সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরে বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, দেবেন্দ্রকে বিহারে পাঠিয়ে এক ঢিলে চার পাখি মারা যাবে
মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে বিহারি পরিযায়ী শ্রমিকরা একাধিক বার ভোটের তরজার বিষয় হয়ে উঠেছেন। এ বার বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে এক মরাঠি নেতা বিজেপির হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছেন।
মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকে বিজেপি নেতৃত্ব বিহারের ভোটের দায়িত্ব দিতে চলেছেন বলে সূত্রের খবর। গত সপ্তাহেই ইঙ্গিত মিলেছিল, বিহারের ভারপ্রাপ্ত নেতা ভূপেন্দ্র যাদবের সঙ্গে নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়ে ফডণবীসকে পটনায় পাঠানো হবে। তাঁদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবেন অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। নিত্যানন্দ বিহারেরই উজিয়ারপুরের সাংসদ।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরে বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, দেবেন্দ্রকে বিহারে পাঠিয়ে এক ঢিলে চার পাখি মারা যাবে। এক, দেবেন্দ্র প্রথম থেকেই উদ্ধব ঠাকরে সরকারের বিরুদ্ধে সুশান্ত-মৃত্যুর তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলছেন। বিহারের ভূমিপুত্র সুশান্তকে নিয়ে তিনি রাজ্যের মানুষের আবেগ উসকে দিতে পারবেন। দুই, দেবেন্দ্রকে মুম্বই থেকে সরিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে নিয়ে এসে বিহারের দায়িত্ব দিলে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতেও শিবসেনার সঙ্গে বিজেপির আঁতাঁতের রাস্তা ফের খুলতে পারে। উদ্ধব ঠাকরে-দেবেন্দ্র বিরোধ নতুন করে সমঝোতার পথে বাধা হয়ে উঠছে। তিন, দেবেন্দ্র ব্রাহ্মণ নেতা। তাঁকে সামনে রাখলে বিহারের ব্রাহ্মণ ভোট কংগ্রেসের ঝুলি থেকে বিজেপির দিকে সরে আসতে পারে।
আরও পড়ুন: সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তে সিবিআইকে ‘স্বাগত’ জানিয়েও কটাক্ষ মহারাষ্ট্রের
এবং চার, সুশান্তর মৃত্যু থেকেও নীতীশই বেশি ফায়দা তুলতে চাইছেন। তাঁর দাবি, বিহার পুলিশ আলাদা ভাবে এফআইআর করে তদন্ত শুরু করেছিল। সেই সূত্র ধরেই সিবিআইয়ের হাতে তদন্ত গিয়েছে। দেবেন্দ্রকে পাঠিয়ে বিজেপি নিশ্চিত করতে চাইছে, এক্ষেত্রেও যাতে নীতীশ পুরো ফায়দাটা তুলতে না পারেন।
বিহারে দীর্ঘদিন বিজেপির জোট সরকার চললেও নীতীশ কুমারের নেতৃত্বই বিজেপিকে মেনে নিতে হয়েছে। এবারও নীতীশের নেতৃত্বেই এনডিএ জোট ভোটে যাবে বলে অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু নীতীশের জেডিইউ একার জোরে সরকার গঠনের অবস্থানে পৌঁছে গেলেও বিজেপি নেতাদের পক্ষে তা স্বাচ্ছন্দ্যের কারণ হবে না বলেই রাজনীতিকদের মত। বিজেপির শক্তি বাড়াতে সেই কারণেই ভূপেন্দ্র-নিত্যানন্দর সঙ্গে দেবেন্দ্রকেও পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন: ‘১৭০ কোটি লাভ, তিরুঅনন্তপুরম তবু কেন আদানির’
লোক জনশক্তি পার্টির হয়ে চিরাগ পাসোয়ান আরও বেশি আসনের দাবি সরব। অনেকের ধারণা, চিরাগের পিছনেও বিজেপি-ই রয়েছে। নীতীশ একার জোরে সরকার গঠনের সংখ্যায় পৌঁছে গেলে তিনি ফের ২০১৩-র মতো এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়ে দর কষাকষি করতে পারেন। ২০১০-এ জেডি-ইউ ২৪৩ আসনের বিধানসভায় ১৪২টি আসনে লড়ে ১১৫টি আসন জিতেছিলেন। তিন বছর পরে এনডিএ ছেড়ে আরজেডি-কংগ্রেসের সমর্থনে সরকার গড়েন। তখন রামবিলাস-চিরাগ পাসোয়ানদের লোক জনশক্তি পার্টি এনডিএ-তে ছিল না। ২০১৯-এর লোকসভায় পাসোয়ানের দল ৬টি আসনে জিতেছে। তার ভিত্তিতেই চিরাগ ৩৫ থেকে ৪০টি আসনের দবি তুলেছে। কিন্তু নীতীশ চাইছেন ১২০-র বেশি আসনে লড়তে। যাতে একার জোরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা বা তার কাছে পৌঁছতে পারেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy