প্রতীকী ছবি।
রাজ্যগুলির চাপ এবং ‘দৈবদুর্বিপাক’ বিতর্কের মধ্যেই কেন্দ্র জানিয়ে দিল, জিএসটির ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়া হবে। তবে কেন্দ্রের বদলে রাজ্য স্তরেই ঋণ নিয়ে ক্ষতিপূরণের পক্ষে সওয়াল করেছে কেন্দ্র। যদিও সেই ঋণ কেন্দ্র মিটিয়ে দেবে বলে রাজ্যগুলিকে চিঠি পাঠিয়ে প্রতিশ্রুতি দিল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিপুল অর্থনৈতিক চাপ এবং কেন্দ্রের আয় ব্যাপক ভাবে কমে গেলেও জিএসটির ক্ষতিপূরণ রাজ্যগুলি পেয়ে যাবে বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের সচিব এবং ব্যয়সচিব রাজ্যগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করবেন। রাজ্যগুলির জিএসটি সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেবেন তাঁরা। তার আগে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করে ওই চিঠিতে বলা হয়েছে— প্রথমত রাজ্যগুলিকে ঋণের সুদ বা সার্ভিস চার্জ দিতে হবে না বা অন্য কোনও তহবিল থেকে ঋণ পরিষোধ করতে হবে না। অন্য কোনও তহবিল থেকে মূল টাকাও দিতে হবে না। তবে চিঠিতে এও বলা হয়েছে, ‘‘রাজ্য স্তরে সম্ভব হলে কেন্দ্রীয় স্তরে ঋণ নেওয়ার পন্থা এড়িয়ে চলা হবে।’’ অর্থাৎ, কেন্দ্রের বক্তব্য ঋণ নিতে হলে রাজ্যগুলিকেই নিতে হবে। পরে তা সুদে-আসলে কেন্দ্র মিটিয়ে দেবে।
প্রয়াত অরুণ জেটলি অর্থমন্ত্রী থাকার সময় জিএসটি চালু হয়েছিল। জিএসটি চালুর সময় জেটলির প্রস্তাব ছিল, জিএসটি-র টাকা জিএসটি কাউন্সিলকেই মেটাতে হবে। কেন্দ্রের চিঠিতে সেই বিষয়ের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার অরুণ জেটলির বিবৃতিকেই সমর্থন করে এবং সেই মতো বন্দোবস্ত করার জন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে পর্যালোচনা করছে। বকেয়া জিএসটি যত ক্ষণ না মেটানো সম্ভব হচ্ছে, তত ক্ষণ কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে সাহায্য করবে।’’ অন্য দিকে অ্যাটর্নি জেনারেল কে সি বেণুগোপালও জিএসটি কাউন্সিলকেই জিএসটির টাকা মেটানোর কথা বলেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের ওই পরামর্শ মেনে নেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে কেন্দ্রের এই চিঠিতে।
আরও পড়ুন: কোভিডের আগের অব্যবস্থা নিয়ে কী বলবেন ‘ভগবানের দূত’? নির্মলাকে খোঁচা চিদম্বরমের
করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার আগে থেকেই দেশে অর্থনীতির ঝিমুনি এবং তার পরে করোনা ও লকডাউনের ধাক্কা— এই দুইয়ের জেরে জিএসটির পাশাপাশি, সেস সংগ্রহও কমেছে। ফলে প্রতি দু’মাস অন্তর রাজ্যগুলির ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা থাকলেও, গত বছর থেকেই তা অনিয়মিত হয়েছে। এরই মধ্যে অর্থসচিব অজয়ভূষণ পাণ্ডে বলেন, কেন্দ্রের পক্ষে ওই ক্ষতিপূরণের টাকা মেটানো সম্ভব নয়।
তাতেই বিতর্ক শুরু হয়। বিশেষ করে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি থেকে তীব্র বিরোধিতা শুরু হয়। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিরোধীদের অনলাইন বৈঠকে এ নিয়ে সরব হন। তার পর কেন্দ্রের এই চিঠিতে রাজ্যগুলিকে কিছুটা আশ্বস্ত করার চেষ্টা করা হল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
আরও পড়ুন: প্রস্তুতি সারা, পুজোর আগেই কি চলবে মেট্রো-লোকাল? রেলকে চিঠি রাজ্যের
করোনার ধাক্কায় কেন্দ্রও যে বিরাট আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি, সে কথাও তুলে ধরা হয়েছে চিঠিতে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছিলেন, কোভিড ‘ভগবানের মার’। তা নিয়েও কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি অর্থমন্ত্রী তথা কেন্দ্রকে কটাক্ষে বিঁধেছে। কেন্দ্রের চিঠিতে অবশ্য বলা হয়েছে, ‘‘জিএসটি ছাড়াও কেন্দ্রের আয়ও বিপুল হারে কমে গিয়েছে। আয়করে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। আমদানি কমে যাওয়ায় শুল্ক আয় তলানিতে। অথচ করোনার মোকাবিলা এবং জাতীয় নিরাপত্তা খাতে খরচ অনেক বেড়েছে। এটা শুধু কেন্দ্র সরকারের একার সমস্যা নয়, জাতীয় সঙ্কট।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy