এই বিজ্ঞাপন ঘিরেই বিতর্ক। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।
উৎসবের বিজ্ঞাপনে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য তুলে ধরতে গিয়ে বিপাকে গয়না প্রস্তুতকারী সংস্থা। ‘লভ জিহাদ’ এর তত্ত্ব প্রচার করার অভিযোগ উঠল তাদের বিরুদ্ধে। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের গয়না বয়কট করার ডাকও উঠল। বাধ্য হয়ে বিজ্ঞাপনটি তুলে নিতে বাধ্য হল ওই সংস্থা।
ধর্মীয় ঐক্যই বিজ্ঞাপনটির মূল বিষয়বস্তু ছিল। তাতে দেখানো হয়, মুসলিম পরিবারে বিয়ে হয়ে আসা এক হিন্দু তরুণী গর্ভবতী। হাত ধরে তাঁকে সাধভক্ষণ অনুষ্ঠানে নিয়ে যাচ্ছেন শাশুড়ি। আয়োজন দেখে ওই তরুণী বলেন, ‘আপনাদের তো এ সবের রীতি নেই!’ জবাবে শাশুড়ি বলেন, ‘মেয়েকে খুশি করার রীতি সব জায়গাতেই রয়েছে।’
বিজ্ঞাপনটি সামনে আসতেই ওই গয়না প্রস্তুতকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন এক শ্রেণির নেটাগরিক। হিন্দু-মুসলিম একতার দোহাই দিয়ে আদতে ‘লভ জিহাদ’-এর প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। এঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন বিজেপি নেতা খেমচাঁদ শর্মা। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘মুসলিম বাড়িতে হিন্দু পুত্রবধূকে দেখানোই বা হচ্ছে কেন, আর সেটাকে মহিমান্বিতই বা করা হচ্ছে কেন? মুসলিম মেয়ের হিন্দু পরিবারে বিয়ে হয়েছে, তা কেন দেখালেন না? সব দেখে শুনে তো মনে হচ্ছে, লভ জিহাদকেই প্রচার করছেন আপনারা। একটি বিশেষ ধর্মের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছেন।’
.@TanishqJewelry :
— khemchand sharma #Brajwasi #RadheRadhe (@SharmaKhemchand) October 12, 2020
Why are you showing a Hindu "daughter in law" to a muslim family and glorifying it?
Why dont you show a Muslim daughter in law in your ads with a Hindu family?
Look like you are promoting #LoveJihad & favouring a particular Faith only...#BoycottTanishq
আরও পড়ুন: আগামী বছরেই একাধিক করোনা টিকা, জানালেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী
গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কঙ্গনা রানাউত লেখেন, ‘বিষয়বস্তু নিয়ে তেমন সমস্যা নেই, কিন্তু যে ভাবে গোটা ব্যাপারটা তুলে ধরা হয়েছে, তাঁর ধর্মবিশ্বাসকে স্বীকৃতি দেওয়ায় ভীতত্রস্ত ভাবে শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে কৃতজ্ঞতা জানাতে দেখা গিয়েছে হিন্দু মেয়েকে। কিন্তু তিনি কি ওই বাড়ির সদস্য নন? কেন ওদের ক্ষমা আশ্রয় করে বাঁচতে হবে ওঁকে? নিজের বাড়িতে কেন মাথা নত করে, ভয়ে থাকতে হবে? লজ্জাজনক।’
The concept wasn’t as much a problem as the execution was,the fearful Hindu girl apologetically expressing her gratitude to her in-laws for the acceptance of her faith, Isn’t she the woman of the house? Why is she at their mercy? Why so meek and timid in her own house? Shameful. https://t.co/LDRC8HyHYI
— Kangana Ranaut (@KanganaTeam) October 12, 2020
বিজ্ঞাপনটি যাঁরা তৈরি করেছেন, তাঁদের সন্ত্রাসবাদী বলেও আক্রমণ করেন কঙ্গনা। তিনি লেখেন, ‘সৃজনশীল এই সন্ত্রাসবাদীরে আমাদের অবচেতনে যা ঢুকিয়ে দিতে চাইছে, হিন্দু হিসেবে সে ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে আমাদের। এ নিয়ে সমালোচনা করতে হবে, বিতর্কে যোগ দিতে হবে, যা কিছু মগজে ছুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, তা বিচার বিবেচনা করে দেখতে হবে। তবেই আমাদের সভ্যতাকে বাঁচানো সম্ভব।’
As Hindus we need to be absolutely conscious of what these creative terrorists are injecting in to our subconscious, we must scrutinise, debate and evaluate what is the outcome of any perception that is fed to us, this is the only way to save our civilisation #tanishq
— Kangana Ranaut (@KanganaTeam) October 13, 2020
নিজেদের গয়না বিক্রি করতে ওই সংস্থা জিহাদি তাস ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ করেন নেটাগরিকদের কেউ কেউ। অনেকে আবার প্রশ্ন তোলেন, তথাকথিত ধর্মীয় ঐক্যের বিজ্ঞাপন বা ভিডিয়োয় শুধুমাত্র মুসলিমদেরই মহিমান্বিত করে দেখানো হয় কেন? ওই সংস্থার গয়না বয়কটের ডাক দেন তাঁরা। তাতেই ইউটিউব থেকে বিজ্ঞাপনটি তুলে নেয় ওই সংস্থা।
তবে ধর্মীয় ঐক্যের পক্ষে সওয়াল করায় যে ভাবে ওই সংস্থাকে বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে নেটাগরিকদের একটা বড় অংশ। তাদের মতে, ভারতীয় সংস্কৃতি যেখানে সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলে, ভারতীয় ঐতিহ্যে যেখানে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য জড়িয়ে, সেখানে ওই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে আপত্তি থাকার কথাই নয়।
কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর দাবি করেন, হিন্দুত্ববাদী ধর্মান্ধরাই ওই সংস্থাকে বয়কটের ডাক দিয়েছে। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘হিন্দু-মুসলিম ঐক্য নিয়ে সুন্দর বিজ্ঞাপন তৈরি করায় হিন্দুত্ববাদী ধর্মান্ধরা ওই সংস্থাকে বয়কট করার ডাক দিয়েছে। হিন্দু-মুসলিম ঐক্য যদি এতই বিরক্তিকর লাগে, তা হলে গোটা বিশ্বে হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের দীর্ঘজীবী প্রতীক ভারতকে কেন বয়কট করারা ডাক দিচ্ছেন না ওঁরা?’
So Hindutva bigots have called for a boycott of @TanishqJewelry for highlighting Hindu-Muslim unity through this beautiful ad. If Hindu-Muslim “ekatvam” irks them so much, why don’t they boycott the longest surviving symbol of Hindu-Muslim unity in the world -- India? pic.twitter.com/cV0LpWzjda
— Shashi Tharoor (@ShashiTharoor) October 13, 2020
আরও পড়ুন: অক্সফোর্ডের পর জনসন, স্বেচ্ছাসেবকের অজানা রোগ, বন্ধ হল করোনা টিকার ট্রায়াল
It's really sad to watch what kind of country we are turning into. An ad uniting two religions has to be taken down in the country which used to be called secular since forever.🤦🏻♀️#tanishq pic.twitter.com/8E7UDl7PeH
— Nilesh Chhanga (@ChhangaNilesh) October 13, 2020
এ নিয়ে বহু সাধারণ মানুষও ওই সংস্থার পাশে দাঁড়ান। এক টুইটার ব্যবহারকারী লেখেন, ‘যাঁরা ওই সংস্থাকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন, এমন ভাব করছেন, যেন প্রতি দিন ওই সংস্থার কাছ থেকে গয়না কেনেন।’ আর এক টুইটার ব্যবহারকারী লেখেন, ‘আমরা যে ধরনের দেশে পরিণত হচ্ছি, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। চিরকাল ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে পরিচিত থেকেছে ভারত। আজ সেখানেই ধর্মীয় ঐক্যের বিজ্ঞাপন তুলে নিতে হল।’ তবে এই বিতর্কে এখনও পর্যন্ত ওই সংস্থার তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy