ছবি রয়টার্স।
অসম জীবনযাত্রা। অপর্যাপ্ত সুবিধা। আর পায়ে পায়ে পরিকল্পনার খামতি। সারা বিশ্বের তাবড় শহরের দৈন্য চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে কোভিড ১৯-এর আক্রমণ। তার থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি হতে এ বার শহরের মানচিত্র আমূল বদলের ডাক দিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। তার জন্য ওই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান জোর দিতে বলছে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের নিখুঁত যুগলবন্দি এবং প্রয়োজনে ত্রাণ প্রকল্প জোগানোর উপরে। কিন্তু এ দেশে এখনও তা দেখা যায়নি বলেই বিরোধীদের অভিযোগ।
নিউ ইয়র্ক থেকে ভিডিয়ো-বার্তায় রাষ্ট্রপুঞ্জের সেক্রেটারি জেনারেল আন্তোনিয়ো গুতেরেস আজ বলেন, করোনার কামড় সব থেকে বেশি হজম করতে হয়েছে শহরগুলিকেই। ওই প্রতিষ্ঠানের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারা পৃথিবীতে করোনা-আক্রান্তের প্রায় ৯০ শতাংশই শহরাঞ্চলের বাসিন্দা। অথচ এই সমস্ত শহরের ২৪ শতাংশ মানুষ থাকেন বস্তি কিংবা কোনও অস্থায়ী পরিকাঠামোয়। ৫০ শতাংশের বাসস্থানের ৪০০ মিটারের মধ্যে প্রাণ খুলে শ্বাস নেওয়ার মতো কোনও ফাঁকা জায়গা নেই। করোনার সঙ্গে যুঝতে সাবানে বার বার হাত ধোয়া এবং পরিচ্ছন্ন থাকার কথা বলা হচ্ছে। অথচ ২২০ কোটির (২৯ শতাংশ) দরজায় পরিষ্কার পানীয় জল পৌঁছয় না। ঠিকঠাক নিকাশি ব্যবস্থাটুকু পর্যন্ত নেই ৪২০ কোটির (৫৫ শতাংশ)। উন্নয়নশীল দুনিয়ায় এই ছবি আরও বিবর্ণ। কম গড় আয়ের দেশগুলির শহরে পরিষ্কার পানীয় পান মাত্র ২৭ শতাংশ মানুষ। আফ্রিকার বড় অংশে নিকাশির সুবিধা প্রাপক ২০ শতাংশ!
গুতেরেসের বক্তব্য, চরম অসাম্যের মধ্যেও শহরের আর্থিক কর্মকাণ্ড থেকেই আসে সারা পৃথিবীর মোট উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশ। তাই করোনার আক্রমণ সেই শহরের উপরে আছড়ে পড়া নাড়িয়ে দিয়েছে অর্থনীতির ভিতকে। সমস্যা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে তিনি জোর দিচ্ছেন আর্থিক অসাম্য কমানো, সামাজিক বন্ধন নিবিড় করা এবং সঠিক পরিকাঠামো তৈরির উপরে।
আরও পড়ুন: কী ভাবে কাজ করবে কেন্দ্রীয় সংস্থার টিকা? গবেষকদের জবাব...
রাষ্ট্রপুঞ্জের দাওয়াই, শহরের মানচিত্র নতুন করে তৈরি করা জরুরি। নজর দেওয়া উচিত প্রত্যেকের মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের বিষয়ে। পানীয় জল, নিকাশির বন্দোবস্ত করতে স্থানীয় প্রশাসনকে অনেক বেশি উদ্যোগী হতে হবে বলে মনে করে তারা। সেই সঙ্গে পাশে দাঁড়াতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। এই সমস্যা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে দরকারে সরকারের তরফ থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ জোগানোরও পরামর্শ দিচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
আরও পড়ুন: দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লক্ষ পেরিয়ে গেল
কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, ২০ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্প তো শুধু ঋণের হরেক প্রকল্পে ঠাসা। রাজকোষ থেকে এই কঠিন সময়ে দরিদ্রদের ত্রাণ মোদী সরকার জোগাল কোথায়? এই ত্রাণ হিসেবে বিভিন্ন দেশের যে সমস্ত উদাহরণ (কাজ খোয়ানোদের বাড়ির ভাড়া আপাতত মিটিয়ে দেওয়া, ভাড়া না-মেটানোর জন্য ঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়া বন্ধ করা, দরিদ্রদের জন্য অস্থায়ী মাথা গোঁজার ঠিকানা তৈরি ইত্যাদি) রাষ্ট্রপুঞ্জ দিয়েছে, সেখানেও নাম নেই ভারতের।
তবে সূত্রের খবর, গ্রামের ধাঁচে শহরেও একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্প চালু করার কথা গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে কেন্দ্র। কিন্তু জীবন ধারণের খরচ তুলনায় বেশি হওয়ায় দৈনিক মজুরিও বেশি হতে হবে সেখানে। করোনার মধ্যে এই টানাটানির সংসারে তা কোথা থেকে আসবে, সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয় এখনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy