—প্রতীকী ছবি।
দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা ভারতীয় জীবন বিমা নিগম (এলআইসি)-কে বেসরকারি কোম্পানিগুলির হাতে ‘বেচে’ দিতে চাইছে কেন্দ্র, এমন জল্পনা ছিল। শনিবার বাজেট পেশ করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তেমনই ইঙ্গিত দিলেন বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। সেই সঙ্গে ৬৩ বছর ধরে গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জনে যে সাফল্যের মুখ দেখেছিল এলআইসি, তার ভিতও এ দিন নড়ে গেল বলে মত এলআইসি-রকর্মচারীদের।
গ্রাহকেরা সন্দিহান, এলআইসি-র অংশীদারিত্বের একাংশ বিক্রি হলে, তাঁদের টাকা কি সুনিশ্চিত থাকবে? যদিও কত শতাংশ শেয়ার বিক্রি করা হবে তা এ দিন জানাননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তবে এলআইসি-র কর্মচারীদের আশঙ্কা, এয়ার ইন্ডিয়ার মতোই ধাপে ধাপে ১০০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে বেসরকারি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হবে এলআইসি-কে।জীবন বিমা কর্মচারী সমিতি(কলকাতা ডিভিশন)-র সভাপতি রামকৃষ্ণ দত্ত বলেন, “২৩টি বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে লড়াই করেএখনও জীবন বিমা ক্ষেত্রে এলআইসি ৭৪ শতাংশ বাজার নিজেদের দখলে রেখে। তা থেকেই বোঝা যায়, গ্রাহকদের ভরসা কোথায় রয়েছে। বেসরকারিকরণের পথে এগোচ্ছে কেন্দ্র। আমরা এর তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি।”
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অমিতেষ সরকার বলেন, “একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত এই বিমা সংস্থার ৪২ কোটি গ্রাহক রয়েছেন রয়েছে দেশজুড়ে। শেষ তথ্য অনুযায়ী ৩১ লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি এবং ২৮ লক্ষ কোটি টাকার লাইফ ফান্ড রয়েছে। এই মুহূর্তে ওই ৪২ কোটি গ্রাহককেই তাঁদের আমনত ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এলআইসি। এখনই চিন্তার কোনও কারণ নেই। তবে ভবিষ্যতে কী হবে, তা বলতে পারছি না।”
আরও পড়ুন: নির্মলার ‘ডজে’ হতাশ মধ্যবিত্ত, ব্যঙ্গের তির ছুটছে সোশ্যাল মিডিয়ায়
এ দিন চাঁদনিচকের কাছে এলআইসি ভবনে নিজস্ব প্রয়োজনে এসেছিলেন বেহালার বাসিন্দা অমিত চক্রবর্তী। তিনি মোবাইলে এক নজরে বাজেটের হালহাকিকত দেখছিলেন। এলআইসি-র বিষয়ে তাঁর মত, “অনেক কষ্ট করে গ্রাহকেরা এলআইসি-তে টাকা জমান। জীবন বিমা করেন। সে বার নোটবন্দির সময়আমাদের চোখের জল বেরিয়েছিল। এ বার এলআইসির আমানতের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, তা নরেন্দ্র মোদীই জানেন।”
অল ইন্ডিয়া ইনসিওরেন্স এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন-এর যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরেই প্রতিবাদ জানাচ্ছি কেন্দ্রীয় নীতি নিয়ে। একজন মানুষ নিজের অর্থ সঞ্চিত রাখবে, জিএসটি দিয়ে কেন? চড়া হারে, ১৮ শতাংশ জিএসটি দিয়ে পলিসি করতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এ বার বেসরকারি ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব বিনিয়োগ হলে, গ্রাহকদের অর্থ সুরক্ষিত আর থাকবে না। এর প্রতিবাদে ৪ ফ্রেব্রুয়ারি ১ ঘণ্টা কাজ বন্ধ রেখে রাস্তায় নামছি আমরা।”
আরও পড়ুন: বাজেটে কিসের দাম বাড়ল? কমল কিসের?
এ দিন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানান, সরকার তহবিল সংগ্রহের জন্যে বাজারে ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং (আইপিও)-এর মাধ্যমে এলআইসি-র শেয়ার ছাড়া হবে। কেন এলআইসি-র শেয়ার বিক্রি করতে চাইছে কেন্দ্র? তার জবাবও নির্মলা সীতারামন দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘গত বছর আর্থিক ঘাটতির পরিমাণ ছিল জি়ডিপির ৩.৮ শতাংশ। সেই ঘাটতির পরিমাণ কমানোর লক্ষ্যেই এলআইসি-কে আংশিক ভাবে বেসরকারি হাতেই দিতে চলেছে সরকার।’’ তবে এই ব্যাখা মানতে নারাজ কর্মচারীরা। তাঁদের যুক্তি, আসলে কেন্দ্রের নজর পড়েছে এলআইসি-র কোষাগারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy