার্ডের একটি ঘরে ঢোকানো হয়। সেখানে সকলকে সমস্ত পোশাক খুলে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। বিবাহিত মহিলাদের তো বটেই, অবিবাহিতদেরও প্রেগনেন্সি সম্পর্কিত নানা রকম অস্বস্তিকর প্রশ্ন এবং শারীরিক পরীক্ষা করা হয়।

কর্মী সংগঠনের অভিযোগ পাওয়ার পরেই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন পুর কমিশনার বাঞ্ছানিধি পানি। কমিটিতে রয়েছেন ওই মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন ডিন কল্পনা দেশাই, সহকারী পুর কমিশনার গায়ত্রী জরিওয়ালা এবং এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তৃপ্তি কলাথিয়ার। তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে হবে।

আরও পড়ুন: লখনউয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র খুনের কিনারা, গ্রেফতার প্রাক্তন বিধায়কের ছেলে

নিয়ম অনুযায়ী প্রশিক্ষণ শেষে পূর্ণ সময়ের কর্মী হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার আগে এই শারীরিক সুস্থতা ও সক্ষমতার পরীক্ষা দেওয়া বাধ্যতামূলক। অভিযোগকারী কর্মী সংগঠনের সদস্যদের বক্তব্য, তাঁরাও ফিটনেস টেস্টের বিরোধী নন। সেটা অবশ্যই এক জন করে করার কথা। কিন্তু যে ভাবে সবাইকে একসঙ্গে নগ্ন হতে বাধ্য করা হয়েছে এবং পরীক্ষা করা হয়েছে, তা তীব্র নিন্দনীয়। এটা বেআইনি এবং মানবতা ও নারীর সম্ভ্রম-বিরোধী।

কর্মী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ শেখ বলেন, ‘‘ফিটনেস টেস্টের সময় চিকিৎসকরা যে ভাবে গর্ভধারণ সম্পর্কিত অস্বস্তিকর প্রশ্ন করেন, সেগুলি বন্ধ হওয়া দরকার। তা ছাড়া ওই দলে অবিবাহিত মহিলারাও ছিলেন। তাঁরাও আগে কখনও অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন কি না, তার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। অন্য মহিলাদের সামনে ওই কর্মীদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলা হয়েছে। শারীরিক পরীক্ষার সময় মহিলাদের সম্ভ্রম ও সম্মানের কথা অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত।’’

আরও পড়ুন: আসাদউদ্দিনের সামনে সিএএ বিরোধী মঞ্চে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান, গ্রেফতার তরুণী

সুরতের মেয়র জগদীশ পটেলও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এটা অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। প্রশিক্ষণ শেষে সব কর্মীকেই ওই পরীক্ষা দিতে হয়। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

কয়েক দিন আগে গুজরাতেরই ভুজের একটি গার্লস কলেজে প্রায় একই ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। তার পরেও যে এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে সচেতনতা ফেরেনি, হুঁশ ফেরেনি, সুরাতের এই ঘটনা তার উদাহরণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

অন্য বিষয়গুলি:

Surat Medical Test Surat Municipal Corporation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE