ফাইল চিত্র।
নতুন শিক্ষা নীতি ঘোষণার দিনেই টুইটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দাবি ছিল, এটি বদলে দেবে লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ার জীবন। শনিবার তিনি বললেন, এই নীতিই হবে বিশ্বের দরবারে ভারতের শীর্ষে ওঠার সিঁড়ি।
সকলের জন্য শিক্ষা থেকে ভারতীয় ভাষায় জোর। মাতৃভাষায় প্রথম পাঠের সুযোগ থেকে নতুন শতাব্দীর উপযুক্ত হতে আধুনিক প্রযুক্তির হাত ধরা। নিজের পছন্দে পড়ার বিষয় বাছাইয়ের সুবিধা থেকে কলেজের চৌহদ্দিতে অনেক বেশি পড়ুয়াকে টেনে আনার পণ। এ দিন শিক্ষা মন্ত্রক আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভিডিয়ো-বক্তৃতায় নতুন শিক্ষা নীতির বিভিন্ন বিষয় ছুঁয়ে গিয়েছেন মোদী। কিন্তু বিরোধী শিবির, প্রতিবাদী পড়ুয়া এবং শিক্ষাবিদদের একাংশের মতে, প্রশ্ন রয়েছে বহু ছত্রেই।
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “সংবিধান রচয়িতা বি আর অম্বেডকর চাইতেন, শিক্ষা হোক এমন, যা সকলে পেতে পারেন। এই নীতি তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলি।” কংগ্রেস নেতা শশী তারুর থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদদের খটকা, তার জন্য সবার আগে জরুরি শিক্ষায় সরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধি। অথচ কেন্দ্র ও সব রাজ্যের মিলিত বরাদ্দ ৫২ বছর ধরে আটকে আছে জিডিপির ৬ শতাংশের নীচে। মোদী জমানায় কেন্দ্রীয় বরাদ্দ ০.৫৩% থেকে নেমে এসেছে ০.৪৪ শতাংশে!
সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি-সহ বিরোধীদের অনেকের বক্তব্য, শিক্ষার বিদেশিকরণ, বেসরকারিকরণ ও বাণিজ্যকরণের রাস্তা প্রসারিত করা হয়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, আগামী দিনে সমাজের এক বড় অংশের নাগালের বাইরে চলে যাবে শিক্ষা। কঠিন হবে ফি গোনা।
মোদী মনে করিয়েছেন, এই নীতি তৈরি হয়েছে পাঁচ বছর ধরে, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে বিস্তর আলাপ-আলোচনার পরে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ-সহ অনেক বিরোধী-শাসিত রাজ্যের ক্ষোভ, শিক্ষার মতো যৌথ বিষয়েরও কেন্দ্রীকরণের চেষ্টা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, সংসদ এড়িয়ে এ ভাবে নীতি ঘোষণার কারণ কী?
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, এই নীতি প্রণয়নের অন্যতম লক্ষ্য, মুখস্থবিদ্যা-নির্ভর পড়াশোনা থেকে মুক্তি। অন্যের পছন্দের বিষয় নিতে বাধ্য না-হয়ে নিজের মনের কথা শোনার সুযোগ। ভাল লাগলে, অঙ্কের সঙ্গে সঙ্গীতের চর্চা। যাতে তৈরি হয় যুক্তিবাদী, প্রশ্নমুখর মন। কিন্তু প্রতিবাদী পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসা, যুক্তির জায়গা থেকেই তো সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। তা হলে সেই প্রতিবাদকে কেন দুরমুশ করার এত চেষ্টা?
মোদীর মতে, এই নীতির হাতিয়ার একুশ শতকের প্রযুক্তি। যার ফসল হবে এই শতকের উপযুক্ত সফল ছাত্র-ছাত্রী। চাকরি প্রার্থী না-হয়ে নতুন কাজের সুযোগ তৈরি করবেন এঁরা। কিন্তু বিরোধীদের কটাক্ষ, প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকাঠামোই যে সকলের নেই, প্রধানমন্ত্রী তা জানেন কি? চাকরির সুযোগ তৈরিতে কি মন দেবে সরকার? ইংরেজির ভিত নড়বড়ে হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy