Advertisement
E-Paper

আর এসপিজি নয় গাঁধীদের, নিরাপত্তার দায়িত্ব নিল আধাসেনা

এমন সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে আঁচ পেয়ে মনমোহন সিংহ গত মঙ্গলবার ক্যাবিনেট সচিবকে এক চিঠিতে আবেদন জানান, গাঁধী পরিবারের এসপিজি নিরাপত্তা যেন প্রত্যাহার করা না-হয়।

ফাইল চিত্র। পিটিআই।

ফাইল চিত্র। পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৯
Share
Save

ঘরোয়া ভাবে ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছিল গত ক’দিন ধরেই। আজ খবরটি এল ‘সরকারি সূত্রে’। এক ঘণ্টার মধ্যেই বদলে গেল নিরাপত্তার ছবিটা। সনিয়া ও রাহুল গাঁধী আর প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের (এসপিজি) কর্মীরা। পরিবর্তে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিল আধাসেনা। বাহিনীর অফিসারেরা জানালেন, গাঁধী পরিবারের তিন সদস্য আর এসিপিজি নয়, জেড প্লাস নিরাপত্তা পাবেন। যার দায়িত্বে থাকবে সিআরপিএফ। গত অগস্টে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের এসপিজি নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজকের এই সিদ্ধান্তে গোটা দেশে এখন কেবল এক জনই এসিপিজি নিরাপত্তা পাবেন। তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এমন সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে আঁচ পেয়ে মনমোহন সিংহ গত মঙ্গলবার ক্যাবিনেট সচিবকে এক চিঠিতে আবেদন জানান, গাঁধী পরিবারের এসপিজি নিরাপত্তা যেন প্রত্যাহার করা না-হয়। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, অতীতে নিরাপত্তায় ফাঁকের কারণেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী প্রাণ হারিয়েছিলেন। তদন্তের পরে বিচারপতি জে এস বর্মা তাঁর রিপোর্টে জানিয়েছিলেন, রাজীব-হত্যার চেষ্টা করা হতে পারে— এই তথ্য গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে ছিল। তবু পর্যাপ্ত পদক্ষেপ করা হয়নি। আজ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার আক্ষেপ, ‘‘এক জন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও তার প্রাপ্তিস্বীকারটুকুও করা হয়নি। উল্টে আজ প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার হল গাঁধী পরিবার।’’

এখনও জেড প্লাস সুরক্ষা পেলেও, এসপিজি সরিয়ে নেওয়ায় রাহুলদের প্রাণের ঝুঁকি বেড়ে গেল বলে আশঙ্কা জানিয়েছে কংগ্রেস। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এ দিন সন্ধেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাড়ি ঘেরাও করে যুব কংগ্রেস। বিদেশ থেকে রাহুল টুইট করে বলেন, ‘‘এত দিন আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজির সব ভাই-বোনকে ধন্যবাদ। আপনাদের নিষ্ঠা, নিরবচ্ছিন্ন সমর্থনে আমার যাত্রাপথ স্নেহপূর্ণ ও শিক্ষণীয় ছিল।’’

আরও পড়ুন: মোদীর এসপিজি কেন থাকবে, প্রশ্ন

কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের উপরে হামলার আশঙ্কার ভিত্তিতে স্থির করা হয়, তাঁকে কোন শ্রেণির নিরাপত্তা দেওয়া হবে। গত অগস্টে হামলার আশঙ্কা কম মনে হওয়ায় মনমোহনের সুরক্ষা এক ধাপ কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার পর এসপিজি নিরাপত্তা পাচ্ছিলেন শুধু প্রধানমন্ত্রী মোদী ও গাঁধী পরিবারের তিন জন। কিন্তু আজ কী কারণে রাহুল, সনিয়া ও প্রিয়ঙ্কার এসপিজি নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হল তা স্পষ্ট করেনি কেন্দ্র। বস্তুত, সরকারি ভাবে এ নিয়ে একটি বাক্যও উচ্চারণ করা হয়নি। সুরজেওয়ালার তাই প্রশ্ন, ‘‘গত ৬ জুন ও পরে ২৯ অগস্টও কেন্দ্র জানিয়েছিল রাহুল তথা গাঁধী পরিবারের উপরে নকশালপন্থী, খলিস্তানি, উত্তর-পূর্বের জঙ্গি, ইসলামিক স্টেট ও আল কায়দার হামলার আশঙ্কা রয়েছে। দু’মাসে এমন কী হল যে হামলার আশঙ্কা একেবারে কমে গেল? প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ক্যাবিনেট সচিব বা স্বরাষ্ট্রসচিব— কেউ তো বলুন, ঠিক কী কারণে নিরাপত্তা কমানো হল?’’

সরকারের কেউ মুখ না-খুললেও, শাসক শিবির নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গাঁধী পরিবারের অসহযোগিতাকে এর অন্যতম কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে।

অজানা সরকারি সূত্রকে হাতিয়ার করে বিজেপি এ দিন গাঁধী পরিবারের ‘মুখোশ খুলে দেওয়ার’ চেষ্টায় নামে। রাজনৈতিক ভাবে আক্রমণ করে রাহুল-সনিয়া-প্রিয়ঙ্কাকে। তাদের বক্তব্য, এসপিজি-র নিয়ম ভেঙে এঁরা মর্জিমাফিক চলাফেরা করে এসেছেন। এসপিজিই জানত না তাদের নিরাপত্তা ছাড়া গাঁধী পরিবারের তিন জন ঠিক কোন কোন দেশে, কতগুলি সফর করেছেন। এই মুহূর্তে রাহুল বিদেশে। কংগ্রেস বলছে, ধ্যান করতে গিয়েছেন। যা নিয়ে বিজেপির প্রশ্ন, রাহুল যে পাঁচতারা হোটেল ধ্যানে বসেন, তার খরচ জোগায় কে? কে টিকিট কেটে দেন? রাহুল-সনিয়ারা কেন এ সব সফরে এসপিজি নিয়ে যান না।

বিজেপির যুক্তি, রাজীব গাঁধীর মৃত্যুর কারণে তাঁর পরিবারের লোকেদের এসপিজি নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, তাঁরাই তা নেন না। তাই তা সরিয়ে দেওয়াই ঠিক মনে করেছে সরকার।

SPG Gandhi Family

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}