Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বিকাশদা বনাম রাজা পিটার, জেল থেকেই জোর লড়াই

প্রথম জন মাওবাদী নেতা কুন্দন পহান ওরফে বিকাশদা। ২০১৭ সালে এই মাওবাদী কমান্ডার আত্মসমর্পণ করেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুব্রত বসু
তামাড় শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৩১
Share: Save:

দু’জনেই লড়ছেন জেল থেকে। এক জনের নামে হত্যা-সহ মোট ১২৪টি অপরাধের মামলা। তাঁর নামে ইনাম ঘোষণা হয়েছিল ১৫ লক্ষ টাকা। অন্য জন, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মন্ত্রী। হত্যার মামলায় চার্জশিট জমা পড়েছে তাঁর নামেও। দু’জনেরই বিশাল কাটআউট ঝুলছে রাঁচির ৬০ কিলোমিটার দূরে তামাড় কেন্দ্রের সর্বত্র।

প্রথম জন মাওবাদী নেতা কুন্দন পহান ওরফে বিকাশদা। ২০১৭ সালে এই মাওবাদী কমান্ডার আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশের কাছে কুন্দনের দাবি, কিষেণজি-সহ একাধিক মাওবাদী নেতার সঙ্গে কাজ করেছেন। আদালতে বলেন, ‘আমি মাওবাদী। কিন্তু খুনি নই।’ কুন্দন দাঁড়িয়েছেন ঝাড়খণ্ড পার্টি (এনোস)-র টিকিটে।

দ্বিতীয় জন, গোপালকৃষ্ণ পাতর ওরফে রাজা পিটার অবশ্য এসেছেন অপরাধ জগত থেকেই। কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুল। রাজা পিটারকে এক সময় অপরাধ জগত চিনত ‘ডন পিটার চার্লস’ নামে। ১২ বছর জেল খেটে ২০০০ সালে রাজনীতিতে আসেন তিনি। ২০০৯ সালে বিধায়ক না হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন শিবু সোরেন (গুরুজি)। ছ’মাস পরে তামাড় থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে পিটারের কাছে হারেন গুরুজি। শিবু সোরেনের সরকার পড়ে যাওয়ার পরের ভোটে ফের জিতে অর্জুন মুণ্ডা সরকারের আবগারি-মন্ত্রী হন ‘জায়েন্ট কিলার’ পিটার। কখনও জেডি(ইউ),কখনও নির্দল, কখনও বিজেপি-তে থাকা পিটার এ বার এনসিপি-দলের প্রার্থী।

আরও পড়ুন: মোদীর সফর বাবদ এয়ার ইন্ডিয়া পাবে ৪৫৯ কোটি

তামাড়ে পিটারের অফিসে শরদ পাওয়ারের ছোট একটা ছবি রাখা আছে ঠিকই। কিন্তু এখানের বেশির ভাগ কর্মী-সমর্থক তাঁকে চেনেন না বললেই হয়। দলের এক কর্মকর্তা শক্তি চৌধুরী বলেন, ‘‘ভাইয়া কোন দলে আছেন, সেটা বড় কথা নয়। তাঁর নামটাই যথেষ্ট। নইলে গুরুজির মতো নেতা এখানে তাঁর কাছে হেরে ভূত হন! পিটার হলেন তামাড়ের রবিন হুড।’’ কী রকম? শক্তির জবাব, ‘‘গরিবের মেয়ের বিয়ে, চিকিৎসা, ছেলেমেয়ের পড়াশোনা— সব কিছুতেই তিনি আছেন সাহায্যের ডালি নিয়ে। স্ত্রী আরতি চালান ‘সঞ্জীবনী’ নামের একটি ট্রাস্ট। এর মাধ্যমে গরিব শিশুদের পড়াশোনা, খেলাধুলার কোচিং দেওয়া হয়।’’ স্থানীয় বাসিন্দা রাজদীপ সিংহও বলেন, ‘‘তামাড়ে পিটারকে হারানো খুব সহজ নয়।’’

কুন্দনের কর্মীরাও বিলক্ষণ জানেন সে কথা। তাই কুন্দনেরও ‘রবিন হুড ইমেজ’ তৈরির উপরে জোর দিয়েছেন তাঁরা। দলের কর্মকর্তা অজয় চৌধুরী বলেন, ‘‘এত দিন কুন্দন বন্দুক দেখিয়ে বড়লোকের টাকা লুটে গরিবদের বিলিয়েছেন। এখন ব্যালট দিয়ে সেই কাজই করবেন।’’

অনেক অমিলের মধ্যে জেলবন্দি দুই প্রার্থীর একটা মিল রয়েছে। দু’জনের এই এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক ও মন্ত্রী রমেশ সিংহ মুন্ডার খুনের মামলায় অভিযুক্ত। ২০০৮-এ দুই দেহরক্ষী-সহ খুন হন রমেশ। ২০১৭ সালে রাজ্য এই মামলা এনআইএ-র হাতে তুলে দেয়। এনআইএ চার্জশিটে বলেছে, রাজা পিটারই এই খুনের সুপারি দিয়েছিল কুন্দনকে। নিহত রমেশের ছেলে বিকাশ এ বার এই কেন্দ্রের আজসু (অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন)-র প্রার্থী। বাবার খুনে অভিযুক্তদের হারানোর আর্জি নিয়ে তিনি ঘুরছেন এলাকায়। এই কেন্দ্রে জিততে জোর প্রচার চালাচ্ছে বিজেপিও।

অন্য বিষয়গুলি:

Jharkhand Assembly Election 2019 Jharkhand
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy